Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 7:16 pm

ব্যস্ত সময় পার করছেন ফরিদপুরের ফুলচাষিরা

কেএম রুবেল, ফরিদপুর: পহেলা ফাল্গুন বা বসন্ত উৎসব, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন ফরিদপুরের ফুলচাষিরা। কভিডের কারণে গত দুই বছর লোকসান গুনতে হয়েছে ফুলচাষিদের। তাছাড়া ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ ও আম্পানেও ফুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। তারপরও তারা নতুন করে ফুল চাষ করেছেন লাভের আশায়।

চাষিরা বলছেন, এবার বিধিনিষেধ না থাকলে ফুলের ভালো দাম পাবেন, কভিডের ক্ষতি কাটিয়ে লাভের মুখ দেখবেন এবং ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন তারা। 

বৈচিত্র্যময় ফসলের জেলা ফরিদপুরে ফুল চাষ একেবারেই নতুন। একসময় এ জেলার মানুষ যশোরের ফুল দিয়েই প্রয়োজন মিটিয়ে থাকতেন। এখন আর যশোরের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয় না। এ জেলার তরুণ উদ্যোক্তারা ফুল দিয়েই স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চাহিদা পূরণ করছে। দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ফুল চাষের আবাদ। আর এ ফুল চাষে তরুণ উদ্যোক্তাদের আগ্রহ বেশি দেখা যাচ্ছে।

বর্তমানে ফুলের ভরা মৌসুমে চাষিদের বাগানে শোভা পাচ্ছে বাহারি রঙের গোলাপ, হরেক রকম জারবেরা, চন্দ্রমল্লিকা, গাঁদা, গ্লাডিওলাস, জিপসি, রজনীগন্ধাসহ নানা জাতের ফুল। ফুলের বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত চাষিরা। সামনে তিনটি দিবস থাকায় ব্যস্ততা বেড়েছে তাদের।

ফরিদপুর শহরতলির গধাধর ডাঙ্গী গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা লিয়াকত হোসেন জানান, কভিডের কারণে গত দুই বছরে ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বাগানের উৎপাদিত ফুল বাগানেই নষ্ট হয়েছে। করোনার সময় আয় ছিল না, কিন্তু ফুলগাছ পরিচর্যা করে সার-ওষুধ দিয়ে আঁকড়ে ধরে আছি।

তিনি বলেন, করোনা কমে গেলে ফুলের চাহিদা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। এখন কোনো প্রকার বিধিনিষেধ না এলে পহেলা ফাল্গুন, ভালোবাসা দিবস ও ২১ ফেব্রুয়ারিতে ফুলের ভালো দাম পাব। আশা করছি এ তিনটি দিবসে ফুল বিক্রি করতে পারলে করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারব।

বর্তমানে একটি গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়, জারবেরা ১৫ থেকে ২০ টাকায়, রজনীগন্ধা ১০ টাকায়, চন্দ্রমল্লিকা পাঁচ টাকায় ও গ্লাডিওলাস ১২ থেকে ১৫ টাকায়। আশা করছি সামনের তিনটি দিবসে ফুলের দাম আরও বাড়বে।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. হজরত আলী জানান, ফুল চাষ লাভজনক হওয়ায় এ অঞ্চলে ফুল চাষ দিন দিন বেড়েই চলেছে। তবে করোনা শুরুর পর ফুলের বাজার সংকুচিত হয়ে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত হন এ অঞ্চলের ফুলচাষিরা। ফুল চাষে সরকারিভাবে প্রণোদনার ব্যবস্থা না থাকায় আমরা চাষিদের পরামর্শ ছাড়া কোনো প্রকার আর্থিক সহযোগিতা করতে পারিনি।