নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্যাংক আমানতের সুদহার আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিডা কনফারেন্স রুমে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) নবনির্বাচিত কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা জানান।
সভায় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের চ্যালেঞ্জ ও রাজস্ব বিভাগের নানা হয়রানির চিত্র তুলে ধরেন ব্যবসায়ী
নেতারা। তারা বলেন, ব্যবসার প্রতিযোগিতার পরিবেশ নিশ্চিত করা সরকারের কাজ। ব্যবসায়ীদের লাভ নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব নয়।
এ সময় ব্যবসায়ীদের নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সালমান এফ রহমান বলেন, সরকার অনেক দিন থেকেই ব্যাংকের সুদ নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল। কিন্তু এখন আমানতের সুদহার বাড়ানোর ফলে আগামীতে তা আর নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে না। ব্যবসায়ীদের বাড়তি সুদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকার তাগিদ দেন তিনি।
তিনি বলেন, সরকারের রাজস্ব আহরণে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে কর কমানো হলেও কাক্সিক্ষতহারে রাজস্ব বাড়েনি। এ সময় উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ব্যবসায়ীদের নিয়মিত কর পরিশোধের আহ্বান জানান তিনি।
রাজস্ব বিভাগের সঙ্গে সংকট নিরসনে এফবিসিসিআইকে নিবিড়ভাবে কাজ করার পরামর্শও দেন প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা।
পরে আরেক অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সালমান এফ রহমান বলেন, সুদের হার বাড়বে, আন্তর্জাতিকভাবে এটা বেড়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী যখন ৯ শতাংশ নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন, তখন আমাদের দেশে সুদের হার ছিল ১৭-১৮ শতাংশ। লাইবর রেটটা এক শতাংশের কম ছিল। তখন একটা আইডিয়া ছিল আমাদের ব্যাংকগুলো অতিরিক্ত মুনাফা করছে। আন্তর্জাতিকভাবে রেট এত কম, শুধু তা নয় আমাদের আশপাশের দেশেও সুদহার কম ছিল। প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিলেন, এভাবে কোনো ব্যবসায়ী লাভ করতে পারবেন না। যদি ১৬-১৭ শতাংশ সুদ দিয়ে দিতে হয়। প্রধানমন্ত্রী বললেন, এটা ৯ শতাংশে ক্যাপ (সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ) করে দিলাম। যখন ৯ শতাংশ ক্যাপ করলাম স্বাভাবিকভাবেই ডিপজিট রেটও কমে গেল, এটা অনেকদিন সুন্দরভাবে চলল।
তিনি বলেন, তবে আন্তর্জাতিকভাবে সুদহার বাড়ছে। যেহেতু আন্তর্জাতিকভাবে সুদের হার বেড়ে গেছে, এটা স্বাভাবিক আমাদের দেশেও হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ৯ পারসেন্ট ক্যাপ খুলে দিয়ে একটা ফর্মুলা করে দিয়েছে যে ট্রেজারি বন্ডের ব্যান্ড দিয়ে দিয়েছে। তার জন্য আমি বলছি রেটগুলো বাড়তে শুরু করেছে। আগের মতো ১৬, ১৭, ১৮ শতাংশে যেন না যায়Ñ এজন্য তারা ক্যাপটা রেখেছেন। কিন্তু ক্যাপটা ফ্লেক্সিবল করে দিয়েছেন। এই রেট বেঞ্চমার্ক করে দেয়া হয়েছে। আমি বলেছি, ট্রেজারি বিল ও আন্তর্জাতিক রেট বাড়ার কারণে এখানে রেটগুলো ভবিষ্যতে বাড়বে। যদি আন্তর্জাতিক রেটগুলো কমতে শুরু করে, তাহলে আমাদের রেটগুলোও কমবে।