নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে রূপান্তর করার পথে শিক্ষা সবচেয়ে বড় উপাদান বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। শিক্ষার দ্রুত প্রসারের জন্য এ খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি। গতকাল রাজধানীর আইডিইবি ভবনে এনসিসি ব্যাংক মেধাবৃত্তি ২০১৬ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
গভর্নর বলেন, যুগের চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষা এবং এর গুণগত মান বাড়াতে হবে। যেটা হবে ‘কোয়ালিটি এডুকেশন’। এর জন্য বাড়াতে হবে বিনিয়োগ। কারণ উন্নত দেশ হওয়ার বড় একটি উপাদান হলো শিক্ষা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের সিএসআর ব্যয়ের বরাদ্দ থেকে শিক্ষা খাতে ব্যয় বাড়াতে হবে। কারণ সিএসআরের ৩০ শতাংশ শিক্ষাতে ব্যয়ের নির্দেশনা থাকলেও অনেকেই সেখান থেকে পিছিয়ে রয়েছে। তাই আমরা আশা করবো, আপনারা শিক্ষা খাতে ব্যয় বাড়াবেন।
অনুষ্ঠানে কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন অনেক শিক্ষার্থী রয়েছে যারা একই সঙ্গে একাধিক ব্যাংকের শিক্ষাবৃত্তি পাচ্ছেন। আবার অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী রয়েছে যারা অসচ্ছল এবং কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকেই বৃত্তি পান না। এ বিষয়ে ফজলে কবির বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কোনো ডেটাবেইস না থাকায় এটা ওভারলেপিং হতে পারে। ফলে কেউ পাচ্ছে আবার কেউ বাদ পড়ছে। এজন্য একটি ডেটাবেইস করা যায় কি না সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করবো। এছাড়া সিএসআরের টাকার ওপর কর মওকুফ করা হবে কি না এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা এক মাস আগেও একটি অনুষ্ঠানে এ প্রস্তাবটি পেয়েছিলাম। এখনো আলোচনা করতে পারিনি। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ব্যাংকের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘ক্ষুদ্র হলেও আমরা যে শিক্ষাবৃত্তি দিচ্ছি, এটি একটি বড় বিষয়। যে টাকা তোমাদের দেওয়া হচ্ছে তা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের টাকা। কাজেই এ টাকা দিয়ে পড়াশোনা করে কেউ পরবর্তী জীবনে ঘুষ খাবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। কারণ ঘুষ হচ্ছে একটি সামাজিক ব্যাধি। অবশ্যই এটা থেকে তোমাদের দূরে থাকতে হবে। সাধারণ মানুষের টাকা দিয়ে তোমরা পড়াশোনা করছো, ভাবিষ্যতে তাদের জন্য কাজ করে যেতে হবে।
স্বাগত বক্তব্যে ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম হাফিজ আহমেদ বলেন, আমরা যেসব সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছি তার মধ্যে অন্যতম খাত হলো শিক্ষা। গরিব-মেধাবীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্যই এসসিসি ব্যাংক শিক্ষাবৃত্তি দিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার আমরা এসএসসি ও এইচএসসি উত্তীর্ণ ৬৬ জনকে বৃত্তি দেওয়ার জন্য মনোনীত করেছি। সর্বোপরি সামাজিক দায়বদ্ধতায় আমাদের অবস্থানকে ধরে রেখে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার কথা জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকটির ভাইস চেয়ারম্যান এএসএম মঈনউদ্দিন মোনেম। এছাড়া পরিচালনা পর্ষদের সদস্য, ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকরা।
উল্লেখ্য, আগে ব্যাংকটি প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীকে ১৮ হাজার টাকা করে শিক্ষাবৃত্তি দিলেও এ বছর থেকে ৩৬ হাজার টাকা করে দিচ্ছে।
Add Comment