ব্যাংক খাতে দেখা দিতে পারে স্বেচ্ছাচারিতা

 

প্রতি রবি থেকে বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে এনটিভি ‘মার্কেট ওয়াচ’ অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনায় তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে শেয়ার বিজের নিয়মিত আয়োজন ‘এনটিভি মার্কেট ওয়াচ’ পাঠকের সামনে তুলে ধরা হলো:

ব্যাংকের পরিচালক-সংক্রান্ত আইন পরিবর্তনের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা খুব একটা ভালো সিদ্ধান্ত নয়। কারণ কোনো বিষয়েই একাধিপত্য ভালো ফল বয়ে আনে না। এক্ষেত্রে স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়টি চলে আসতে পারে।  তবে এ সিদ্ধান্ত কি উদ্দেশ্যে নেওয়া হচ্ছে সেটিও দেখার বিষয়। যদি উদ্দেশ্য এমন হয় যে, ব্যাংকে কিছু সমস্যা ছিল, সেগুলো সমাধানের জন্য নেওয়া হচ্ছে, তাহলে ভালো। কিন্তু আমরা লক্ষ করেছি ইসলামী ব্যাংকের মালিকানা পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বাজারে একটি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় এতে আলোচক ছিলেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক এম শাহজাহান মিনা এবং অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ।

এম শাহজাহান মিনা বলেন, ব্যাংকের পরিচালক-সংক্রান্ত যে আইন পরিবর্তন হতে যাচ্ছে, তা খুব একটা ভালো সিদ্ধান্ত নয়। কারণ কোনো বিষয়েই একাধিপত্য ভালো ফল বয়ে আনে না। ব্যাংকের মালিকানায় শেয়ারহোল্ডাররা থাকেন। এর বাইরে পরিচালকরা থাকেন। সেখানে যদি একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ব্যাংকের মালিকানা কেন্দ্রীভূত হয়ে যায়, তাহলে বোর্ডে যারা থাকবেন, তাদের নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে। তাদের কথামতোই কাজ করতে হবে পরিচালনা পর্ষদকে। এক্ষেত্রে স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়টি রয়ে গেছে। তবে এ সিদ্ধান্ত কি উদ্দেশ্যে নেওয়া হচ্ছে, সেটিও দেখার বিষয়। যদি উদ্দেশ্য এমন হয় যে, ব্যাংকে কিছু সমস্যা ছিল, সেগুলো সমাধানের জন্য নিচ্ছে, তাহলে ভালো। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করেছি, ইসলামী ব্যাংকের মালিকানা পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বাজারে একটি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল। অনেক ডিপোজিটর সেখান থেকে তাদের সঞ্চিত টাকা তুলে অন্য জায়গায় ডিপোজিট রেখেছেন। এটি একটি খারাপ দিক। এমন ঘটনা যদি অন্য ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রেও ঘটে, তাহলে পরবর্তীতে কোনো এক সময় একচেটিয়া আধিপত্য বাজারের যে অসুবিধা সৃষ্টি করে সেগুলোর সম্মুখীন হতে হবে। তিনি বলেন, ব্যাংক খাত থেকে যেভাবে টাকা-পয়সা লুটপাট হচ্ছে, তাতে দেশের জনগণ খুবই শঙ্কিত। এভাবে যদি চলতে থাকে, তাহলে এক সময় মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখতে সাহস পাবে না। এমনকি যারা শেয়ারে বিনিয়োগ করেছেন, তারাও টাকা তুলে  নেবেন। অর্থাৎ ব্যাংক খাতের ওপর আস্থাহীনতার সৃষ্টি হবে। তাই খুব দ্রুত খেলাপি ঋণ আদায়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে চাপ সৃষ্টি করতে হবে।

সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ বলেন, মালিকানা পরিবর্তন হলেই যে ব্যাংকের ডিপোজিট পড়ে যাবে, তা নয়। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ পরিবর্তন যদি বিতর্কিত হয়ে পড়ে, তাহলে ডিপোজিটরদের মধ্যে এক ধরনের শঙ্কা তৈরি হবে। তাদের পুঁজির নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়বে এমন আশঙ্কা থেকে তারা টাকা তুলে নিতে পারেন। ব্যাংক খাতে মালিকানা বা চেয়ারম্যানের পদত্যাগ বড় বিষয় নয়। এখানে সুশাসনটাই মূল বিষয়। সুশাসন থাকলে নিজের ব্যাংক থেকেও টাকা নেওয়া সম্ভব নয়। নামে-বেনামে পরিচালকরাও টাকা নিতে পারবেন না। তাই মরগেজগুলো যদি ভুয়া না হয়, ব্যাংক কর্মচারীরা যদি অনিয়ম না করেন, এমডি যদি কমিশন না খান, চেয়ারম্যান যদি লুটপাট না করেন, তাহলে মালিকানা পরিবর্তন নেতিবাচক কিছু নয়। কিন্তু আমাদের দেশে মালিকানা পরিবর্তনটিই বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে সবার কাছে।

শ্রুতি লিখন: রাহাতুল ইসলাম

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০