ব ন্য প্রা ণী: বালুশুয়োর

পৃথিবীতে নানা ধরনের কোটি কোটি প্রাণসত্তা বসবাস করে। তাদের পরিচিতির সুবিধার্থে জীববিজ্ঞানীরা প্রাণীর নানা বিষয়ের মিল-অমিলের ওপর ভিত্তি করে তাদের নামকরণ ও শ্রেণিবিন্যাস করে থাকেন। নানা প্রজাতির এসব প্রাণী পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় বাস করে, এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গমন করে। এদের সম্পর্কে ভ্রমণপিয়াসীদের বিশেষ আগ্রহ রয়েছে। তাদের সম্পর্কে জানা ও পরিচিত হওয়ার জন্য অ্যাডভেঞ্চার-প্রিয় পর্যটকরা বিভিন্ন অঞ্চল ভ্রমণ করে থাকেন। অনেক প্রাণী আছে, যেগুলো প্রায় বিলুপ্তির পথে। তাদের দেখা পাওয়া ভীষণ দুষ্কর। তবে দু-একটির দেখা পেলে ভ্রমণটা যেন সার্থক হয়ে ওঠে। এমনই একটি বন্যপ্রাণী বালুশুয়োর। এদের ঘর খুদিনি বা ঘরখোন্দকও বলা হয়। বাংলাদেশের কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার কয়েকটি স্থানে এদের বিচরণ চোখে পড়ে।

বালুশুয়োর মাস্টেলিডি গোত্রের স্তন্যপায়ী প্রাণী। এর ইংরেজি নাম ‘হগ ব্যাজার’ বা ‘হগ নোজড ব্যাজার’। বৈজ্ঞানিক নাম আর্কটোনিক্স কলারিস। টেকনাফের চিরসবুজ বনে প্রায়ই দেখা যায়। এছাড়া নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, শেরপুরসহ আরও কয়েকটি জেলায়ও দেখতে পাওয়া যায়। বনভ‚মি ধ্বংসের কারণে এদের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত করা হয়েছে।

বালুশুয়োর দৈর্ঘ্যে ৫৫ থেকে ৭০ সেন্টিমিটার। লেজ ১২ থেকে ১৬ সেন্টিমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ হয়ে থাকে। ওজন সাত থেকে ১৪ কেজি। এদের শূকরের মতো নাক রয়েছে। লোমের রঙ গাঢ় ধূসর থেকে বাদামি। মুখমণ্ডলে দুটি গাঢ় ডোরা রয়েছে। গলা, কান, লেজ সাদা ও পেট কালো। পা খাটো ও কালো। নখ লম্বা ও সাদা। এদের নিশাচর প্রাণী বলা হয়। একাকী থাকতে পছন্দ করে। খাবার খোঁজা কিংবা আবাসের জন্য প্রায়ই মাটি খোঁড়ে। এরা ছোট উদ্ভিদ থেকে শুরু করে কীটপতঙ্গ, ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী প্রভৃতি খেয়ে থাকে। সাধারণত ঘাসবন, পাহাড়, চিরসবুজ জায়গায় থাকতে পছন্দ করে।

এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর এদের প্রজননের সময়। পাঁচ থেকে ৯ মাস গর্ভধারণের পর স্ত্রী বালুশুয়োর দুই থেকে চারটি বাচ্চা প্রসব করে। স্ত্রী বাচ্চা দুই থেকে তিন মাসে ও পুরুষ বাচ্চা প্রায় এক বছরে প্রজননক্ষম হয়। এদের আয়ু প্রায় ১৪ বছর।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০