সারা ইসলাম সুমা: ইফতার বাজার হিসেবে পুরান ঢাকার চকবাজারের ইতিহাস ও ঐতিহ্য দীর্ঘদিনের। ঐতিহ্য বজায় রেখে প্রতিবছর দোকানিরা করছেন নতুন ইফতার আয়োজন। ঐতিহ্যবাহী নানা ইফতারি নিয়ে এ বছরও জমে উঠেছে চকবাজার। প্রতিদিন দুপুর থেকেই চকবাজারসহ পুরান ঢাকার অলিগলির বাতাসে ভাসে নানা স্বাদের মুখরোচক খাবারের মনকাড়া সুবাস। এ রকমই একটি ইফতারির পদ ‘বড় বাপের পোলায় খায়’।
জানা যায়, ঐতিহ্যবাহী এ পদটি প্রায় ১২৮ বছরের পুরোনো। তখনকার দিনে কালেম মিয়া নামের এক বাবুর্চি এ খাবার তৈরি করেন। এরপর বংশানুক্রমে তার ছেলে আলম মিয়া থেকে সালেকিন মিয়ার কাছে আসে। কালক্রমে এখন চকবাজার ইফতার মার্কেটের অনেক ব্যবসায়ীই বিক্রি করে থাকেন খাবারটি।
খাবারটি তৈরিতে ডিম, গরুর মগজ, আলু, ঘি, কাঁচা ও শুকনো মরিচ, গরুর কলিজা, মুরগির গিলা কলিজা, সুতি কাবাব, মাংসের কিমা, চিড়া, ডাবলি, বুটের ডাল, মিষ্টি কুমড়াসহ ১৫ পদ ও ১৬ ধরনের মসলা ব্যবহার করা হয়। আর এ ৩১টি খাবারের সমন্বয়ে তৈরি হয় বড় বাপের পোলায় খায়। একটি বড় পাত্রে ভালোভাবে মাখিয়ে ঠোঙায় করে বিক্রি হয়। বিক্রির কৌশলটি বেশ মজার। দোকানিরা সুরে সুরে হাঁকডাক ছেড়ে ক্রেতা আকর্ষণ করে বিক্রি করেন।
‘বড় বাপের পোলায় খায়
ঠোঙায় ভইরা লইয়া যায়
ধনী-গরিব সবাই খায়
মজা পাইয়া লইয়া যায়।’
ছড়াটি আকর্ষণ করে সবাইকে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার লোকজন কেবল এ আইটেমের জন্যই ছুটে যান চকবাজারে। এটি কিনতে ছোট-বড় সব বয়সী রোজাদারের মধ্যে রীতিমতো কাড়াকাড়ি লেগে যায়। বর্তমানে প্রতি কেজির মূল্য ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা। পুরান ঢাকার অনেক পরিবারে এটি ছাড়া ইফতার জমে না। নতুন ঢাকার বাসিন্দারাও দিন দিন এ খাবারটির প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
Add Comment