নিজস্ব প্রতিবেদক: গত বছর ব্যাংকের এজেন্টের মাধ্যমে ৮২ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকার রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। ২০২০ সালের চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি। এজেন্টের মাধ্যমে রেমিট্যান্স (প্রবাসী-আয়) সংগ্রহের দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে আছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। কারণ এজেন্টের মাধ্যমে আসা মোট প্রবাসী-আয়ের ৫৪ শতাংশই এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক। কারণ ব্যাংটির মাধ্যমে ২৪ শাতংশ রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। ১১ শতাংশ মার্কেট শেয়ার নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্যাংক এশিয়া, চতুর্থ অবস্থানে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক এবং পঞ্চম অবস্থানে অগ্রণী ব্যাংক। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটির মার্কেট শেয়ার প্রায় চার শতাংশ।
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে হিসাব সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৪০ লাখ ৪৭ হাজার ৪৯১টি। এসব হিসাবে আমানতের পরিমাণ ২৪ হাজার ২৯৪ কোটি টাকা। ২০২০ সালে আমানত ছিল ১৫ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরে আমানত বেড়েছে ৮ হাজার ৩১৬ কোটি টাকা।
আমানতের পাশাপাশি ঋণ বিতরণও বেড়েছে। এ সময়ে ৫৩৫ কোটি টাকার ঋণ দেয়া হয়েছে। ২০২০ সাল শেষে ১৮৯ কোটি টাকার ঋণ দেয়া হয়েছিল। এক বছরের ব্যবধানে ঋণ বেড়েছে ৩৪৫ কোটি টাকা। ২০২১ সালজুড়ে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে ১৩৫ কোটি ৬০ লাখ টাকার বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করা হয়েছে।
ব্যাংক-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যাংকিং সেবা ছড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও বড় ভূমিকা রাখছে এজেন্ট ব্যাংক। এ ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জনগণকে ব্যয়সাশ্রয়ী, নিরাপদ ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দেয়া সম্ভব হচ্ছে। গ্রাহকরা সুপ্রশিক্ষিত এজেন্ট ব্যাংকারের মাধ্যমে বিদেশ থেকে আসা প্রবাসী-আয় অল্প সময়ের মধ্যে হাতে পাচ্ছেন। বিদ্যুৎ বিল দিয়ে যাচ্ছেন সবাই। হাজার হাজার গ্রাহক প্রতি মাসে এসে আমানতে টাকা জমা দিচ্ছেন। হাতের নাগালে ব্যাংকিং সেবা পাওয়ায় দিন দিন বাড়ছে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের জনপ্রিয়তা।
করোনার প্রথম বছরের শাখা সম্প্রসারণ বড় ধরনের ধাক্কা খেলেও দ্বিতীয় বছরে তা কিছুটা কাটিয়ে উঠেছে ব্যাংকগুলো। তারপরও করোনা-পূর্ববর্তী সময়ের মতো ব্যাংক শাখা খোলা এখনও শুরু হয়নি। তবে এজেন্ট ব্যাংকিং, উপশাখা, মোবাইল ব্যাংকিং, অটোমেটেড টেলার মেশিন (এটিএম) বুথ, বিক্রয় প্রতিষ্ঠানগুলোর পয়েন্ট অব সেলস (পিওএস) মেশিন, ক্যাশ রিসাইকেলার মেশিন (সিআরএম) ও ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে ব্যাংকের গ্রাহকের লেনদেন বাড়ার তথ্য জানান দিচ্ছে, শাখায় না গিয়েও তারা ব্যাংকিং সুবিধা পাচ্ছেন।
কয়েকজন ব্যাংক কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে প্রায় সব ব্যাংক শাখাই পুরোপুরি অনলাইনে চলে এসেছে। ফলে কভিডকালে ব্যাংকের শাখা সম্প্রসারণ পূর্ববর্তী বছরগুলোর তুলনায় কিছুটা কম থাকলেও গ্রাহকরা লেনদেনে পিছিয়ে নেই। তারা আগে যেসব লেনদেনের জন্য ব্যাংক শাখায় আসতেন, এখন সেসব খুচরা অনেক লেনদেন তারা ঘরে বসেই করছেন, বা এজেন্ট ব্যাংকিং বা উপশাখা থেকেও ব্যাংকিং সেবা নিচ্ছেন গ্রাহকরা।