নিজস্ব প্রতিবেদক: পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম বলেছেন, সুদের হার নির্ধারণে ব্যাংক খাত অনেক সময় মনোপলির মতো আচরণ করছে। ওখানে মনোপলি হওয়ার সুযোগ নেই। সুযোগ দেওয়াই যাবে না।
গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমি মিলনায়তনে বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস ডিপার্টমেন্ট আয়োজিত ব্যাংকার্স-এসএমই নারী উদ্যোক্তা সমাবেশ ও পণ্য প্রদর্শনী মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শামসুল আলম বলেন, ‘ব্যাংক ব্যবস্থাকে অবশ্যই প্রতিযোগিতার মধ্যে রাখতে হবে। সেই পরিবেশেই তাদের দেখতে হবে, পরীক্ষা করতে হবে, জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। টাকার বাজারের দাম হলো তার সুদ। আমরা যখন বাজারে যাই, পণ্য কিনি, তার একটা দাম থাকে। তো টাকার দাম হলো সুদ। আমাদের ক্রমান্বয়ে চেষ্টা করতে হবে সেই সুদ কীভাবে বাজার-নির্ধারিত করা যায়। তাহলে যেটা স্থিতিশীল হবে, তাতে প্রকৃত টাকার মূল্য প্রতিফলিত হবে। বোধ হয় খুব কঠিন হয়ে যায় কথাটা।’
তিনি বলেন, ‘আমি যেটা বলতে চাচ্ছি, বাজার অর্থনীতির সুযোগটা আমাদের নিতে হবে। এটা বাজারের ওপর নির্ভর করতে হবে। ব্যাংকগুলোকে যতটা সম্ভব স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে এবং দেখতে হবে আমরা আলাপ-আলোচনা করে মনোপলিতে নিয়ে নিচ্ছি কি না ব্যাংক খাতকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেক সময় মনোপলির মতো আচরণ করছি। ৫৭-৫৮টি ব্যাংক। ওখানে তো মনোপলি হওয়ার সুযোগ নেই। সুযোগ দেওয়াই যাবে না। সেজন্য প্রয়োজনে আইনকানুন বিধিবিধান করতে হবে, ব্যাংকগুলো যাতে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তাহলে তারা ব্যয় কমিয়ে আনবে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য। সুদহার বাজারভিত্তিক ছেড়ে না দিলে তা সারভাইভ করবে না।’
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে ক্রেডিট কার্ড ছাড়া সব ধরনের ঋণে সুদের হার ৯ শতাংশ নির্ধারণ করে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ছয় শতাংশ সুদে আমানত নিচ্ছে ব্যাংকগুলো। ঋণ-আমানতের সুদহার ৬-৯ করা নিয়ে ব্যাংকগুলোর মধ্যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। অনেক ব্যাংক ঋণ বিতরণ বন্ধ করে দিয়েছে। পুরোনো ঋণের সুদও কমিয়ে এনেছে অনেক ব্যাংক।