সাইফুল আলম, চট্টগ্রাম: ব্যবসায়ী আবদুল আউয়ালের মালিকানাধীন প্রাইম গ্রুপের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বন্ধ ও ঋণ খেলাপি। এরমধ্যে প্রাইম শিপ রিসাইক্লিংয়ের পাঁচ বছরের বেশি সময় জাহাজ ভাঙার বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক এশিয়ার প্রিন্সিপাল অফিস শাখায় খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১৩৩ কোটি টাকা। এ ঋণ আদায়ে বন্ধকীতে থাকা ১২৭ শতক সম্পত্তি নিলামে বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে ব্যাংক।
ব্যাংক এশিয়া সূত্রে জানা যায়, প্রাইম শিপ রিসাইক্লিং ব্যবসায়ী আবদুল আউয়ালের প্রাইম গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান। সীতাকুণ্ডের এ প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম পাঁচ বছর ধরে বন্ধ। যদিও ব্যাংক এশিয়ার প্রিন্সিপাল অফিস শাখা থেকে ঋণ সুবিধা নিয়েছিল। বর্তমানে প্রাইম শিপ রিসাইক্লিংয়ের ঋণটি খেলাপি। গত ৩১ আগস্ট খেলাপি হওয়া ঋণের পরিমাণ ১৩২ কোটি ৮৭ লাখ ৪৬ হাজার ৪৮৭ টাকা। এ ঋণের বিপরীতে ব্যাংকটির কাছে বন্ধকীতে রয়েছে সীতাকুণ্ড উপজেলার জাহানারাবাদ মৌজার ১২৭ শতক জমি। অর্থাৎ, ঋণের বিপরীতের জমির পরিমাণ ও দাম খুবই কম। আর এসব বন্ধকী সম্পত্তি আগামী ১০ অক্টোবর নিলাম হবে। এতে আগ্রহী ক্রেতা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান নিলামে অংশ নিয়ে এসব সম্পত্তি কিনতে পারবেন।
ব্যাংক এশিয়ার প্রিন্সিপাল অফিস শাখার কর্মকর্তারা শেয়ার বিজকে বলেন, প্রাইম শিপ রিসাইক্লিংয়ের নামে নেয়া ঋণ বর্তমানে খেলাপি। গত এক বছরের বছরের বেশি সময় ধরে মালিক পক্ষ ঋণ পরিশোধ করছে না। যদিও তিনি একাধিকবার রি-শিডিউল করেছেন। কিন্তু ঋণ পরিশোধ করেননি। এর আগে চেক প্রত্যাখানের জন্য এনআই অ্যাক্টে মামলা করা হয়েছে। এখন ব্যাংকের ঋণ সমন্বয় করার জন্য আইন অনুসানে নিলামের মাধ্যমে বন্ধকী সম্পত্তি বিক্রয়ের কাজ চলছে। এ নিলামে যদি সম্পত্তি বিক্রয় না হয়, তাহলে আমরা আইন অনুসারে অর্থঋণ আদালতে মামলা করব। যদিও তাদের খেলাপি পাওনা পরিশোধে দৃশ্যমান উদ্যোগ লক্ষণীয় নয় ।
জানা যায়, প্রাইম গ্রুপভুক্ত প্রতিষ্ঠান হলো প্রাইম টেক্সটাইল স্পিনিং মিলস, প্রাইম কম্পোজিট মিলস, প্রাইম মেলাং ইয়ার্ন মিলস, প্রাইম স্টিল রি-রোলিং মিলস এবং ইউনিক স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ। এর মধ্যে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত টেক্সটাইল খাতের কোম্পানি প্রাইম টেক্সটাইলস স্পিনিং মিল কাঁচামাল সংকট এবং বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ঘাটতির কারণে গত বছরের ১ ডিসেম্বর থেকে সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে প্রাইম গ্রুপের পরিচালক (প্রকিউরমেন্ট) এবং প্রাইম টেক্সটাইল স্পিনিং মিলসে কোম্পানি সচিব মানজুরুল হাসান তালুকদার শেয়ার বিজকে বলেন, স্থানীয় রাজনীতি ও বকেয়া থাকায় আমাদের গ্যাস এবং বিদ্যুতের সংযোগ কাটা থাকা প্রাইম গ্রুপের কারখানাগুলো উৎপাদন বন্ধ আছে। অর্থাৎ সবগুলো কারখানা বন্ধ আছে। এছাড়া জাহাজ ভাঙার প্রতিষ্ঠানও কয়েক বছর ধরে বন্ধ আছে। আমাদের এমডি নিয়মিত বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের যা ঋণ আছে তার তুলনায় সম্পত্তি অনেক আছে। আমরা চেষ্টা করছি, সবগুলো মিল চালু করার জন্য।