Print Date & Time : 2 July 2025 Wednesday 2:24 am

ব্যাংক ও সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ধার বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য চার লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে এক লাখ ২৫ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা, যা জিডিপির চার দশমিক ৯ শতাংশ। এই ঘাটতি পূরণে অভ্যন্তরীণ উৎস, অর্থাৎ সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক খাত থেকে সংগ্রহ করা হবে ৭১ হাজার ২২৬ কোটি টাকা। বাকি অর্থ আসবে বৈদেশিক উৎস থেকে। এর আগে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক খাত থেকে ৫৮ হাজার কোটি টাকা ধার করার লক্ষ্যমাত্রা ধরেছিল সরকার, যদিও এ লক্ষ্যের চেয়ে অনেক বেশি অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে।
বাজেট বক্তৃতা থেকে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরে সার্বিকভাবে বাজেট ঘাটতি দাঁড়াবে এক লাখ ২৫ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা, যা আগামী অর্থবছরের জন্য প্রাক্কলিত মোট জিডিপির চার দশমিক ৯ শতাংশ। আগামী অর্থবছরে সাত দশমিক আট শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে মোট জিডিপি প্রাক্কলন করা হয়েছে ২৫ লাখ ৩৭ হাজার ৮৪৯ কোটি টাকা। বাজেট ঘাটতি পূরণে বৈদেশিক উৎস থেকে ৫৪ হাজার ৬৭ কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্য ধরা হয়েছে, যা জিডিপির দুই দশমিক এক শতাংশ। এছাড়া অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৭১ হাজার ২২৬ কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্য ধরা হয়েছে, যা জিডিপির দুই দশমিক আট শতাংশ। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যংক ব্যবস্থা থেকে সংগ্রহ করা হবে ৪২ হাজার ২৯ কোটি টাকা, যা জিডিপির এক দশমিক সাত শতাংশ এবং সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য ব্যাংকবহির্ভূত খাত থেকে আসবে ২৯ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা, যা জিডিপির এক দশমিক দুই শতাংশ।
আশা প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, বৈদেশিক সহায়তার যে বিশাল পাইপলাইন গড়ে তোলা হয়েছে তার ব্যবহার বাড়াতে পারলে অভ্যন্তরীণ উৎসের ওপর নির্ভরশীলতা যথেষ্ট কমানো সম্ভব। এছাড়া ক্রমাগত বৈদেশিক সহায়তা ব্যবহারের হার বাড়ানোর প্রচেষ্টা চালানো হবে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, বিগত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৬১ হাজার ৫৪৮ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্য ধরেছিল সরকার। সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় সংশোধিত বাজেটে তা বাড়িয়ে ৬৯ হাজার ৯০৩ কোটি টাকা করা হয়েছিল। তখন ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য মূল বাজেটে ৩৮ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ২৩ হাজার ৯০৩ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয় সংশোধিত বাজেটে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছিল ২৮ হাজার ২০৩ কোটি টাকা। এছাড়া সঞ্চয়পত্র থেকে ধার করার লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ৩০ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। তবে এবারও সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়া বেড়ে যাওয়ার কারণে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ধারের পরিমাণ কমতে পারে বলে মনে করছেন আর্থিক খাতের বিশ্লেষকরা।