বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির সাবেক দুই এমডিকে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে দুর্নীতির মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) সাবেক দুই ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কামরুজ্জামান ও মাহবুবুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সকাল ১০টা থেকে দুদকের উপ-পরিচালক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সামছুল আলম তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।
এর আগে গত দুই সপ্তাহে বিসিএমসিএলের সাবেক চার এমডি এসএম নুরুল আওরঙ্গজেব, প্রকৌশলী খুরশীদুল হাসান, আমিনুজ্জামান ও মিজানুর রহমান এবং মহাব্যবস্থাপক (সারফেস অপারেশন) সাইফুল ইসলাম সরকারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আর গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) উপমহাব্যবস্থাপক (মেনটেনেন্স অ্যান্ড কন্টাক্ট ম্যানেজমেন্ট) মো. নাজমুল হক, ব্যবস্থাপক (কোল হ্যান্ডেলিং ম্যানেজমেন্ট) মো. শোয়েবুর রহমান, ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) মো. সাইদ মাসুদ, উপব্যবস্থাপক (মেনটেন্যান্স অ্যান্ড অপারেশন) মো. মাহাবুব হোসেন, সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) মো. মনিরুজ্জামান, সহকারী ব্যবস্থাপক (কোল হ্যান্ডেলিং ম্যানেজমেন্ট) মো. মাহাবুব রশিদ ও ব্যবস্থাপক (স্টোর) মো. দিদারুল কবিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এদিকে ১৩ আগস্ট পেট্রোবাংলার এসব কর্মকর্তাকে তলব করে চিঠি দেওয়া হয়। ওই সাতজন ছাড়াও পেট্রোবাংলার আরও ২৫ জনকে তলব করে সংস্থাটি। তাদের ঈদের পরে বিভিন্ন সময়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
দুদকের অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০০৫ সালে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে বাণিজ্যিকভাবে কয়লা উত্তোলন শুরু করা হয়। দীর্ঘ ১৩ বছরে কয়লা উত্তোলন হয়েছে এক কোটি ২০ লাখ টন। বর্তমানে কোল ইয়ার্ডে কয়লার মজুত থাকার কথা এক লাখ ৩০ হাজার টন। কিন্তু বাস্তবে কয়লার মজুত পাওয়া গেছে ১৪ হাজার টনের মতো। প্রায় এক লাখ ১৬ হাজার টন মতো কয়লার কোনো হদিস নেই। যার বাজার মূল্য প্রায় ২০০ কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে কাগজে-কলমে বেশি কয়লার মজুত দেখিয়ে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে খতিয়ে দেখতে উপ-পরিচালক শামসুল আলমের নেতৃত্বে ২৩ জুলাই তিন সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে দুদক। এরপর কয়লা লোপাটের ঘটনায় গত ২৭ জুলাই রাত ১২টায় বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আনিছুর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় ১৯ জন আসামির বিরুদ্ধে খনির এক লাখ ৪৫ হাজার টন কয়লা গায়েবের অভিযোগ আনা হয়। যার তদন্তের ধারাবাহিকতায় মামলার ১৯ আসামিসহ পেট্রোবাংলার ২১ জন কর্মকর্তার দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) চিঠি পাঠায় দুদক।