ব্রিটেনে নিষিদ্ধ হচ্ছে এসিড বিক্রি

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ব্রিটেনে ১৮ বছরের বয়সের নিচে কোনো নাগরিকের কাছে এসিড বিক্রি নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। শিগগিরই এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির বিভিন্ন শহরে এসিড হামলার প্রেক্ষাপটে এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। খবর বিবিসি।

ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আম্বার রুডের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, সালফিউরিক এসিডের মতো মারাত্মক এসিডগুলো যাতে যত্রতত্র বিক্রি না হয়, সেদিকে নজর রাখা হবে। কারণ এ এসিড দিয়ে সহিংস হামলার ঘটনাগুলো ঘটানো হচ্ছে।

গত জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে লন্ডনে বেশ কয়েকটি এসিড হামলার ঘটনা ঘটে। এছাড়া ২০১০ সালে থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মোট এক হাজার ৮০০টি এসিড সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেছে। আর ২০১৬ সালের শেষের দিক থেকে ২০১৭ সালের জুলাই পর্যন্ত এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে ২০৮টি। এর মধ্যে ৩৮ ব্যক্তি আহত হন। আর এসিড নিক্ষেপ করে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে ১১১টি। এছাড়া এ সময়ে দুই নারীকে ধর্ষণের পর এসিডে ঝলসে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। কেবল ২০১৭ সালের মার্চ পর্যন্ত ৪৯টি এসিড সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেছে লন্ডনে।

এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১০ সালে শহরটিতে এসিড সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটে ২৯৩টি। এর পরের বছর ২০১১ সালে কিছুটা কমলেও ২৫৯টি ঘটনা ঘটে।

২০১২ সালে এ ধরনের ঘটনা অনেক কমে আসে। ওই বছর ১৬৯টি এসিড সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটে। তবে ২০১৩ সালে এ অপরাধ প্রবণতা আবার বাড়তে শুরু করে। ওই বছর ২১০টি এসিড সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটে। আর ২১০৪ সালে ১৬৬টি এসিড হামলার ঘটনা ঘটে ব্রিটেনের রাজধানীতে।

২০১৫ সালে শহরজুড়ে মোট ২৬১টি এসিড হামলার খবর পায় পুলিশ। তবে ২০১৬ সালে এই সংখ্যা এক লাফে দ্বিগুণ হয়ে যায়। ওই বছর সর্বোচ্চ ৪৫৮টি হামলার ঘটনা ঘটে।

দিন দিন এসিড হামলার ঘটনা বাড়ার বিষয়ে মিডলসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিষয়ক গবেষক ড. সিমন হার্ডিং বলেন, এটা খুব ভয়াবহ বিষয়, সন্ত্রাসীরা এখন চাকু বা ছুরির বদলে এসিডকে তাদের অস্ত্র হিসেবে বেছে নিয়েছে।

এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ব্রিটেনে চাকু দিয়ে হামলার ঘটনা ঘটালে তা ‘হত্যা চেষ্টা’র অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। তবে এসিড নিক্ষেপের কারণে সাজা হয় তার চেয়ে কম। এছাড়া লন্ডনে চাইলেই সালফিউরিকের মতো এসিডগুলো সহজেই কেনা যায়। চাইলে অনলাইনেও ক্রয়াদেশ দিয়ে সন্ত্রাসীরা এটি পেতে পারে।

সিমনের মতে, সহজলভ্যতা ও লঘু সাজার কারণেই সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরনের ঘটনা বেড়েছে।