ব্রেক্সিটের পর টিপিপিতে যোগ দিতে চায় ব্রিটেন

 

শেয়ার বিজ ডেস্ক : ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে যাওয়া বা ব্রেক্সিটের পর ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপে (টিটিপি) যোগ দিতে চায় ব্রিটেন। ব্রেক্সিট-পরবর্তী সময়ে রফতানি সচল রাখতে এ জোটের সঙ্গে দেশটি অনানুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করেছে বলে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ১২ সদস্যের এ জোট থেকে গত বছর যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে যায়। এর মধ্যে ব্রিটেন জোটে যোগ দেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় এলো।

যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে গেলেও অস্ট্রেলিয়াসহ জোটের অন্য সদস্যরা টিপিপির কার্যক্রম এগিয়ে নিতে উদ্যোগ নেয়। এ জন্য নতুন নামও প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্রিটেনের বাণিজ্যমন্ত্রী লিয়াম ফক্স জানিয়েছেন, ব্রিটেন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করতে চায়। টিপিপির সদস্যপদ পেতে ব্রিটেন খুব শিগগিরই আনুষ্ঠানিক আবেদন জানাতে পারে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘টিপিপির সদস্য হতে পারব কি না, সে বিষয়ে এখনও আমরা নিশ্চিত নই। কারণ কেবল অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চলছে।’ আমরা আমাদের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অংশীদারদের সঙ্গে মুক্ত আলোচনা চালাতে চাই।

নিয়ম অনুযায়ী, ২০১৯ সালের মার্চের আগে ব্রিটেন ইইউ ত্যাগ করতে পারবে না এবং তার আগে নতুন কোনো বাণিজ্য চুক্তিতে যেতে পারবে না। তবে টিপিপির এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংগঠনটি ব্রেক্সিট চুক্তির আগেই ব্রিটেনের সদস্য নিয়ে আলোচনার পথ খুঁজছে।

প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বাইরে সংগঠনটির সদস্য শুধু জাপান, কানাডা ও মেক্সিকো। তবে টিপিপিতে যোগ দিতে ভৌগোলিক দিক থেকে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন ব্রিটেনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কনিষ্ঠ মন্ত্রী গ্রেগ হ্যান্ডস।

যুক্তরাষ্ট্র সরে গেলেও ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) বাণিজ্যচুক্তি সচল রাখতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বাকি সদস্য দেশগুলো। মুক্তবাণিজ্য ও আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সমন্বয় বিষয়ে এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশনের (এপেক) মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে সম্প্রতি এ বিষয়ে একমত হন সদস্য দেশের প্রতিনিধিরা।

যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে সরে যাওয়ার পরই অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও নিউজিল্যান্ড একে এগিয়ে নিতে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিল। অস্ট্রেলিয়া ‘টিপিপি ১২ বিয়োগ এক’ (টিপিপি ১২ মাইনাস ওয়ান) নামে এ চুক্তির সম্ভাব্য একটি নামও উপস্থাপন করেছিল।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রসহ এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১২ দেশ বহুল বিতর্কিত টিপিপি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার এশিয়ানীতির আওতায় এ চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী অন্য দেশগুলো হলোÑঅস্ট্রেলিয়া, জাপান, ব্রুনেই, কানাডা, চিলি, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, নিউজিল্যান্ড, পেরু, সিঙ্গাপুর ও ভিয়েতনাম।

ডেইরি পণ্য ও ওষুধশিল্প খাতের সুরক্ষা নিয়ে ১২ দেশের মতপার্থক্য থাকলেও ২০১৬ সালে চূড়ান্ত চুক্তির মাধ্যমে অবশেষে তা দূর হয়। এ চুক্তির ফলে দেশগুলো দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিনা শুল্ক সুবিধা পাবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ১২ দেশ বর্তমান বৈশ্বিক বাণিজ্যের ৪০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

তবে জানুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষরের মাধ্যমে নিজের দেশকে টিপিপি থেকে প্রত্যাহার করে নেন। এ চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার বিষয়ে ট্রাম্পের মত, এ সিদ্ধান্ত মার্কিন শ্রমিকস্বার্থ বিবেচনা করে নেওয়া হয়েছে।

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০