Print Date & Time : 24 June 2025 Tuesday 12:25 pm

ব্যাংক একীভূত করার শর্ত মানতে আমরা বাধ্য: বিএবি চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় স্বার্থে ব্যাংক একীভূত করতে ব্যাংক মালিকরা বাধ্য বলে জানিয়েছেন বেসরকারি ব্যাংক মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার। তিনি বলেন, ব্যাংক একত্রীকরণ হলে আমাদের কোনো অসুবিধা নেই।

গতকাল সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএবি চেয়ারম্যান বলেন, মার্জার নিয়ে সুন্দর কথা হয়েছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ইন্ডিয়া, মালয়েশিয়া বা ইউরোপ প্রত্যেকটা প্রত্যেক দেশেই এই মার্জারটা হয়। কোনো কোনো ব্যাংক যে কোনো কারণে খারাপ হয়ে যেতে পারে। এটা সারা পৃথিবীতে হয়। আমেরিকাতেও হয়েছে। আমাদের এখানেও লক্ষ্য করা যাচ্ছেÑকিছু কিছু ব্যাংক খারাপ হয়ে গেছে। বেশিরভাগ ব্যাংকই ভালো আছে।

তিনি বলেন, ভালো ব্যাংকগুলোর সঙ্গে খারাপ ব্যাংকগুলোকে একত্রকরণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে। আমরা বলেছি, জাতীয় স্বার্থে যে কোনো কাজ করতে বাধ্য। আমরা করব। জনগণের ব্যাংক। একত্রীকরণ হলে আমাদের কোনো অসুবিধা নেই। আমরা তো শেয়ারহোল্ডারস। আমরা এখানে আজীবন চেয়ারম্যান বা দায়িত্বে থাকব না। প্রজšে§র পর প্রজš§ আসবে। জনস্বার্থে সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে সেই সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমরা একমত। আমাদের কোনো আপত্তি নেই।

একীভূত করার প্রক্রিয়াটা কী হতে পারেÑসাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রক্রিয়া তো আমরা বলতে পারব না। এটা গভর্নর বলতে পারবেন। তারা হোমওয়ার্ক করবে। আমরা আপনাদের কাছে শুনতেছি ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। এই ধরনের পলিসি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে। এজন্য আমরা গভর্নরের সঙ্গে দেখা করেছি। দেখা করে আমরা উত্তর পেয়ে গেছি।’ গভর্নর আমাদের বললেন, ‘আমরা মার্জার শুরু করেছি। ইনশাআল্লাহ আমরা হয়তো এটা এক বছরের মধ্যে শেষ করতে পারব। যেগুলো ব্যাংক দুর্বল হয়ে গেছে, খারাপ নয়, ওই ব্যাংকগুলো সবল ব্যাংকের সঙ্গে মিলানের চেষ্টা করছি। যাতে কারও কোনো ক্ষতি না হয়।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যাংক নিয়ে আমাদের কথা হয়নি। কোন ব্যাংক খারাপ কি ভালো এসব নিয়ে কোনো কথা হয়নি। বেশিরভাগ ব্যাংকই ভালো আছে। গভর্নর এবং অডিট কমিটি যে রিপোর্ট দিয়েছে এতে করে দেখা যায়, মোটামুটি ৯০ শতাংশ ব্যাংকই আমাদের ভালো আছে। হয়তো ১০ শতাংশ খারাপ আছে। এটা থাকতেই পারে। সারা ওয়ার্ল্ডেই তা আছে। এটা ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একত্র হতে পারে। এতে কোনো ক্ষতি হবে না। কী ফর্মুলায় হবে, তা এখনও কোনো কিছু ঠিক হয়নি।’

আমরা মোটেই কোনো উদ্বেগের মধ্যে নেই। সরকার জনগণের স্বার্থে যে কাজই করবে আমরা সমর্থন করব বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, ‘ব্যাংক খাতের ভালোর জন্যই আমরা ব্যাংক একীভূত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের সামনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উদাহরণ রয়েছে। সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে আমরা একটি নীতিমালা তৈরি করব কীভাবে একীভূত করা যায়।’

তিনি বলেন, ‘এমনও হতে পারে যে কোনো ব্যাংক একীভূত করার প্রয়োজন হবে না। ইতোমধ্যে দুর্বল ব্যাংক চিহ্নিত করার জন্য পিসিএ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। আগামী বছরের মার্চ নাগাদ আমরা দুর্বল ব্যাংক চিহ্নিত করতে পারব। এরপর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে কোন কোন ব্যাংক একীভূত করার প্রয়োজন রয়েছে। তখন সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে প্রণীত নীতিমালার আলোকে ব্যাংক একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শুরু হবে।’

মেজবাউল হক বলেন, ‘অন্যান্য দেশের উদাহরণগুলো লক্ষ্য করলে দেখা যায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে মালিকদের নিজস্ব উদ্যোগেই ব্যাংক একীভূত হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিদ্ধান্ত দিয়েছে। আমরাও চাই মালিকরা সিদ্ধান্ত নিক। যদি প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় তাহলে আমরা সিদ্ধান্ত জানাব।’