বড়পুকুরিয়া খনি এলাকায় ক্ষতিপূরণের দাবীতে গ্রামবাসীদের মানববন্ধন

বড়পুকুরিয়া খনি এলাকায় ক্ষতিপূরণের দাবীতে গ্রামবাসীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ

২৮ আগষ্টের মধ্যে ক্ষতিপুরণ প্রদানের আল্টিমেটাম।
অন্যথায় কঠোর আন্দোলনেরর ঘোষনা।

প্রতিনিধি,ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) : দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া খনি এলাকার বৈধ্যনাথপুর ও বাঁশপুকুর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসীরা ক্ষতিপুরনসহ চার দফা দাবীতে বিক্ষভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসীদের সংগঠন জীবন ও সম্পদ রক্ষা কমিটি।

আগামী ২৮ আগষ্টের মধ্যে ক্ষতিপূরন প্রদান করার আল্টিমেটাম দিয়ে কঠোর আন্দোলনের ঘোষনা দিয়েছেন গ্রামবাসীরা।

মানব বন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল শেষে এই আল্টিমেটাম ও আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষনা করেন ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসীদের সংগঠন জীবন ও সম্পদ রক্ষা কমিটির প্রধান উপদেষ্ঠা সাবেক সভাপতি ইব্রাহিম খলিল।

বৃৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জীবন ও সম্পদ রক্ষা কমিটির উদ্যোগে বড়পুকুরিয়া বাজার সড়কে এই বিক্ষোভ মিছিল ও এক ঘন্টাব্যাপী মানব বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানব বন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিলটি খনি এলাকা প্রদক্ষিন করে।

মানব বন্ধনে জীবন ও সম্পদ রক্ষা কমিটির প্রধান উপদেষ্ঠা সাবেক সভাপতি ইব্রাহিম খলিলের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জীবন ও সম্পদ রক্ষা কমিটির আহবায়ক রফিকুল ইসলাম, উপদেষ্ঠা কমিটির সদস্য ও সাবেক সদস্য সচিব আলহাজ বেলাল উদ্দিন, আলহাজ্ব রুহুল আমিন মন্ডল, লিয়াকত আলী মন্ডল প্রমুখ।

এসময় বক্তারা চারদফা দাবিসমূহ উল্লেখ করে বলেন,খনি এলাকায় গত ৩ বছর পূর্বে বাঁশপুকুর ও বৈদ্যনাথপুর গ্রামের ২০০ বাড়ী ক্ষতিগ্রস্থ হলেও, এখন পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেয়া হচ্ছে না। অথচ ওই এলাকার ঘরবাড়ীতে ফাটল ধরে এখন বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে, আবাদি জমি দেবে গিয়ে অনাবাদিতে পরিনত হয়েছে। গ্রামবাসীরা অভিযোগ করে বলেন খনি কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণ প্রদানের নামে তালবাহনা করে সময় অতিবাহিত করছে। গ্রামবাসীরা হুশিয়ারী দিয়ে বলেন বাঁশপুকুর ও বৈদ্যনাথপুর গ্রামের ক্ষতিপূরণ না দেয়া পর্যন্ত কয়লা উত্তোলন বন্ধ করতে হবে, ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার ফাটল ধরা ঘর-বাড়ী ভেঙ্গে কোন প্রাণহানী হলে এর দায়ভার খনি কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে এবং ক্ষতিগ্রস্থদের নামে ষড়যন্ত্র হয়রানি, অন্যায়, অবিচার, জুলুম, নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। মানব বন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁশপুকুর ও বৈদ্যনাথপুর দুই গ্রামের নারী-পুরুষ অংশ নেন।

উল্লেখ্য বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির কারনে খনি এলাকায় ভূমি অবনমন হয়ে বিশাল জলাশয়ের পরিনত হয় এবং ঘর-বাড়ীতে ফাটল ধরে। একারনে গ্রামবাসীরা ক্ষতিপূরনের দাবীতে আন্দোলন শুরু করলে গত ২০১১ সালে প্রথম ৫৪৬ একর জমি অধিগ্রহণ করে ক্ষতিপুরন প্রদান করেন খনিকর্তৃপক্ষ। এরপর আবারো নতুন নতুন এলাকা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় পর্যায়ক্রমে ৩০ একর জমি অধিগ্রহণ করে খনি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গত ৩বছর পূর্বে ১৫ দশমিক ৫৮ একর জমি নতুন করে ক্ষতিগ্রস্থ হলেও এখন পর্যন্ত ক্ষতিপুরন প্রদান করেনি খনি কর্তৃপক্ষ। একারনে ক্ষতিপুরনের দাবীতে নতুন করে আন্দোলনে নেমেছে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসীরা।

এবিষয়ে জানতে চাইলে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যাবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম সরকার বলেন ক্ষতিগ্রস্থ ১৫ দশমিক ৫৮ একর জমির ক্ষতিপুরণ প্যাকেজের ১১৩.দশমিক ৯২ কোটি টাকার মধ্যে ৫০ কোটি টাকা প্রদানের লক্ষে জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ে জমা দেয়া হয়েছে, কিন্তু সম্পুর্ন টাকা জমা না দেয়ার কারনে সেই টাকা বিতরণ করা সম্ভাব হয়নি, আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে বাকি টাকা জমা দেয়া হবে, এরপর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসীদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে বলে তিনি জানান।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০