Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 5:22 pm

ব্রেন টিউমারের যত লক্ষণ

ব্রেন টিউমার প্রধানত দুই ধরনের। বেনাইন টিউমার, যা ক্যানসার নয় এবং ম্যালিগন্যান্ট টিউমার বা ক্যানসার-জাতীয় টিউমার। ম্যালিগন্যান্ট দুই ধরনের। ক. প্রাথমিক ম্যালিগন্যান্ট, যা মস্তিষ্কের মধ্য থেকে উৎপত্তি হয়ে থাকে। খ. মেটাস্টেটিক, যা শরীরের অন্য জায়গায় উৎপন্ন হয়ে মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ে।

কারণ: মানবশরীরে টিউমার সাপ্রেসর জিন টিউমার হওয়ার প্রক্রিয়াকে প্রতিরোধ করে। কোনো কারণে এগুলো যথাযথ কাজ না করলে ব্রেন টিউমার হয়ে থাকে।

লক্ষণ : ব্রেন টিউমারের প্রাথমিক লক্ষণ মাথাব্যথা ও চোখে ঝাপসা দেখা। তবে মাথাব্যথা মানেই ব্রেন টিউমার নয়। সাধারণত মাথাব্যথার ১ শতাংশেরও কম কারণ হলো ব্রেন টিউমার। ব্রেন টিউমারের জন্য যে মাথাব্যথা হয়, তা সাধারণত খুব ভোরে শুরু হয়। সঙ্গে খিঁচুনি হতে পারে। খিঁচুনি সাধারণত হাতে বা পায়ে বা অন্য কোনো স্থান থেকে শুরু হয়ে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এই মাথাব্যথা কিছুতেই যেতে চায় না। মস্তিষ্কের ভেতর পিটুইটারি গ্ল্যান্ডে টিউমার হলে রোগীর দৃষ্টিশক্তি কমে যায়। রোগী সামনের অংশটুকু ভালো দেখতে পেলেও দুপাশে দেখতে পান না এবং একপর্যায়ে অন্ধ হয়ে যান। ব্রেনের সামনের অংশে বা ফ্রন্টাল লোবে টিউমার হলে রোগীর স্মৃতিশক্তি কমে যায়। তিনি অস্বাভাবিক আচরণ করেন। দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে যায়। মটর এরিয়ায় টিউমার হলে যেদিকে টিউমার তার উল্টো দিকে প্যারালাইসিস হয়ে থাকে। মস্তিষ্কের খুলির নিচের প্রকোষ্ঠে টিউমার হলে রোগী হাঁটতে গেলে পড়ে যান বা ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। কানে ঠিকমতো শোনেন না। কথা স্পষ্ট করে বলতে পারেন না। টিউমার বেশি বড় হয়ে গেলে রোগীর হঠাৎ মৃত্যুও হতে পারে।

প্রতিরোধ: ব্রেন টিউমার প্রতিরোধ করার সুনির্দিষ্ট কোনো উপায় নেই। তবে ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে। তেজস্ক্রিয় বিকিরণ যথাসম্ভব পরিহার করতে হবে। যেমন মুঠোফোনের ব্যবহার কমানো। তেজস্ক্রিয় স্থান বা উৎস থেকে দূরে থাকা। খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিলে এবং নিয়মিত প্রচুর ফলমূল ও শাকসবজি খেলে ক্যানসার থেকে দূরে থাকা যায়।

চিকিৎসা: প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ জীবনযাপন করা সম্ভব।

অধ্যাপক ডা. হারাধন দেব নাথ নিউরোসার্জারি বিভাগ, বিএসএমএমইউ