Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 1:16 am

ব্যাংকের উত্থান বিমায় পতন

নিজস্ব প্রতিবেদক: কভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের পূর্বের অবস্থায় লেনদেন প্রক্রিয়ায় ফিরল দেশের পুঁজিবাজার। মহামারির প্রকোপ কিছুটা কমে আসায় সিদ্ধান্ত দিয়ে ফ্লোর প্রাইস তুলে দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে শেয়ারদরে উল্লম্ফনে থাকা কোম্পানিগুলোর দর সংশোধন হয়েছে। এতে মিশ্র প্রবণতায় লেনদেন শেষ করেছে পুঁজিবাজার।

মিশ্র এ প্রবণতায় একটানা ইতিবাচক থাকা বিমা খাতের শেয়ার বড় ধরনের হোঁচট খেল। হুট করে পতন হওয়ার এ বিষয়টি অনেকটাই অপ্রত্যাশিত হিসেবে দেখা দেয়। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে বিমা খাতের শেয়ারের দাম বাড়ার বিষয়টিকে সবাই অস্বাভাবিক বলে আসছেন।

অপরদিকে আর্থিক খাতের শেয়ারের দাম এ সময় বেড়েছে। দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) গত ২৪ জুন শেষ হওয়া সপ্তাহের লেনদেন চিত্র বিশ্লেষণ করে পাওয়া গেছে এমন তথ্য। ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, মিশ্র প্রবণতায় শেয়ার লেনদেন হলেও সপ্তাহ শেষে সব সূচক ইতিবাচক ছিল। লেনদেন কিছুটা কমায় বাজার মূলধনও হারিয়েছে ডিএসই।

অবশ্য বিমা খাতের শেয়ারদর পতনকে অনেকে দর সংশোধন হিসেবেও বলছেন। যুক্তিতে তারা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে বিমা খাতের শেয়ারের দাম বেড়ে চলছে। মধ্যবর্তী কিছু সময়ে দর পতন হলেও ফের ঘুরে দাঁড়ায়। সেই যে উল্লম্ফন শুরু হয়েছে আর নিচের দিকে নামেনি এ খাতের সূচক। এজন্য এখন দর সংশোধন হয়েছে। কোনো শেয়ারের দর সংশোধন হওয়াটা স্বাভাবিক। যদি না হয় তাহলে ধরে নিতে হবে এখানে কৃত্রিম বাজারের উপকরণ মিশে রয়েছে। কিন্তু কতদিন পর বা শেয়ারের দর কতটুকু বাড়ার পর দর সংশোধন হতে পারে, এ বিষয়ে কেউ যুক্তি তুলে ধরতে পারেননি।

তথ্য বলছে, গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীরা বস্ত্র, ব্যাংক ও বিমা খাতের শেয়ারের লেনদেন সবচেয়ে বেশি করেছেন। গত সপ্তাহে সর্বোচ্চ গেইনারে ছিল বস্ত্র খাতের শেয়ার। এ খাতটির বিনিয়োগকারীরা গত সপ্তাহে সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ৯ শতাংশ গেইনারে ছিল।

পূর্বের সপ্তাহের চেয়ে ৭৭ শতাংশ বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে আলোচিত সপ্তাহে। এতে শেয়ার লেনদেন বৃদ্ধির পাশাপাশি দরও বাড়ে বলে জানা গেছে।

এরপরের অবস্থানে থাকা ব্যাংক খাতের বিনিয়োগকারীরা গেইনার করে চার শতাংশ। পূর্বের সপ্তাহের চেয়ে ১৭ শতাংশ বেশি শেয়ার লেনদেন হয় এ খাতের। এছাড়া গেইনারে ছিল মিউচুয়াল ফান্ড- দুই দশমিক আট শতাংশ। ট্যানারি দুই দশমিক এক শতাংশ এবং ওষুধ খাত এক দশমিক তিন শতাংশ।

অপরদিকে এ সময় পূর্বের সপ্তাহের চেয়ে লোকসানের শীর্ষে ছিল সাধারণ বিমা খাত। এ খাতের বিনিয়োগকারীরা সাত দশমিক সাত শতাংশ লোকসান দেখতে পান। এছাড়া লোকসানে ছিল জীবন বিমা খাতের ছয় দশমিক দুই শতাংশ, সেবা খাতের দুই দশমিক ছয় শতাংশ, জ্বালানি খাতের এক দশমিক এক শতাংশ ও প্রকৌশল খাতের এক দশমিক এক শতাংশ।

এ সময় লেনদেনে সর্বোচ্চ ২০ দশমিক ছয় শতাংশ অবদান রাখে বস্ত্র খাতের শেয়ার। এরপর রয়েছে সাধারণ বিমা ১৪ দশমিক এক শতাংশ।

তথ্য বলছে, আলোচিত সময়ে শেয়ার লেনদেনে এগিয়ে ছিল বেক্সিমকো, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স, ন্যাশনাল ফিড, ম্যাকসন্স স্পিনিংস, মালেক স্পিনিং, ওরিয়ন ফার্মা, কাট্টলী টেক্সটাইলস ও ফরচুন শুজ।

এদিকে শেয়ারের দর বৃদ্ধিতে একক কোম্পানি হিসেবে শীর্ষ দশে উঠে এসেছে মনোস্পুল পেপার, তমিজুদ্দিন টেক্সটাইলস ও মুন্নু ফেব্রিকস। অপরদিকে শেয়ারদর হারানোর শীর্ষে উঠে এসেছে রয়েল টিউলিপ সি পার্ল, প্রাইম লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও স্টান্ডার্ড সিরামিক।