বিশ্বজুড়ে সাংস্কৃতিক সম্পর্ক ও শিক্ষার সুযোগ নিয়ে কাজ করে যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক সংস্থা ব্রিটিশ কাউন্সিল। বিশ্বের একশ’টির বেশি দেশে সংস্থাটি শিল্প, সংস্কৃতি, ইংরেজি ভাষা, শিক্ষা ও সমাজ গঠনে কাজ করে। অনলাইন, ব্রডকাস্ট ও বিভিন্ন প্রকাশনার মাধ্যমে গত বছর তারা সরাসরি ৬৫ মিলিয়ন এবং সর্বোপরি ৭৩১ মিলিয়ন মানুষের কাছে পৌঁছেছে। ১৯৩৪ সালে প্রতিষ্ঠিত ব্রিটিশ কাউন্সিল রয়্যাল চার্টার ও ইউকে পাবলিক বডি দ্বারা পরিচালিত যুক্তরাজ্যভিত্তিক দাতব্য সংস্থা।
২০১০ সাল থেকে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে ব্রিটিশ কাউন্সিল কালচারাল সেন্টারের বই পড়া প্রতিযোগিতা কর্মসূচিটি। বর্তমানে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে এর কার্যক্রম চলছে। বিভাগীয় এই তিনটি শহরে কর্মসূচিটির একশ’টির বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশীদারিত্ব রয়েছে। বই পড়া কর্মসূচির অংশ হিসেবে ব্রিটিশ কাউন্সিলের দুটি অংশীদার বিশ্ববিদ্যালয়ে পুরস্কার বিতরণীর আয়োজন করেছে।
১৮ এপ্রিল পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয় বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজিতে (বিইউএফটি)। বিশ্ববিদ্যালয়টির ফল সেমিস্টারের প্রায় ৪৯০ শিক্ষার্থী বই পড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। সেদিন এ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী মো. জাহিদ হাসানকে ট্যাব, ক্রেস্ট ও সনদ দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। প্রতিযোগিতায় অন্যান্য অংশগ্রহণকারীদের বই ও সনদ দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ কাউন্সিলের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সংস্থাটির ডিরেক্টর অব অপারেশনস জিম পোলার্ড। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিইউএফটি’র উপাচার্য অধ্যাপক
ড. নিজামুদ্দিন আহমেদ। বই পড়ার অভ্যাস ও কীভাবে এ অভ্যাস পাঠকের কল্পনাকে আকৃতি দিতে পারে এবং এর পাশাপাশি ভাষার দক্ষতা উন্নয়নে পাঠাভাস্যের ভূমিকা নিয়েও বক্তব্য রাখেন জিম পোলার্ড।
বই পড়া প্রতিযোগিতার আরেকটি পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) ক্যাম্পাসে। ইউল্যাবের সামার ও ফল সেমিস্টারের তিনশ’র বেশি শিক্ষার্থী প্রতিযোগিতার মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়। অংশগ্রহণকারীদের ব্রিটিশ কাউন্সিল লাইব্রেরি মেম্বারশিপ, ট্যাব, ক্রেস্ট, বই ও সনদ পুরস্কার দেওয়া হয়। সামার সেমিস্টারে বিজয়ী হন তানজিম হোসেন। তাকে পুরস্কার হিসেবে ট্যাব, ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া হয়। ফল সেমিস্টারে বিজয়ী হন সালমান উল ইসলাম। তাকে পুরস্কার হিসেবে ব্রিটিশ কাউন্সিল লাইব্রেরির মেম্বারশিপ, ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া হয়।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্রিটিশ কাউন্সিলের লাইব্রেরিজ আনলিমিটেডের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর ক্রিস্টি ক্রফোর্ড। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইউল্যাবের উপাচার্য অধ্যাপক এইচ এম জহিরুল হক। পুরস্কার বিতরণীর আগে ক্রিস্টি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যে তিনি যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের বোঝাপড়া এবং সম্পর্কের শক্তিশালী ভিত্তিতে সাহিত্যের তাৎপর্য বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আমাদের কর্মসূচির একটি মূলভিত্তি হচ্ছে সাহিত্য। আমাদের বিশ্বাস, সাহিত্যের মাধ্যমে আমরা একটি স্থিতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনে সহায়তা করতে পারব, যে সমাজে কথা বলা, সংলাপ ও সমালোচনামূলক চিন্তার স্বাধীনতাকে উৎসাহিত করা হবে।
এ কর্মসূচি ‘বেস্ট অব ব্রিটিশ’-এ সবার অংশ নেওয়ার সুযোগ বাড়াবে। ইংরেজিতে পড়ার অভ্যাসের উন্নয়ন ঘটাবে, পাশাপাশি তরুণসহ সব শিক্ষার্থীর ভাষাগত দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করবে।