শেয়ার বিজ ডেস্ক : আন্তর্জাতিক ঋণমান যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান মুডি’স ইনভেস্টর সার্ভিসের পর্যালোচনা বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের ছয়টি ব্যাংকের রেটিং নেতিবাচক করেছে। গত ডিসেম্বর ৭টি ব্যাংকের দীর্ঘমেয়াদি ঋণমান বা রেটিং পুনর্মূল্যায়ন করার ঘোষণা দিয়েছিল সংস্থাটি। এর মধ্যে একটি ব্যাংকের রেটিং স্থিতিশীল রাখা হয়েছে। গতকাল এক বিবৃতিতে মুডি’স ব্যাংকগুলোর রেটিং বা ঋণমান কমানোর কথা জানায়। এর আগের দিন মঙ্গলবার মুডিস বাংলাদেশের ঋণমান এক ধাপ কমিয়ে বিএ৩ থেকে বি১-এ নামিয়েছে।
সাতটি ব্যাংকের মধ্যে ছয়টির ‘দীর্ঘমেয়াদি ডিপোজিট’ ও ‘ইস্যুয়ার রেটিং’ কমানো হয়েছে। রেটিং কমানো ব্যাংকগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, দি সিটি ব্যাংক লিমিটেড, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, প্রিমিয়ার ব্যাংক। ব্র্যাক ব্যাংকের রেটিং বি-১তে নামানো হয়েছে। আর সিটি ব্যাংক ও ডাচ্-বাংলা বি-২তে এবং প্রিমিয়ার ব্র্যাংকের রেটিং বি-৩তে নামানো হয়েছে।
গত ১২ ডিসেম্বর মুডি’স জানিয়েছিল, দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের সার্বভৌম রেটিং ‘বিএ৩’ থেকে পুনর্মূল্যায়ন করতে এসব ব্যাংকের রেটিং পুনর্মূল্যায়ন করা হচ্ছে। এর ব্যাখ্যায় সংস্থাটি জানিয়েছিল, বাংলাদেশের সার্বভৌম রেটিংয়ে ব্যাংক খাতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। ব্যাংকের ঋণ দেয়ার সক্ষমতা সরকারের সক্ষমতায়ও প্রভাব ফেলে।
সংস্থাটি বলেছিল, পুনর্মূল্যায়নের সময় বেশকিছু বিষয় তারা বিবেচনায় নেবে। বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভও এর মধ্যে রয়েছে। পরিস্থিতির উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপগুলোও এক্ষেত্রে বিবেচনায় নেয়া হবে।
মুডি’স শুধু বাংলাদেশের এ সাত ব্যাংকের রেটিং করেছে। কারণ ব্যাংকগুলো এজন্য যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক রেটিং সংস্থাটির সঙ্গে চুক্তি করেছিল। সার্বিক আর্থিক অবস্থার ওপর রেটিংস নিতে ব্যাংকগুলো আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থাগুলোর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়। ওই রেটিং বা ঋণমান প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা প্রকাশ এবং আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা নির্ধারণে সহায়ক হয়। এই সাত ব্যাংকও মুডি’সের সঙ্গে চুক্তিতে একটি নির্দিষ্ট ফি দিয়ে রেটিং নিয়ে থাকে। সেই চুক্তির আলোকেই ব্যাংকগুলোর রেটিংস নিয়মিত পর্যালোচনা করছে মুডি’স।
এদিকে আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার আগে বাংলাদেশের ঋণমান সূচক কমানোর ব্যাখ্যায় মুডি’স বেশ কিছু কারণ তুলে ধরে। এর মধ্যে চলমান সংকটের মধ্যে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও ডলারের সংকট অব্যাহত থাকা, বিদেশি মুদ্রার মজুত কমে যাওয়ার বৈদেশিক লেনদেন চাপ তৈরি হওয়া এবং আমদানি কার্যক্রম ব্যাহত এবং জ্বালানি সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেয়ার বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়।
মুডি’স বলছে, আগের মতোই একাধিক বিনিময় হার এবং বেঁধে দেয়া সুদের হারের সীমা বহাল থাকায় তা সাধারণ কার্যক্রমকে বিঘিœত করছে। পাশাপাশি রাজস্ব আহরণে পিছিয়ে থাকার কথা বলেছে। আর রিজার্ভের পরিমাণ ৩০ বিলিয়ন ডলারের ওপর যেতে আরও দুই থেকে তিন বছর লাগবে।