ব-দ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়ের তাগিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক: নেদারল্যান্ডসের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ প্রণয়ন করেছে ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ বা ডেল্টা প্ল্যান ২১০০। এই শতবর্ষী মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে অন্যতম চ্যালেঞ্জ হিসেবে খাত-সংশ্লিষ্টরা আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ের বিষয়টিকে চিহ্নিত করেছেন। তাই এ বিষয়ে জোর দিয়ে একাধিক সুপারিশ দিয়েছে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো। পাশাপাশি অর্থায়ন ও পরিকল্পনার সঙ্গে তরুণ জনগোষ্ঠীকে যুক্ত করার আহŸান জানিয়েছেন তারা।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ আন্তর্জাতিক সম্মেলন: সমস্যা ও বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সম্মোলনের সমাপনী অধিবেশনে এসব বিষয় তুলে ধরেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সচিব) ড. মো. কাওসার আহমেদ। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম। আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা বিভাগের সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী।

কাওসার আহমেদ বলেন, ‘দুদিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মোলনে বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ বাস্তবায়নের সমস্যা ও চ্যালেঞ্জগুলো উঠে এসেছে। পাশাপাশি উঠে এসেছে এর প্রেক্ষিতে কী করণীয় সে বিষয়। আলোচক বিশ্লেষক ও অতিথিরা সব থেকে বেশি যে বিষয়টির ওপর জোর দিয়েছেন, তা হলো অর্থায়ন ও আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়। আমরা গুরুত্বসহকারে তাদের সুপারিশগুলো গ্রহণ করেছি।’

মূলত এ সম্মেলনে বেশ কিছু সেমিনারে আয়োজন করা হয়েছিল। বিভিন্ন দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেছে। বিশেষ করে উপক‚লীয় অঞ্চলের নদী ব্যবস্থাপনা, শহুরে এলাকা এবং কৃষি রূপান্তরের বিষয়গুলোর ওপর তারা জোর দিয়েছে। আমাদের যে লক্ষ্যমাত্রা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়া এবং পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এই ডেল্টাপ্ল্যান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এর আগে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় আমরা শতবর্ষী এ পরিকল্পনা করতে পেরেছি। আশা করি আমরা তা সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে পারব আর এর সুফল পাবে আমাদের তরুণ প্রজš§। তবে আমি মনে করি, এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য বেশি প্রয়োজন আন্তঃমন্ত্রণালীয় সমন্বয়। এ সময় তিনি বাংলাদেশের পাশে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাদের থাকার আহŸান জানান।

এলজিআরডি মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ এখনও অনেক ভালো অবস্থানে আছে। শ্রীলঙ্কা বা অন্য কোনো দেশের উদাহরণ আমাদের জন্য দেয়ার দরকার নেই। পৃথিবীজুড়েই এখন কিছু সমস্যা আছে। এই সমসাময়িক সমস্যাগুলোকে পৃথিবীর অন্যান্য দেশ যেভাবে মোকাবিলা করে, আমরাও একইভাবে মোকাবিলা করব। আর সমস্যা তো থাকবেই। তবে সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের সবধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। শ্রীলঙ্কা বা অন্য দেশের উদাহরণ আমাদের জন্য দেয়ার দরকার নেই। আমাদের নিজস্ব নীতি আছে এবং পলিসি অনুযায়ী দেশ চলে। আর সেই নীতিতে যদি কোথাও ঘাটতি থাকে, তবে তা পূরণের জন্য আমরা সব-সময় প্রস্তুত রয়েছি।

তিনি আরও বলেন, এখন বাংলাদেশে সব থেকে বড় উন্নয়ন প্রয়োজন আমাদের গ্রামীণ জীবনে। আমরা শুধু কৃষির ওপর নির্ভর করব না; বরং আমাদের শিল্পপ্রতিষ্ঠানও বৃদ্ধি করতে হবে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আমাদের অর্থনীতি বিস্তৃত। কৃষি, মৎস্য, সমুদ্র, শিল্প, জনশক্তি, গার্মেন্টসসহ আরও অনেক কিছু। আইটি ক্ষেত্রেও আমরা অনেক ভালো পজিশনে আছি। আমি বিশ্বের অন্যান্য দেশকে আহŸান জানাব বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০