Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 1:22 pm

ব্যাংকের দাপটে ক্ষতিগ্রস্ত বস্ত্র খাতের বিনিয়োগকারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘদিন ধরেই বাড়ছে ব্যাংক খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর। এতে খাতটির শেয়ার লেনদেনে সব ধরনের বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে পরিণত হয়েছে। অন্যদিকে বস্ত্র ও প্রকৌশল খাতসহ অন্যান্য প্রায় ২০০ কোম্পানির লভ্যাংশের মৌসুম চলমান থাকলেও ঝোঁক কমেছে এসব কোম্পানির শেয়ারে। এতে প্রতিনিয়ত দর কমছে জুন ক্লোজিং কোম্পানির শেয়ারে। ফলে এসব কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

জুলাই মাস থেকেই ব্যাংক-বিমা এবং নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বাইরের প্রায় দুই শতাধিক কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ে এটিই নিয়ম। কিন্তু এ বছর উল্টো নিয়মে চলছে শেয়ারবাজার। গত দুই মাস কেবল ব্যাংক খাতের শেয়ারদর বেড়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্য খাতের দর। এতে জুন ক্লোজিং কোম্পানির দর কমেছে। এসব কোম্পানির দর বাড়ার কথা থাকলেও কমেছে। বিশেষ করে বস্ত্র ও প্রকৌশল খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গতকাল বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মোট লেনদেনের ৫০ শতাংশই ব্যাংক খাতের দখলে। এদিন এ খাতের লেনদেন হয়েছে ৩৯৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা। বিপরীত দিকে মোট লেনদেনের আট শতাংশ ছিল জুন ক্লোজিং বস্ত্র খাতের। এদিন বস্ত্র খাতের লেনদেন হয়েছে ৬৪ কোটি টাকা এবং প্রকৌশল খাতের লেনদেন হয়েছে ৩৭ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের পাঁচ শতাংশ।

এদিকে গত দুই মাস আগে অর্থাৎ ২ আগস্ট বাজারের চিত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মোট লেনদেনের ২৬ শতাংশ ছিল ব্যাংক খাতের দখলে। আলোচিত সময়ে এ খাতের লেনদেন হয়েছে ২৯৫ কোটি টাকা। সে সময় বস্ত্র খাতের লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১৭০ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের ১৫ শতাংশ এবং প্রকৌশল খাতের লেনদেন হয়েছিল ১১৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ দুই মাসের ব্যবধানে ব্যাংক খাতের লেনদেন প্রায় অর্ধেক বাড়লেও বস্ত্র ও প্রকৌশল খাতে বিপরীত চিত্র লক্ষ করা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবার বাজারে উল্টো আচরণ লক্ষ করা গেছে। ডিসেম্বরে হিসাববছর শেষ হলেও ব্যাংক খাতের কোম্পানির দর বেড়েছে। অতীতে এমন আচরণ কখনও দেখা যায়নি। তবে ব্যাংক খাতে লেনদেন বাড়ার কারণে বাজার গতিশীল ছিল। সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে জুন ক্লোজিং কোম্পানির বিনিয়োগকারীদের। যারা অতীতে জুন ক্লোজিং কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছিল, গত দুই মাসে এসব কোম্পানির শেয়ারে অনেকটা পতন হয়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বস্ত্র ও প্রকৌশলসহ অন্য দু-একটি খাতের বিনিয়োগকারীরা।

তারা আরও বলছেন, বর্তমান সময়ে বস্ত্র ও প্রকৌশল খাতের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর অনেকটা কমেছে। আর এ সুযোগে কিছু বিনিয়োগকারী এসব শেয়ারে বিনিয়োগ করছে। বর্তমানে যারা এসব শেয়ারে বিনিয়োগ করবে ভবিষ্যতে দর বাড়লে তারা মুনাফায় ফিরতে পারবে বলে মনে করছেন তারা। তবে বুঝেশুনে মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করারও পরামর্শ দেন তারা।

এ সম্পর্কে অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, জুন ক্লোজিং কোম্পানিগুলোর দু-একটা ভালো ডিক্লারেশন পেলে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ার সম্ভাবনা আছে। তাছাড়া বর্তমান সময়ে কী কারণে ব্যাংকের শেয়ারদর বাড়ছে, তা বোঝা যাচ্ছে না।

উল্লেখ্য, পুঁজিবাজারে বস্ত্র খাতের ৪৮টি এবং প্রকৌশল খাতের ৩৪টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত আছে। অন্যদিকে ব্যাংক খাতের ৩০টি প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্ত রয়েছে।