ব্যাংকের সিএসআর ব্যয় কমেছে ১৬৩ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বৈশ্বিক মহামারিতে করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) ব্যয় করছে না বেশ কয়েকটি ব্যাংক। ফলে গত বছর শেষার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) আগের বছরের তুলনায় ব্যাংকের সিএসআর খাতে ব্যয় কমেছে ১৬৩ কোটি টাকা। কারণ এই সময় ব্যাংকগুলো সিএসআর খাতে ২৯৭ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। কিন্তু আগের ষাণ¥াষিকে এর পরিমাণ ছিল ৪৬১ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এ খাতে এক টাকাও ব্যয় করেনি আট ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আলোচ্য সময় (জুলাই-ডিসেম্বর) ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ ব্যয় করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খাতে। কারণ এ খাতে ১৩২ কোটি ২৩ লাখ টাকা ব্যয় করেছে, যা মোট সিএসআর ব্যয়ের ৪৪ দশমিক ৪০ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যয় করা হয়েছে স্বাস্থ্য খাতে, যার পরিমাণ ৭৪ কোটি ১২ লাখ টাকা যা মোট সিএসআর ব্যয়ের ২৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ।

তথ্য বলছে, সিএসআর খাতে ৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। সুতরাং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান মিলে আলোচ্য ছয় মাসে মোট ৩০১ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এই সময় সর্বোচ্চ ব্যয় করেছে স্বাস্থ্য খাতে। কারণ স্বাস্থ্য খাতে ১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ব্যয় করেছে, যা মোট ব্যয়ের ৪২ দশমিক ১৯ শতাংশ। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যয় করেছে সংস্কৃতি খাতে (৬৮ লাখ)। শিক্ষা খাতে ব্যয়ের পরিমাণ ৬২ লাখ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খাতে মোট ব্যয়ের পরিমাণ ৬১ লাখ টাকা। শিক্ষা খাতে ব্যাংকগুলোর ব্যয়ের পরিমাণ ৩১ কোটি, সংস্কৃতি খাতে ২০ কোটি, পরিবেশ খাতে ২০ কোটি, অন্যান্য খাতে ব্যয় হয়েছ ১৭ কোটি টাকা।

যেসব ব্যাংক এই ছয় মাসে এক টাকাও ব্যয় করেনি তাদের মধ্যে রয়েছে, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন, পদ্মা ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। আর নামসর্বস্ব ব্যয় করেছে ১৭ ব্যাংক, যাদের ব্যয় লাখ টাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে স্বাস্থ্য খাতে ব্যক্তি পর্যায়ে হতদরিদ্র/অসহায়/সুবিধাবঞ্চিত/ প্রতিবন্ধী রোগীদের চিকিৎসা সহায়তা করা, বিনা খরচে মেডিকেল ক্যাম্প ও ক্লিনিক্যাল সেবা দেয়া, বিনা খরচে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবাসামগ্রী বিতরণ এবং কভিড-১৯-সহ অন্যান্য দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত মানুষের চিকিৎসায় ব্যাংকগুলো কর্তৃক সিএসআর বাবদ সরাসরি অনুদান দেয়া হয়েছে। সারাদেশে কভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনসাধারণের জন্য মাস্ক, স্যানিটাইজার, পিপিই, টেস্টিং কিট, অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রভৃতি সরবরাহের জন্য আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে। তাছাড়া হাসপাতাল/ক্লিনিক নির্মাণ, হাসপাতাল/ক্লিনিক/ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালন ব্যয় নির্বাহ ও চিকিৎসা সরঞ্জামাদি ক্রয় বাবদ অনুদান দেয়া হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার আওতায় প্রধানত শীতার্ত ও দরিদ্র মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ, সুবিধাবঞ্চিত/হতদরিদ্র মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ এবং কভিড-১৯-এর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত/কর্মহীন জনগোষ্ঠীর মধ্যে খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ খাতে ব্যয় করা হয়, যার বেশিরভাগ প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অনুদান হিসেবে দেয়া হয়েছে। তাছাড়া ব্যাংক কর্তৃক শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ ও কভিডে দুর্দশাগ্রস্ত জনগোষ্ঠীকে সহায়তা দেয়া হয়েছে।

শিক্ষা খাতের ব্যয় পর্যালোচনায় দেখা যায়, ব্যাংকগুলো প্রধানত নি¤œ মাধ্যমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দানে সিএসআর ব্যয় করেছে। তাছাড়া বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ বিতরণ ও শিক্ষা খাতের অবকাঠামো উন্নয়নেও সিএসআর ব্যয় করা হয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০