নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেছেন, আমি এরই মধ্যে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকে মাঠে নামিয়ে দিয়েছি, কথা বলেছি তাদের সঙ্গে। তারা (ব্যবসায়ীরা) ঘোষণা দিল ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা, আজ কেন তারা ১৬০ টাকায় বিক্রি করছে? আমাদের প্রান্তিক চাষিদের কিন্তু তাহলে লস দিয়ে বিক্রি করতে হবে, যেহেতু ফিডের দাম বেশি। আমাদের ক্ষুদ্র খামারিরা বড় ধরনের ক্ষতির শিকার হবে। আমরা এ বিষয়টি দেখছি।
গতকাল সোমবার তিনি এ তথ্য জানান। এ এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেন, তাহলে আমার প্রশ্ন এখানেÑযে মুরগি ফার্ম থেকে চার দিন আগে ২২০ থেকে ২৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, তারা ঘোষণা দিল ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা, সেটি আজ তারা ১৬০ টাকায় বিক্রি কীভাবে করে? তাহলে এই ৭০ থেকে ৮০ টাকার যে গ্যাপ, সেটি কি তারা জনগণের পকেট থেকে তুলে নিয়ে গেছে? এ প্রশ্ন আমি আপনাদের কাছে রাখলাম এবং সরকারের যারা সংশ্লিষ্ট আছেন, এ বিষয় নজর দেয়ার জন্য লিখিতভাবে জানাব। আমি মনে করি অস্থিতিশীল মুরগির বাজারে আজ স্বস্তি এসেছে।
তিনি জানান, ব্রয়লার মুরগির দাম মার্চের শুরুতে ২৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। তখন আমরা সারাদেশে অভিযান পরিচালনা করেছিলাম। সেখান থেকে তথ্য-উপাত্ত নিয়ে আমরা ৯ মার্চ পোলট্রি সেক্টরের প্রান্তিক চাষি, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী এবং বড় ফার্মগুলোকে ডাকলাম। সে সময় বড় ফার্মগুলো জানাল তাদের উৎপাদন খরচ ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। যেহেতু ফিডের দাম ও বাচ্চার দাম বেশি, কন্ট্রাক্ট ফার্মের বাইরে যারা আছেন তাদের উৎপাদন খরচ ছিল ১৬০ টাকা। সেই মিটিংয়ের পর আমরা আটটি সুপারিশ সরকারের কাছে করেছি। কিন্তু দেখা গেল, সেই সুপারিশ কোনো কাজ করেনি, বরং দাম আরও বেড়ে গেল। দাম বেড়ে ফার্ম পর্যায়ে দাঁড়াল ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়, যেটার প্রভাব নিউমার্কেট কাঁচাবাজারে দেখেছি রমজানের দুই দিন আগে। সেখানে দেখলাম ২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার। সেদিন আমরা বড় চার কোম্পানিকে শোকজ করলাম।
ভোক্তার ডিজি জানান, রমজান শুরুর আগের দিন বৃহস্পতিবার তারা আমাদের এখানে শোকজের জবাব দেয়। ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকায় ব্রয়লার বিক্রির ঘোষণা দেন কাজী ফার্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। শুক্রবার মুরগির দাম ২৫০ টাকা হলো। শনিবারে এটি আরও কমল। গতকাল বাজারে ২২০ থেকে ২৩০ টাকায় নেমে গেল। আমি আজ সকালে বাজার থেকে রিপোর্ট নিলাম, কাপ্তান বাজারে আমাদের টিম অভিযান করে রিপোর্ট করল, সেখানে খুচরা পর্যায়ে দাম ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা। তাহলে ফার্ম থেকে যেটি ১৯০ টাকা ঘোষণা দেয়া হল সেটি খুচরা পর্যায়ে ১৯০ টাকা। আমি খবর নিয়েছি ফার্ম থেকে গতকাল ১৬০ টাকা দরে মুরগি বিক্রি করেছে।
গতকাল রাজধানীর কাপ্তান বাজারে অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এ সময় মুরগির ক্রয়মূল্য না দেখাতে পারায় এবং বিক্রির রসিদ না দেয়ায় কাপ্তান বাজারে মুরগির একটি আড়ত বন্ধ করে দেয় তারা। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার এ সময় আড়তদারকে কাগজপত্র নিয়ে ভোক্তার কার্যালয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। বাজারে ক্রয়-বিক্রয়ের তালিকা টানানো এবং ক্রয় রশিদ সংরক্ষণে রাখতে নির্দেশনা দিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।