এইচ এম সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: রাস্তাটি জনগণের চলাচলের জন্য উম্মুক্ত থাকবে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) অধিকৃত ১নং খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত থাকা জায়গা নিয়ে ত্রিমুখী দখলস্বত্বের দাবিতে করা মামলার রায়ে একথা উল্লেখ করেন আদালত। এ নিয়ে আদালতে আরেকটি মামলা চলমান রয়েছে।
এর পরও সওজের মালিকানাধীন জায়গা জেলা পরিষদ লিজ দেয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে, যা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ চিত্র ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা সদরের।
জানা গেছে, সরাইল হাসপাতাল মোড়ে সরাইল মৌজার ৭২৮৭নং দাগের জায়গাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধিগ্রহণকৃত জনসাধারণের চলাচলের রাস্তা। এটি বিএস খতিয়ানে জেলা প্রশাসনের নামে ১নং খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু জেলা পরিষদ সদস্য পায়েল মৃধার নেতৃত্বে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ও ভূমিদস্যু পারস্পরিক যোগসাজশে রাস্তাটি দখল করে রাতের আঁধারে দোকানপাট নির্মাণের জন্য পাশের সরাইল গরুর বাজারে কয়েকটি একচালা ঘর তৈরি করে রাখে। বিষয়টি জানাজানি হলে হাসপাতাল মোড়ের অস্থায়ী ব্যবসায়ী, পায়েল মৃধার লোকজন ও পার্শ্ববর্তী ব্যক্তিমালিকানাধীন রইছ মোল্লা মার্কেটের ব্যবসায়ীদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দেয়।
স্থানীয় জনগণের বাধার মুখে ও মালিকানা দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ মাপজোখ বা সীমানা পিলার বসাতে পারেনি। এ বিষয়ে মামলা হলে আদালত ওই দাগের ব্যাপারে যুগান্তকারী এক রায়ে বলেন, ‘রাস্তাটি জনগণের চলাচলের জন্য উš§ুক্ত থাকবে।’
পরবর্তী সময়ে জেলা পরিষদ বাদী হয়ে ডিসি ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে বিবাদী করে আদালতে আরেকটি মামলা (নং৭৯০/১৯) করে।
এদিকে সওজ কর্তৃপক্ষ জায়গাটি তাদের অধিগ্রহণকৃত বলেই অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদ করে। এমন পরিস্থিতিতে সরাইল মৌজার ৭২৮৭ দাগের ভূমির বিষয়ে জনমনে ‘ভূমি তুমি কার’ এমন প্রশ্ন উদিত হচ্ছে।
উপরন্তু গত ২০ জুন জেলা পরিষদ এই ৭২৮৭ দাগের জায়গা প্লট আকারে লিজ দেয়ার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। আদালতের রায় অমান্য করে এবং মালিক না হয়েও জেলা পরিষদ এই অবৈধ লিজ দিতে চায় কীভাবেÑজনমনে এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। পাশাপাশি এই অবৈধ লিজ দেয়ার ঘটনা ঘিরে সরাইলের শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট তথা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার আশঙ্কা করছে সচেতন মহল।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ শফিকুল আলম এমএসসির মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী পঙ্কজ ভৌমিক বলেন, ‘অন্য সংস্থার ভূমি লিজ না দেয়ার জন্য আহবান জানিয়েছি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দখল ও কাগজপত্র অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্যও অনুরোধ জানানো হয়েছে।’ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এটি আমাদের জায়গা। আমাদের জায়গা আমরা দখলে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।