শেয়ার বিজ ডেস্ক: বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নবনিযুক্ত নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি ওসামা তাসীরের নেতৃত্বে পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা গত সোমবার সাক্ষাৎ করেন। গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা চেম্বার এ তথ্য জানায়। অনুষ্ঠানে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, ব্যবসা পরিচালনার সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান আশাব্যঞ্জক নয়, এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য বিডার ওয়ানস্টপ সার্ভিস চালুসহ প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সব স্টেকহোল্ডার সহযোগিতার আহ্বান জানান।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান শিল্পায়নের ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের অবশ্যই পরিবেশ সংরক্ষণ ও টেকসই উন্নয়নের দিকে খেয়াল রাখার ওপর জোরারোপ করেন। তিনি অর্থনীতির উন্নয়নের গতিবেগ বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশে উৎপাদিত পণ্যের বহুমুখীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি তিনি বর্তমান বৈশ্বিক পরিমণ্ডলের বিবেচনায় বিদ্যমান কোম্পানি আইনের সংস্কার এবং তথ্য-প্রযুক্তির সম্পর্কিত বিষয়সমূহ এতে অন্তর্ভুক্তিকরণ প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন।
ডিসিসিআই সভাপতি ওসামা তাসীর বলেন, ডুইং বিজনেস ইনডেক্সে বাংলাদেশের অবস্থান উন্নয়নের জন্য বেসরকারি খাতে বিনিয়োগকে প্রায় ৩২%-৩৫%-এ উন্নীত করতে হবে, বর্তমানে যেটি রয়েছে ২৩.৪%। তিনি জানান, ২০১৮ সালে বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৩.৬ বিলিয়ন ডলার, যেটি ২০১৭ সালে ছিল ২.৫৮ বিলিয়ন ডলার। তবে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন, শিল্প-কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি এবং প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বাড়ানো আবশ্যক বলে তিনি মন্তব্য করেন।
চেম্বার সভাপতি বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধির পাশাপাশি অর্থনীতিকে আরও সচল রাখার জন্য বাণিজ্যবিষয়ক সব সূচকে বাংলাদেশের অবস্থানের উন্নয়ন, আমদানি-রফতানি নীতিমালাসহ প্রয়োজনীয় নীতিমালার সংস্কার এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বিডার প্রস্তাবিত ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’-এর একটি শাখা ঢাকা চেম্বারে স্থাপনের আহ্বান জানান।
ডিসিসিআই সভাপতি প্রাস্তাবিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) সমূহে দ্রততম সময়ে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানিসহ অন্যান্য সব ধরনের সেবার সংযোগ প্রদান পাশাপাশি বেজা, পিপিপি কর্তৃপক্ষ ও বিডা’র সমন্বয় আরও বাড়ানো প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন।
ঢাকা চেম্বারের ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী বলেন, আট শতাংশ হারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে আমাদের বিশেষ করে অবকাঠামো খাতের উন্নয়ন একান্ত অপরিহার্য। তিনি বড় উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের জন্য পুঁজিবাজারে বন্ড মার্কেট চালু ও পুঁজিবাজারকে উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
মুক্ত আলোচনায় ডিসিসিআই পরিচালক আশরাফ আহমেদ, এনামুল হক পাটোয়ারি, হোসেন এ সিকদার, মো. রাশেদুল করিম মুন্না, নূহের লতিফ খান অংশগ্রহণ করেন।
তারা অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে দ্রুততার সঙ্গে গ্যাস, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য সেবার চালুকরণ, এসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের স্বল্পসুদে ঋণ সুবিধা প্রদান, ব্যবসা কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া সহজীকরণ, বাণিজ্য সম্প্রসারণে সহায়ক প্রস্তাবিত কোম্পানি আইনের সংস্কার এবং ব্যাংক ঋণের সুদের কামানোর প্রস্তাব করেন।
ডিসিসিআই পরিচালক আন্দলিব হাসান, শামস মাহমুদ, এসএম জিল্লুর রহমান, বিডার নির্বাহী সদস্য নাভাস চন্দ্র মণ্ডল এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ডিসিসিআই’র প্রতি বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান
ব্যবসার সূচকে অবস্থান উন্নয়নে সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে
