নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্র্যাকের চেয়ারপারসন পদ থেকে অবসর নিয়েছেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ। তবে তিনি ‘ইমেরিটাস চেয়ারপারসন’ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে থাকছেন। মঙ্গলবার রাতে ব্র্যাকের ওয়েবসাইটে এসব তথ্য জানানো হয়। এদিকে ফজলে হাসান আবেদের অবসরের পর ব্র্যাকের চেয়ারপারসনের পদে আসছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান। ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন জাতিসংঘের সাবেক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল আমিরা হক।
ব্র্যাক আরও জানায়, ৩৬ বছর বয়সে ব্র্যাক প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন স্যার ফজলে হাসান। ৬৫ বছর বয়সে নির্বাহী পরিচালকের পদ থেকে অবসর নেওয়ার পর তাকে চেয়ারপারসন নির্বাচিত করে ব্র্যাকের তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদ। পরবর্তীকালে তিনি ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের তত্ত্বাবধায়ক পর্ষদেরও চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন। এবার তিনি ব্র্যাক ও ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনাল দুটোরই চেয়ারপারসন পদ থেকে বিদায় নিলেন।
মঙ্গলবার বিদায় নেওয়ার সময় স্যার ফজলে হাসান আবেদ বলেন, বিগত কয়েক বছর আমি ব্র্যাকে আমার পরবর্তী নেতৃত্ব নিয়ে অনেক ভেবেছি এবং সেইমতো প্রস্তুতি নিয়েছি। এখন আমার বয়স ৮৩ বছর। ব্র্যাককে সামনে এগিয়ে নেওয়ার কাজে যথাযোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচনের বিষয়টি ছিল আমার সিদ্ধান্তের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। গর্ব ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে আমি এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি, যাতে আমার অবর্তমানেও ব্র্যাক তার শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ব্র্যাক কখনোই কোনো ব্যক্তিকেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠান ছিল না। আমি এর প্রতিষ্ঠাতা ঠিকই, কিন্তু ব্র্যাকের সুদৃঢ় ভিত্তি ও সুনাম তৈরি করেছেন এর নিবেদিত কর্মীরা তাদের প্রত্যয় ও কর্মনিষ্ঠা দ্বারা। এত বছর ধরে বাংলাদেশ সরকার, সমমনা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান, দাতা সংস্থা এবং সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত ও কৃতজ্ঞ। আগামী ১০ বছরে আমরা আমাদের কাজের প্রভাব পৃথিবীর আরও বেশি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাই। আমি স্বপ্ন দেখি, ব্র্যাক আগামীতে আরও বড় হয়ে উঠবে, নতুন উদ্ভাবন চালিয়ে যাবে, নতুন দিনের প্রয়োজনে এগিয়ে আসবে নতুন সমাধান নিয়ে।
অপরদিকে ব্র্যাক বাংলাদেশ ও ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারপারসন পদ থেকে অবসর নিলেও তিনি ‘চেয়ার ইমেরিটাস’ পদে নতুন ভূমিকায় থাকবেন। নতুন নেতৃত্বের কাছে সংস্থাটির পরিচালনার দায়িত্বভার অর্পণের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। চেয়ার ইমেরিটাস হিসেবে তিনি ব্র্যাকের কৌশলগত পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত থাকবেন। আগামী দিনগুলোয় ব্র্যাকের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং বিশ্বব্যাপী এর প্রভাব ও অবস্থান কীভাবে আরও শক্তিশালী করা যায়, তা নিয়ে কাজ করবেন তিনি।