ব্যাংকের সিএসআর খাতে ব্যয় কমেছে ১৬ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্যাংকের করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি-সিএসআর) খাতে ব্যয়ের অঙ্ক বেড়েছে। গত বছরের প্রথম ছয় মাস (জানুয়ারি-জুন) এ খাতে ব্যাংকগুলো ৬২৯ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। শেষ ছয় মাসে ব্যয় করেছে ৫১৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ ছয় মাসের ব্যবধানে সিএসআর খাতে ব্যাংকগুলোর ১১৫ কোটি টাকা ব্যয় কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ছয় মাসের ব্যবধানে সিএসআর ব্যয় কমলেও এক বছরের তুলনায় বহুগুণ বেড়েছে। কারণ ২০২১ সালের জুলাই-ডিসম্বরে এ খাতে ব্যয়ের অঙ্ক ছিল ২৯৭ কোটি টাকা, যা ২০২২ সালের একই সময় ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১৩ কোটি ৭৬ লাখ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত বছরের শেষ ছয় মাসে সিএসআর খাতে সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয়েছে দুর্যোগ মোকাবিলায়। কারণ এ সময় সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ভয়াবহ বন্যা হয়। তাই তাদের মাঝে খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়, যার সিংহভাগ প্রধানমন্ত্রীর

ত্রাণ তহবিলে অনুদান হিসেবে দেয়া হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খাতে ৩৫২ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়, যা মোট সিএসআর ব্যয়ের ৬৮ দশমিক ৭১ শতাংশ। এরপর স্বাস্থ্য খাতে ৬৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা বা ১২ দশমিক ৪৫ শতাংশ। স্বাস্থ্য খাতে মূলত ব্যক্তিপর্যায়ে হতদরিদ্র/ অসহায়/ সুবিধাবঞ্চিত/ প্রতিবন্ধী রোগীদের চিকিৎসা সহায়তা প্রদান, বিনা মূল্যে মেডিকেল ক্যাম্প ও ক্লিনিক্যাল সেবাদান, বিনা মূল্যে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা সামগ্রী বিতরণ এবং বিভিন্ন দুরারোগ্য/ জটিল ব্যাধিতে আক্রান্ত মানুষের চিকিৎসার্থে ব্যাংকগুলো কর্তৃক সিএসআর বাবদ সরাসরি অনুদান দেয়া হয়েছে।

এছাড়া শিক্ষা খাতে ৬৩ কোটি টাকা বা ১২.৩৭ শতাংশ, পরিবেশ ও জলবায়ু ১২ কোটি বা ২ দশমিক ৩৯ শতাংশ, ক্রীড়া ও সংস্কৃতিতে ১১ কোটি ৯১ লাখ টাকা বা ২ দশমিক ৩২ শতাংশ, আয় উৎসারীতে দশমিক ৪৫ শতাংশ, অবকাঠামোতে দশমিক ১৯ শতাংশ ও অন্যান্য খাতে ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ ব্যয় করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি ব্যাংকের চেয়ে বেসরকারি ব্যাংকে সিএসআর ব্যয় বেশি হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংক মিলে চার কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। বেসরকারি সব ব্যাংক ৫৯৫ কোটি এক লাখ টাকা বা মোট ব্যয়ের ৯৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ। বিদেশি ব্যাংক ১৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা বা ২ দশমিক ৭০ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, সিটিজেনস ব্যাংক এবং ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান সিএসআর খাতে কোনো টাকা ব্যয় করেনি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আলোচ্য সময়ে সিএসআর খাতে মোট ৫১৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। এর মধ্যে ব্যাংকগুলো করেছে ৫০৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকা এবং নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো করেছে চার কোটি তিন লাখ টাকা। ২০২১ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে ব্যাংকগুলো এ খাতে ব্যয় করেছিল ২৯৭ কোটি টাকা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যয় করেছিল তিন কোটি টাকা। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট ব্যয় জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২১-এর তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। এক বছরের ব্যবধানে শিক্ষা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং পরিবেশ ও জলবায়ু খাতে আলোচ্য সময়ে ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সিএসআর ব্যয়ের সার্বিক চিত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, ব্যাংক খাতের তুলনায় আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের সিএসআর ব্যয় খুবই কম। সেটা মোট ও খাতওয়ারি উভয় ক্ষেত্রেই দেখা গেছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০