এম এ মাসুম: স্বাধীনতার ৫০ বছরে দেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাত অনেক দূর এগিয়েছে। আবার অনিয়ম ও ঋণ কেলেঙ্কারিতেও জর্জরিত হয়েছে দেশের অর্থনীতি। অনিয়ম-দুর্নীতি ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা চলে গেছে লুটেরাদের পকেটে। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে লোপাট ও বিশৃঙ্খলা ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। বিভিন্ন ব্যাংকের মালিকপক্ষ এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জোগসাজশ এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংকের পরোক্ষ সহযোগিতার ফলে ব্যাংকগুলোর অনিয়ম, জালিয়াতির ও লুণ্ঠনের প্রকৃত আর্থিক চিত্র দেশের জনগণ জানতে পারেনি যা বর্তমানে সবার সামনে উšে§াচিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বলছে, ২০০৮ থেকে ২০২৩-এই ১৫ বছরে দেশের ব্যাংক খাত থেকে ছোটবড় ২৪টি অনিয়মের মাধ্যমে ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। ব্যাংক খাত থেকে অনিয়মের মাধ্যমে বের করে নেয়া এ অর্থ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের ১২ শতাংশের বেশি। অথচ এ অর্থে অনায়াসে বাজেট-ঘাটতি মেটানো সম্ভব হতো। তবে এ তথ্য আংশিক, প্রকৃত লোপাট অনেক বেশি।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি। ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল মাত্র ২২ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা। তারপর থেকে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ অস্বাভাবিক হারে বাড়তে শুরু করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের ৩১ মার্চ ২০২৪ শেষে ব্যাংকিং খাতে মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৪০ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ১১ দশমিক ১১ শতাংশ। এর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে এবং ভয়ংকর কৌশল যার নাম ঋণ অবলোপন (রাইট অফ)। মন্দমানের খেলাপি ঋণ দীর্ঘদিন আদায় না হলে তা ব্যাংকের মূল ব্যালান্সশিট থেকে আলাদা করে অন্য একটি লেজারে সংরক্ষণ করা হয়, যা ব্যাংকিং পরিভাষায় ঋণ অবলোপন বা রাইট অফ নামে পরিচিত।
গত কয়েক বছরে খেলাপি ঋণ অবলোপন বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে অনেক ব্যাংকগুলো। সব মিলিয়ে খেলাপি ও মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ ৪ লাখ ৩৯ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। উল্লেখ্য, নতুন বাজেটে মোট রাজস্ব^ আয়ও ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে খেলাপি ও মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা বা প্রায় ৪৬ শতাংশ বেড়েছে। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালানোর সময় দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ অন্তত ২ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
২০১৪ সালে বিরোধী দলের বর্জনের মুখে একতরফা নির্বাচনে আবারও ক্ষমতাসীন হয় আওয়ামী লীগ। টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পরপরই দেশের ব্যাংক খাতে নতুন উদ্যমে লুণ্ঠন শুরু হয়। ২০১৭ সালের গত ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশের ব্যাংকিং ইতিহাসে এক কলঙ্কময় অধ্যায় রচিত হয়। এ দিন বাংলাদেশের সর্ব বৃহৎ ইসলামী ব্যাংকের মালিকানা ডাকাতির মাধ্যমে ছিনতাই করে নেয় চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ। ইসলামী ব্যাংকের এমডি, চেয়ারম্যানসহ সব পরিচালককে জোর করে বের করে দেয় এমনকি অনেককে দেশ ছাড়া করা হয়। পরবর্তী সময়ে আরও ছয়টি ইসলামী ধারার ব্যাংককে দখল করে নেয়। ইতোপূর্বে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক এস আলম গ্রুপের মালিকানায় ছিল। এভাবেই দেশের মোট সাতটি ইসলামী ব্যাংককে শুরু হয় নানামুখী লুটপাটের মহোৎসব। ফলে ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকদের মধ্যে মারাত্মক আস্থাহীনতা তৈরি হয়। সবগুলো ইসলামী ব্যাংক বর্তমানে ব্যাপক আর্থিক সংটে পতিত হয়েছে। প্রায় প্রতিদিন বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্যান্য ব্যাংক হতে অর্থ ধার করে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে এসব ব্যাংক যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
১৯৮৩ সালে ইসলামী ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাকালীন ব্যাংকটির ৭০ শতাংশ পুঁজি জোগান দিয়েছিলেন বিদেশিরা এবং পরবর্তী সময়ে দেশের সেরা ব্যাংকে পরিণত হয়। সৃষ্টিলগ্ন থেকেই ঐতিহ্যগতভাবে ব্যাংকটির সব জনশক্তির সততা, জবাবদিহিতা, শৃঙ্খলা সর্বমহলে প্রশংসিত ছিল। কিন্তু মালিকানা পরিবর্তনের পর থেকেই ব্যাংকটির কিছু কর্মকর্তা যাদের সৎ ও দায়িত্বশীল মনে করা হতো তারা হঠাৎ লাঠিয়াল বনে গেলেন এবং সবার চোখের সামনেই লুটপাটের উৎসবে মেতে উঠলেন। নামে বেনামে কোম্পানি খুলে বিভিন্ন বিনিয়োগের আওতায় অর্থ সরাতে শুরু করলেন। শুধুমাত্র বিনিয়োগ নয় আরও বহুমাত্রিক উপায়ে ব্যাংক থেকে অর্থ বের করে নিতে থাকেন। কোনো রকম নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, বাছ বিচার ও ন্যূনতম যোগ্যতা ছাড়াই চট্টগ্রামের মাত্র কয়েকটি থানা হতে ব্যাংকটিতে হাজার হাজার কর্মী নিয়োগ করা হয়। বলতে গেলে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে সাধারণ ব্যাংকিং শিষ্টাচার মানা হয়নি।
এসব নিয়োগে শত শত কোটি টাকার অবৈধ লেনদেনের অভিযোগও পাওয়া যায়। শুধু তাই অন্যান্য ব্যাংকের দুর্নীতির দায়ে চাকরিচ্যুত অথবা অবসরপ্রাপ্ত নির্বাহীদের এ ব্যাংকের উঁচু পদে বসাতে থাকে। আবার ব্যাংকের অনেক ভালো কর্মীদেরও লোপাট কার্যক্রমে সহযোহিতা করতে বাধ্য করা হতো। দুর্নীতিবাজদের দাম্ভিকতা ও হুংকারে সাধারণ ব্যাংকাররা ভয়ে তটস্থ থাকত। ইতোমধ্যে বহু সৎ, নিষ্ঠাবান ও প্রতিভাবান কর্মকর্তা ব্যাংক ছেড়ে চলে গেছেন এবং অনেককে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। সব ধরনের নিয়মাচার ও আইন কানুনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা প্রতি বছর এমনকি বছরে একাধিক সময়ে পদোন্নতি পেতে শুরু করলেন। ফলে অল্প সময়ের মধ্যে তারা বনে গেলেন বড় কর্মকর্তা ও ব্যাংকের নীতিনির্ধারক। ২৪ নভেম্বর ২০২২ ইসলামী ব্যাংকের ভয়াবহ চিত্র প্রথমবারের মতো জানা যায় একটি জাতীয় দৈনিকে ‘ভয়ংকর নভেম্বর’ শিরোনামে প্রতিবেদনের মাধ্যমে। খবরে বলা হয় ব্যাংকটির বিভিন্ন শাখার মাধ্যমে নানা প্রতিষ্ঠানের নামে বেনামে এমনকি কোনো প্রকার কাগজপত্র ছাড়াই হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়ে যায়। ১৬ আগস্ট দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়, ইসলামী ধারার আটটি ব্যাংক থেকে দেড় লাখ কোটি টাকারও বেশি ঋণ বের করে নেয়া হয়।
ইসলামী ধারার বাইরে অন্য ব্যাংক থেকেও আরও প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার ঋণ নেয়া হয়। তার মানে এ গ্রুপটি ব্যাংকিং সেক্টর থেকে ২ লাখ কোটি টাকার বেশি আত্মসাতের তথ্য ওঠে এসেছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, লুটপাটের পরিমাণ আরও বেশি হবে। তারা মনে করেন, এস আলম যেভাবে দেশের ব্যাংকিং খাত থেকে টাকা লুটপাট করেছে তা একটি নিরপেক্ষ, সঠিক ও শক্তিশালী তদন্ত করা হলে ব্যাংক কেলেঙ্কারির দিক থেকে বিশ্বের এক নম্বরে অবস্থান করবে বাংলাদেশ। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে ভাগবাটোয়ারার সম্পর্ক গড়ে উঠায় দেশের সব সরকারি সংস্থা, আইন আদালত এমনকি নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও অসহায় হয়ে পড়ে এস আলমের অনিয়মের কাছে। তার বিরুদ্ধে ন্যূনতম ব্যবস্থা নেয়ার সাহস দেখাতে পারেনি। বরং নীতিসহায়তা দিয়ে অনেক সময় তার লুটপাটের সহায়তা করতে বাধ্য হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সিপিডির দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮ সালের পর ব্যাংক খাতে সবচেয়ে বড় ঋণ অনিয়মের ঘটনা ঘটে বেসিক ব্যাংকে। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত নানা অনিয়মের মাধ্যমে এ ব্যাংকে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার লুটপাটের ঘটনা ঘটে। বেসিক ব্যাংকের আলোচিত ঋণ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত ছিলেন ব্যাংকটির তৎকালীন চেয়ারম্যান আবদুল হাই ওরফে বাচ্চু। তার বিরুদ্ধে দুদকের পক্ষ থেকে ৫০টির বেশি মামলা করা হলেও বাচ্চুকে এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। বেসিক ব্যাংকের কেলেঙ্কারির পাশাপাশি প্রায় একই সময়ে ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে আলোচিত আরেক ঘটনা ছিল রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক কেলেঙ্কারি। এতে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার অনিয়ম হয়। এ ছাড়া ২০১০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত কয়েক ধাপে জনতা ব্যাংকে ঘটে ১০ হাজার কোটি টাকার ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনা।
২০২১ সালে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের (সাবেক এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক) ব্যবস্থাপনা পরিচালক থাকা অবস্থায় প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারের আর্থিক খাতে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার ঋণ অনিয়মের ঘটনা সামনে আসে। এ ছাড়া পদ্মা ব্যাংকের কাছে এখন গ্রাহকদের আমানত রয়েছে ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা। এ আমানত থেকে ৫ হাজার ৭০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকটি। তবে বিতরণকৃত ঋণের অর্ধেকের বেশি এখন খেলাপি। পদ্মা ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল দ্য ফারমার্স ব্যাংক নামে। চতুর্থ প্রজšে§র ব্যাংক হিসেবে ২০১৩ সালে কার্যক্রম শুরু করেছিল ব্যাংকটি। কিন্তু নজিরবিহীন ঋণ জালিয়াতি ও অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে কার্যক্রম শুরুর তিন বছরের মধ্যে ব্যাংকটি মুখ থুবড়ে পড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে সরকারি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ ছিল ৬৫ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা, যা ২০২৪ সালের মার্চে বেড়ে হয়েছে ৮৪ হাজার ২২১ কোটি টাকা। পদ্মা ব্যাংক পিএলসির জš§ ২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল। বিশ্লেষকরা মনে করেন, খেলাপি ঋণের অধিকাংশই বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। এগুলো আর ব্যাংকে ফেরত আসার সম্ভাবনা নেই। খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির নানা অনিয়মকে পেছন থেকে সায় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক খাতের অনিয়ম সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতে না পারে সেজন্য চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে অলিখিত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। ফলে সাংবাদিকেরা আগের মতো কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারছেন না। তবে ওই নেষেধাজ্ঞা ৬ আগস্ট প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ইসলামী ব্যাংকসহ ব্যাংকিং সেক্টরের প্রকৃত লোটপাটের চিত্র আশা করি শিগগিরই জানা যাবে। বিগত সময়ে ব্যাংকিং সেক্টরের দুর্নীতি সম্পর্কে অবহিত থাকলেও বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রকাশ করার সাহস পায়নি। একসময় ব্যাংকের প্রয়াত ও সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ ব্যাংক খাতের লোপাট নিয়ে কলম ধরতেন। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও ড. মইনুল ইসলাম, ড. আহসান এইচ মনসুর নির্বাহী পরিচালক, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই), সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন), টিআইবিসহ অল্প সংখ্যক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান আর্থিক খাতের অনিয়মের বিরুদ্ধে তাদের মতামত প্রকাশ করার চেষ্টা করেছেন। আরও অনেক অর্থনীতিবিদ ও লেখকের মনে ক্ষোভ থাকলেও ভয়ে তা প্রকাশ করতে পারতেন না।
বর্তমানে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। আমরা নতুন সরকারের কাছে প্রত্যাশা করছি ব্যাংক ও আর্থিক খাতের প্রকৃত জাল-জালিয়াতির তথ্য জাতির সামনে প্রকাশ করা হোক। এই জালিয়াতি কারবারিদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান চালাতে হবে। ব্যাংক খাতকে আমুল সংস্কারের আওতায় আনতে হবে। যেনতেনভাবে অর্থ লোপাটের ফাঁকফোকর বন্ধ করতে হবে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে লোপাটকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। ব্যাংকে নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে হবে। প্রয়োজনে ব্যাংকার্স রিক্রুটমেন্ট কমিটির আদলে সব বেসরকারি ব্যাংকের নিয়োগ কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় কিনা ভাবা যেতে পারে, যাতে মেধাবীরা এ খাতকে নেতৃত্ব দিতে পারেন। ব্যাংক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করে জনগণের আমানতকে সুদৃঢ় এবং দেশের অর্থনীতিকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে হবে। মোটকথা ব্যাংক ও আর্থিক খাতে টেকসই শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে ছাত্রজনতার আন্দোলনের শহিদের আত্মত্যাগ ও লাখো তরুণ-তরুণীর আকাক্সক্ষাকে সার্থক করতে হবে।