নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর মাংস ব্যবসায়ীদের ডাকা ছয় দিনের ধর্মঘট শেষ হয়েছে গতকাল শনিবার। এতে আজ থেকে খুলছে মাংসের দোকান। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তাদের সমস্যা সমাধানে আজ বাণিজ্যমন্ত্রী ও উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) আলোচনায় বসছেন। গত সোমবার থেকে শনিবার পর্যন্ত ঢাকা শহরে গরু ও খাসির মাংস বিক্রি বন্ধ ছিল ধর্মঘটে।
গতকাল গরুর মাংস ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে আলোচনার প্রস্তাব পাওয়ার ফলে নতুন কোনো কর্মসূচি দেওয়া হয়নি। এতে আগের মতো স্বাভাবিকভাবে রোববার থেকে মাংসের দোকান খোলা থাকবে। আর মন্ত্রীর কাছে রোববার তাদের সব দাবি-দাওয়া তুলে ধরা হবে। দাবি পূরণে একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হবে। এ সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে পরবর্তী সময়ে আবার নতুন কর্মসূচি হাতে নেবেন মাংস ব্যবসায়ীরা।
জানতে চাইলে গতকাল বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল ইসলাম বলেন, অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের জন্য গাবতলী হাটে ইজারাদারদের ইজারা বাতিল, হুন্ডির মাধ্যমে গরু ব্যবসার নামে ভারতে গরু পাচার বন্ধ করা, হুন্ডি ব্যবসায়ী ‘কালা মইজা’কে বিচারের আওতায় আনা, হাজারীবাগের ট্যানারিগুলো দ্রুত অপসারণ ও চামড়ার পড়ে যাওয়া দাম বাড়ানোর দাবি নিয়ে আমরা ধর্মঘট করেছিলাম। তবে এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে বৈঠকের পর আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব। ফলে আপাতত ধর্মঘট স্থগিত করা হলো।
বৈঠক নিয়ে তিনি আরও বলেন, রোববার সকাল ১১টায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আমাদের বৈঠক হবে। এরপর দুপুর ২টায় উত্তর সিটি করপোরেশনের সথে বসবো। আলোচনার পর সে বিষয়গুলো জানাতে বিকাল ৫টায় আমরা গাবতলীতে সংবাদ সম্মেলন করবো। তখন নতুন কোনো কর্মসূচি দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে কি না বা দেওয়া হবে কি না, তা জানানো হবে। তবে আমাদের দাবি থাকবে সরকার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সমস্যাগুলোর সমাধান
করবে। এতে করে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।
তিনি আরও বলেন, গত ছয় দিন আমরা গাবতলীর গরুর হাটে যাইনি। আমাদের অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে। কাল আমরা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সেখানে যাবো। আমাদের আশঙ্কা, যাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযোগ তারা এ সময় হামলা করতে পারেন। টেলিফোনে আমাদের হুমকিও প্রদান করা হচ্ছে। তাই অরাজকর পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা চাওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, বেশ কয়েকটি দাবিতে হঠাৎ ছয় দিনের ধর্মঘটের ডাক দেন গরুর মাংস ব্যবসায়ীরা। টানা ছয়দিন ঢাকা শহরে গরু ও খাসির মাংস বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মহলে দাবিগুলো নিয়ে কথা বললেও, কোনো ফল আসেনি বলেই এই ধর্মঘট পালন করেন তারা।
তারা বলছেন, তাদের সব দাবি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা হলে গরুর মাংস ৪০০ টাকার নিচে নেমে আসবে। ভুটান, নেপাল ও মিয়ানমার থেকে বৈধপথে গরু আমদানি করতে পারলে দাম ৩০০ টাকার নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে। দাবি মেনে নিলে সরকারের ঠিক করে দেওয়া দামে গরুর মাংস বিক্রি করতেও তাদের কোনো ধরনের আপত্তি থাকবে না।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসছেন বাণিজ্যমন্ত্রী-ডিএনসিসি ধর্মঘট শেষে খুলছে মাংসের দোকান

Add Comment