নিজস্ব প্রতিবেদক: বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনাসহ মারকোসারভুক্ত চারটি দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষরের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে আগামী ডিসেম্বরে। বাংলাদেশ মারকোসার বাণিজ্যজোটভুক্ত ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে ও উরুগুয়ের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষরের জন্য প্রস্তাব দিয়েছে। দেশগুলো নীতিগতভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে এফটিএ করতে সম্মত।
তিনি বলেন, দক্ষিণ আমেরিকার বাণিজ্যিক জোট মারকোসারভুক্ত দেশসমূহের শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ডিসেম্বরে, এ সম্মেলনে বাংলাদেশের এফটিএ স্বাক্ষরের প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে। সদস্যভুক্ত দেশগুলো একমত হলে এফটিএ স্বাক্ষর করা সম্ভব হবে।
গতকাল সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে মারকোসারভুক্ত দেশগুলো সফর শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মারকোসারভুক্ত চার দেশে ৩০ কোটি ক্রেতা রয়েছে এবং চার ট্রিলিয়ন ডলার জিডিপির এ অঞ্চলে বাংলাদেশি পণ্য রফতানির বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু সেখানে রফতানির পরিমাণ খুবই সামান্য। বর্তমানে সেখানে তৈরি পোশাক রফতানি করতে ৩৫ শতাংশ আমদানি শুল্কসহ অন্যান্য শুল্ক মিলে মোট শুল্কের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৬০ শতাংশ। এ অঞ্চলে বাংলাদেশের প্রধান রফতানি পণ্য তৈরি পোশাকের প্রচুর চাহিদা রয়েছে, তবে উচ্চ শুল্কহারের কারণে প্রত্যাশিত রফতানি করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, তারাও বাংলাদেশে গরুর মাংস রফতানির প্রস্তাব দিয়েছে এবং তুলা রফতানির জন্য ওয়ার হাউজ নির্মাণ করতে চেয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) মাধ্যমে উল্লিখিত শুল্কহার হ্রাস করলে এ অঞ্চলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ টেক্সটাইল, ওষুধ, তামাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, টেবিলওয়্যার প্রভৃতি পণ্য রফতানি বৃদ্ধি পাবে। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এ সফরে চারটি দেশের সংশ্লিষ্টমন্ত্রী ও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণ বিষয়ে ১৭টি আলোচনা সভা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে দেশের তৈরি পোশাকের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ফলে তৈরি পোশাকের ওপর তাদের আগ্রহ বেড়েছে। বিজিএমইএ ও ব্রাজিলের ব্যবসা সংগঠন সাও পাওলো চেম্বার অব কমার্সের মধ্যে একটি সহযোগিতা স্মারক সই হয়েছে। বিজিএমই’র উদ্যোগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় আগামী নভেম্বরে ব্রাজিলে একটি সিঙ্গেল কান্ট্রি আরএমজি এক্সিবিশন অ্যান্ড ফ্যাশন শো-এর আয়োজন করা হবে।
টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশের পাট ও পাটজাত পণ্য আমদানির ওপর ব্রাজিল ১৯৯২ সালে এন্টি ডাম্পিং ডিউটি আরোপ করে। বাংলাদেশের অনুরোধে তা প্রত্যাহার করার আশ্বস্ত করা হয়েছে। ব্রাজিলের বাণিজ্যিক রাজধানী সাও পাওলোতে একটি কনসাল জেনারেল অফিস স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মফিজুল ইসলাম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রফতানি) তপন কান্তি ঘোষ, অতিরিক্ত সচিব (এফটিএ) মো. শফিকুল ইসলাম, ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময় দত্ত, বিজিএমইএ’র প্রেসিডেন্ট ড. রুবানা হক উপস্থিত ছিলেন।