মো. আসাদুজ্জামান নূর: চলতি সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস গতকাল দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে টাকার অঙ্কে লেনদেন। পুঁজিবাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গতকাল বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের শীর্ষে ছিল ব্যাংক খাত। এছাড়া বস্ত্র, বিবিধ ও ওষুধ খাতে বিনিয়োগ করতে দেখা যায়। অন্যদিকে, ক্রেতা কম থাকায় লেনদেনের তলানিতে চলে যায় ট্র্যাভেল, সিরামিক, মিউচুয়াল ফান্ড ও টেলিযোগাযোগ খাত।
গতকাল ব্যাংক, বস্ত্র ও বিবিধ খাতের ওপর ভর করে আগের কার্যদিবসের চেয়ে লেনদেন বেড়েছে প্রায় ৩১০ কোটি টাকা। রোববার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ১১১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। গতকাল সেটা বেড়ে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৪২১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এ সময় ৩৩ কোটি ৭২ লাখ ১৬ হাজার ২৬টি শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছে এক লাখ ৮৮ হাজার ৪৩৪ বার।
আগের কার্যদিবসের মতো গতকালও লেনদেনে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখে ব্যাংক খাত। ২৯৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা লেনদেনের দিনে এ খাতের অবদান ছিল ২২ শতাংশ। এ খাতের সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর বাড়তে দেখা গেছে। ২৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর বাড়ার বিপরীতে কমেছে দুটির ও অপরিবর্তিত ছিল দুটির। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১৬৪ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
গতকাল বিবিধ খাততে টপকে লেনদেনে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসে বস্ত্র খাত। ২০৭ কোটি ৬১ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে ১৫ শতাংশ অবদান রাখলেও এ খাতের সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদর কমতে দেখা গেছে। একক খাত হিসেবে সর্বোচ্চ ৪১টি কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাস পায়। এর বিপরীতে দর বেড়েছে মাত্র ৯টির ও অপরিবর্তিত ছিল ছয়টির। আগের কার্যদিবসে এ খাতের লেনদেন ছিল ১৩৮ কোটি ২০ লাখ টাকার।
তৃতীয় অবস্থানে থাকা বিবিধ খাতের সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। এ খাতের ১০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম কমার বিপরীতে বেড়েছে মাত্র তিনটির। তবে লেনদেন আগের কার্যদিবসের চেয়ে বাড়তে দেখা গেছে। ২০৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা লেনদেনে এ খাতের অবদান দাঁড়ায় ১৫ শতাংশ। আগের কার্যদিবসে এ খাতে লেনদেন হয় ১৬৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাসের ফলে চতুর্থ অবস্থানে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতের লেনদেন আগের কার্যদিবসের চেয়ে কম হয়। গতকাল এ খাতে লেনদেন হয় ১৬৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। গতকাল ১২ শতাংশ অবদান রাখা এ খাতের ২১টি কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাস পায়, আর দর বাড়ে আটটির। আগের কার্যদিবসে এ খাতের লেনদেন ছিল ১২৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা।
লেনদেনের পঞ্চম অবস্থানে থাকা প্রকৌশল খাতেরও সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাস পেতে দেখা যায়। ৭৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে এ খাতের অবদান ছিল পাঁচ শতাংশ। এদিন লেনদেনে অংশ নেয়া এ খাতের ৩৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম কমে, আর বাড়ে আটটির ও অপরিবর্তিত ছিল মাত্র একটির।
এছাড়া গতকাল আইটি খাত চার দশমিক ৩২ শতাংশ, জ্বালানি চার দশমিক ২০ শতাংশ, খাদ্য তিন দশমিক ৬৮ শতাংশ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের অবদান ছিল দুই দশমিক ৯৬ শতাংশ।
গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১১ পয়েন্ট বেড়ে ছয় হাজার ৯৪১ পয়েন্টে অবস্থান করে। অপর দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহ্ সূচক ডিএসইএস শূন্য দশমিক শূন্য সাত পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৪৬৫ পয়েন্টে ও বিশেষ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস৩০ সূচক তিন পয়েন্ট বেড়ে দুই হাজার ৬৫৯ পয়েন্ট অবস্থান করতে দেখা গেছে।
সূচকের উত্থান হলেও এদিন দরপতন ঘটে সিংহভাগ কোম্পানির। লেনদেন হওয়া ১১৫টি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে, কমেছে ২২৭টির ও অপরিবর্তিত ছিল ৩১টির।