প্রতি রবি থেকে বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে এনটিভি ‘মার্কেট ওয়াচ’ অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনায় তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে শেয়ার বিজের নিয়মিত আয়োজন ‘এনটিভি মার্কেট ওয়াচ’ পাঠকের সামনে তুলে ধরা হলো:
পুঁজিবাজার দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সূতিকাগার। দেশের অর্থনীতির সঙ্গে পুঁজিবাজারের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সঙ্গে অর্থনীতির সম্পর্ক খুবই কম। এ অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য একটি স্থিতিশীল পুঁজিবাজার জরুরি। বর্তমানে পুঁজিবাজারে অনেক খাত রয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি খাত সম্ভাবনাময়। এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ব্যাংক খাত। এ খাতের বেশ কিছু ব্যাংক ভালো ব্যবসা করছে। তাই ব্যাংক খাতের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে আলোকপাত করা হয়। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ, এফসিএ এবং ভ্যানগার্ড অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের এমডি ওয়াকার এ চৌধুরী।
জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমানে দেশের যে অবস্থা তাতে পুঁজিবাজারের জন্য একটি ইতিবাচক সংকেত আমরা দেখছি। দেশের অর্থনীতি এখন ভালো। ফলে পুঁজিবাজারের সামনের দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। দেশে এখন উন্নয়ন হওয়া ছাড়া আর কোনো রাস্তা নেই। এখানে জনসংখ্যা ১৭ কোটির মতো। আর এদের বাঁচিয়ে রাখতে হলে কাজ দরকার। এজন্য ব্যবসা বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেটে আমরা শুধু ব্যাংক নিয়ে সময় নষ্ট করছি। আমেরিকার অর্থনীতিতে পুঁজিবাজারে ইকুইটি মার্কেটের অবদান ৭০ শতাংশ। ইংল্যান্ডে ৫৫-৬০ শতাংশের মতো। সে তুলনায় বাংলাদেশে অনেক কম। আমাদের পুঁজিবাজারে বন্ড মার্কেট উন্নত করার সুযোগ আছে। প্রেফারেন্স শেয়ার, অলটারনেটিভ ফান্ডসহ বন্ডমার্কেটের দিকে নজর দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি ইইএফ ফান্ড আছে। আমি মনে করি, এটি তাদের ডিল করা উচিত নয়। এটি বেসরকারি খাতে দিয়ে দেওয়া উচিত ছিল।
ওয়াকার এ চৌধুরী বলেন, লক্ষ করলে দেখবেন এখনও সাত-আটটির মতো ব্যাংক আকর্ষণীয় দরে লেনদেন হচ্ছে। তাছাড়া গত চার-পাঁচ বছরের চিত্রে দেখা যাবে, অনেক ব্যাংক তাদের পোর্টফোলিও গঠন করেছে। আবার অনেকে তাদের ব্যালেন্সশিট পুনর্গঠন করেছে। তারা এখন রিটেল, এসএমইতে যাচ্ছে এবং বিনিয়োগও করছে সেখানে। ফলে বেশ কিছু ব্যাংক, যেমনÑব্র্যাক, সিটি, প্রাইম ব্যাংক, এদের ভালো আয় আমরা দেখতে পাচ্ছি। পাশাপাশি কিছু ছোট ব্যাংকেরও ভালো কর্মক্ষমতা বা দরের প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি। কাজেই এ বিষয়গুলো অবশ্যই বাজারের জন্য ভালো। অনেকেই মনে করছেন, বিনিয়োগের জন্য ব্যাংক খাত এখন সঠিক নয়। তবে আমার মনে হয়, ব্যাংক খাতে এখনও অনেক বিনিয়োগ-উপযোগী শেয়ার আছে। অন্যদিকে জুন ক্লোজিংয়ে যে কোম্পানিগুলো আছে, সেগুলোরও একটি ভালো সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি। ওষুধ খাতের সম্ভাবনাও ভালো, যদিও এই খাতের কর্মক্ষমতা সেভাবে শুরু করা হয়নি। তারপরও এর সম্ভাবনা ভালো দেখতে পাচ্ছি। আমি মনে করি, সামনে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যদি কোনো সমস্যা না হয় তাহলে আগামী জুন পর্যন্ত মার্কেটে একটি প্রবৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
শ্রুতি লিখন: রাহাতুল ইসলাম