পুঁজিবাজারে মোট মূলধনের ৪০ শতাংশের বেশি ব্যাংক ও আর্থিক খাতের। তারপরও ব্যাংক ও আর্থিক খাতে অদূর ভবিষ্যতে ভালো কোনো খবর বিনিয়োগকারীদের জন্য অপেক্ষা করছে না। কারণ ব্যাংকের নন-পারফরমিং লোন আগামী তিন বছরে ৩০ শতাংশ করতে হবে। যদিও অপারেটিং প্রফিট গত বছরের তুলনায় গত ছয় মাসে ভালো ছিল। কিন্তু চূড়ান্ত অডিটিং রিপোর্টে দেখা যাবে, সেটি গত বছরের তুলনায় খুব একটি ভালো আসেনি। কাজেই ব্যাংক খাতে সাধারণ মানুষের যেমন আগ্রহ নেই তেমনি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদেরও আগ্রহ নেই। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন আইআইডিএফসি ক্যাপিটাল লিমিটেডের সিইও মো. সালেহ আহমেদ এবং আমার স্টক ডট কমের সিইও মো. জাহাঙ্গীর।
মো. সালেহ আহমেদ বলেন, কৌশলগত অংশীদার হিসেবে চীনের যে পরিমাণ বিনিয়োগ করার কথা ছিল সেটি তারা করেছে। কিন্তু স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্যদের যে ফান্ডটি পাওয়ার কথা ছিল সেটি সম্ভবত এখনও মুক্ত হয়নি এবং এটি দ্রুতই হবে হয়তো। যে কারণে এটির কোনো ইতিবাচক প্রভাব বাজারে লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। আর এক একটি ব্রোকারেজ হাউজের মালিকরা আমার হিসাব অনুযায়ী, এ ফান্ড থেকে চার কোটি টাকার মতো পাবে। ফলে সেখানে প্রতিটি হাউজ থেকে যদি এক-দুই কোটি টাকা বাজারে বিনিয়োগ হয় তাহলেও বাজারের গতিবেগ অনেক বেড়ে যাবে। সম্প্রতি ব্যাংক খাতের সুদের হার কমানো হয়েছে। ব্যাংকের সুদের হার কমে যাওয়ায় পুঁজিবাজারে তার একটি ইতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যার প্রতিফলন আমরা গত কয়েকদিনে বাজারে লক্ষ্য করেছি। বাজারের টার্নওভার বর্তমানে বেশ ভালো। ৮০০ থেকে এক হাজার কোটি টাকার মধ্যে রয়েছে। অথচ তার আগে গত পাঁচ-ছয় মাস যাবৎ বাজারের টার্নওভার ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকার মধ্যে অবস্থান করছিল। এখন থেকে কিছুতেই বাড়ছিল না। সেদিক বিবেচনায় বর্তমান বাজার ভালো বলা যায়। তাছাড়া পুঁজিবাজারে কিছু স্বল্প মূলধনি কোম্পানির শেয়ারদর অনেক বেড়েছে। কিছু শেয়ারের দর তো চার-পাঁচ গুণের অনেক বেশি বেড়ে গিয়েছে। আর এটি ফান্ড ছাড়া সম্ভব নয়। কারও কাছে তো অবশ্যই ফান্ড আছে।
মো. জাহাঙ্গীর বলেন, পুঁজিবাজারের মোট মূলধনের ৪০ শতাংশের বেশি ব্যাংক ও আর্থিক খাতের। তারপরও আমার মনে হয় ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক খাতে অদূর ভবিষ্যতে ভালো কোনো খবর বিনিয়োগকারীদের জন্য অপেক্ষা করছে না। কারণ ব্যাংকের নন-পারফরমিং লোন আগামী তিন বছরে ৩০ শতাংশ করতে হবে। যদিও অপারেটিং প্রফিট গত বছরের তুলনায় এবার ছয় মাসে ভালো ছিল। কিন্তু চূড়ান্ত অডিটিং রিপোর্টে দেখা যাবে, সেটি গত বছরের তুলনায় খুব একটি ভালো আসেনি। কাজেই ব্যাংক খাতে সাধারণ মানুষের যেমন আগ্রহ নেই তেমনি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদেরও তেমন আগ্রহ নেই। সেদিক বিবেচনায় বাকি যে ৬০ শতাংশ শেয়ার আছে বাজারে তার মধ্যে প্রকৌশল ও জ্বালানি খাত ছাড়া ভরসার জায়গা নেই। লক্ষ্য করলে দেখবেন, বাজারে প্রতিদিন সূচক কমছে কিন্তু যাদের পোর্টফলিওতে ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক খাতের শেয়ার নেই তাদের পোর্টফলিও প্রতিদিনই গেইন করছে।
শ্রুতিলিখন: রাহাতুল ইসলাম