রুবাইয়াত রিক্তা: দেশের পুঁজিবাজারে বাজার মূলধনের দিক থেকে সবচেয়ে বৃহৎ খাত হচ্ছে ব্যাংক। আর তাই বাজারে ব্যাংক খাতের প্রভাব অপরিসীম। চলতি বছরের শুরু থেকেই বাজার ভালো অবস্থানের দিকে যাচ্ছিল। এর মধ্যে গত দুই মাস ধরে বড় বিনিয়োগকারীদের লক্ষ্যবস্তু হয় ব্যাংক খাত। ফলে একটানা ঊর্ধ্বমুখী হতে থাকে এ খাতের লেনদেন ও শেয়ারদর। কিছুতেই লাগাম টানা যাচ্ছিল না ব্যাংক খাতের ঊর্ধ্বগতিতে। এ খাতের কারণে অন্যান্য খাত অবহেলিত হয়ে পড়ে। কমতে থাকে অন্য খাতের শক্তিশালী কোম্পানির শেয়ারদরও। অবশেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপে ব্যাংক খাতের গতিতে রাশ টানা গেছে। তবে ব্যাংক খাতের পতন সমগ্র পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে প্রায় ৬২ শতাংশ শেয়ারের দরপতন হয়। পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করতে হলে এ মুহূর্তে ব্যাংকের মতো আরও একাধিক খাত বা কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত করা জরুরি। তা না হলে পুঁজিবাজার সম্পূর্ণরূপে ব্যাংক খাত নির্ভরশীল হয়ে থাকবে।
গতকাল প্রকৌশল, জ্বালানি, টেলিযোগাযোগ ও সিমেন্ট ছাড়া বাকি সব খাতের বেশিরভাগ শেয়ারের দর কমেছে। ব্যাংক খাতে দরপতন হয় ৯০ শতাংশ কোম্পানির। ২৭টি ব্যাংকের দরপতন হয়, বেড়েছে একমাত্র সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের দর। আর্থিক খাতে প্রায় ৭৪ শতাংশ, ওষুধ ও রসায়ন খাতে ৬১ শতাংশ, বিমা খাতে ৮২ শতাংশ, খাদ্য খাতে ৬১ শতাংশ শেয়ারের দরপতন হয়। ব্যাংক খাতে ৪৪ শতাংশ বা ৩৯০ কোটি টাকা লেনদেন হলেও বিক্রির চাপ বেশি ছিল। এ খাতে লেনদেন কমেছে ১০৭ কোটি ৬১ লাখ টাকা। আর্থিক খাতে লেনদেন হয় ১৫০ কোটি টাকা। এ খাতে আগের দিনের তুলনায় লেনদেন কমে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা। ওষুধ ও রসায়ন খাতে বিক্রির চাপে লেনদেন বেড়েছে দুই কোটি টাকা। গতকাল শতভাগ ইতিবাচক ছিল টেলিযোগাযোগ খাত। এ খাতের গ্রামীণফোন ও বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্লসের দরবৃদ্ধিতে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় দ্বিগুণ হয়েছে। গ্রামীণফোনের পাঁচ টাকা ৩০ পয়সা দরবৃদ্ধি সূচকের আরও ১০ পয়েন্ট পতন ঠেকিয়েছে। লেনদেনের নেতৃত্বে থাকা আর্থিক খাতের লংকাবাংলাসহ ব্যাংক খাতের উত্তরা, ইসলামী, আইএফআইসি, এক্সিম, এনবিএল, মার্কেন্টাইল, সিটি, প্রিমিয়ার ব্যাংকের লেনদেন ও দর দুটোই কমেছে। একমাত্র আমরা নেটওয়ার্কসের দর চার টাকা ৬০ পয়সা বেড়েছে। মন্দা বাজারে গতকাল কিছু দুর্বল কোম্পানি দরবৃদ্ধির শীর্ষ পর্যায়ে উঠে আসে। ‘জেড’ ক্যাটাগরির লিগ্যাসি ফুটওয়্যার ৯ দশমিক ১২ শতাংশ, জুট স্পিনার্সের দর আট দশমিক ৮২ শতাংশ, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক চার দশমিক ৫৮ শতাংশ, দেশবন্ধু পলিমার চার দশমিক ২৩ শতাংশ, সিনোবাংলা চার দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে।
Add Comment