ব্রয়লার মুরগি-ডিমের দাম আরও বেড়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: দফায় দফায় দাম বেড়ে এখন প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে বাজারভেদে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, যা গত মাসেও ১৫০ থেকে ১৬০ টাকার মধ্যে ছিল। অর্থাৎ এ সময়ে দাম বেড়েছে প্রতি কেজি ৭০ টাকা। আর শেষ দফায় গত এক সপ্তাহে বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। তখন দাম ছিল ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। এ পরিস্থিতিতে বেশ কিছুদিন পর যারা ব্রয়লার মুরগি কিনতে বাজার এসেছেন, তারা পিলে চমকে যাচ্ছে। বিপাকে পড়ছেন ফার্মের মুরগির ডিমের দাম নিয়েও। কারণ প্রতি ডজন ডিমের দাম বেড়েছে ১৫ টাকা। এখন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা ডজনে। প্রতি হালি ৫০ টাকা, যা আগে ৪৫ টাকা ছিল।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের মতো বাড়তি দেখা গেছে গরুর মাংসের দাম। বেশিরভাগ বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা দরে। যা গত সপ্তাহে ৭০০ থেকে ৭২০ টাকায় মিলতো। ক্রমাগত পণ্যের এ মূল্যবৃদ্ধি বাজারে অস্থিরতা তৈরি করছে। দোকানে দোকানে দাম নিয়ে চলছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের বাগবিতণ্ডা। বিশেষ করে ব্রয়লার মুরগি ও ফার্মের ডিমের দাম বাড়ায় নি¤œ ও নি¤œ মধ্যবিত্ত ক্রেতারা কষ্টে পড়ে গেছেন। বেশকিছু ক্রেতাকে দাম শুনে খালি হাতে ফিরে যেতে দেখা গেছে।

রামপুরা কাঁচাবাজারে এক ক্রেতা বলেন, দুদিন আগেও ব্রয়লার মুরগি ১৯৫ টাকায় কিনেছি। এখন বলছে ২২৫ টাকা! মাসখানেক আগে কিনতাম ১৫০ টাকা। এর মধ্যে কী হলো যে, দাম শুধু হু হু করে বাড়ছে।

এদিকে বিক্রেতারাও মুরগি ও ডিমের দাম দফায় দফায় বাড়ার কোনো সঠিক কারণ বলতে পারছেন না। মালিবাগ বাজারের এক মুরগি বিক্রেতা বলেন, সরবরাহ কম, তাই দাম বেশি শুধু এটুকুই জানি। আমরা বেশি দামে কিনেছি, তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। দাম এভাবে বাড়ুক, আমরা সেটা চাই না। কারণ দাম বাড়ায় বিক্রি কম হচ্ছে। এক মাংস বিক্রেতা বলেন, কম দামে গরু কিনতে পাওয়া যাচ্ছে না বলে আগের দামে মাংস বিক্রি করে পড়তা হচ্ছে না। সবখানে দাম বেড়েছে। সেখানে একজন ক্রেতা বলেন, রমজানের সরকার গরুর মাংসের দাম নির্ধারণ করে দেয়। তাই আগেই এরা দাম বাড়িয়ে নিচ্ছে।

অন্যদিকে বাজারে সবজির দামও কিন্তু খুব বেশি স্বস্তিদায়ক নয়। গ্রীষ্মের নতুন সবজি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। সরবরাহ কমে আসায় শীতের সবজির দামও বাড়ছে। পেঁপে ও মুলা ছাড়া প্রায় সব ধরনের সবজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকার ওপরে। আর গ্রীষ্মের নতুন পটোল, বরবটি, করলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকার ওপরে।

মাংসের বাজারের এই হাল দেখে ঢুকলাম মাছের বাজারে। অন্য মাছের দিকে না তাকিয়ে সোজা পাঙাশ বিক্রেতার কাছে গেলাম। দোকানি কেবল বিক্রির জন্য পাঙাশ সাজাচ্ছেন। এক গামলায় কিছু মরা পাঙাশ (আকারে ছোট)। আরেক গামলায় মাঝারি আকারের জীবিত পাঙাশ। দরদাম জানতে চাইলাম। দোকানি বললেন, ‘বড়টা (মাঝারি আকারে জীবিত পাঙাশ) ১৮০ টাকা। আর ছোটটা (ছোট আকারের মরা পাঙাশ) ১৬০ টাকা। পাঙাশের এত দাম?’ দোকানি মাছ সাজাতে সাজাতে বললেন, ‘সবকিছুর দাম বাড়তি। নিলে নেন নাইলে না নেন। কিচ্ছু করার নেই।’

ভাবলাম, তেলাপিয়ার একটু খোঁজ নেয়া যাক। সেখানে হয়তো সুখবর মিললেও মিলতে পারে। এক দোকানি মাঝারি আর ছোট আকারের তেলাপিয়া নিয়ে বসেছেন। ‘দাম কত?’ কিছুটা গম্ভীর স্বরে বললাম। দোকানি বললেন, ‘বড়ডা ২০০। আর ছোডোডা ১৮০। কোনোটা দিমু?’ বললাম, ‘কমটম কিছু হবে?’ দোকানি এবার গলার স্বর বদলে বললেন, ‘আটানা (আট আনা) কম চাইলও দেওন যাইব না।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০