শেয়ার বিজ ডেস্ক:শীতের শুরুতেই ভয়াবহ বায়ুদূষণে বিপর্যস্ত ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি স্কুল বন্ধ ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে। বায়ুদূষণজনিত জাতিসংঘের সূচক এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) অনুযায়ী বাতাসের মান ‘খুব খারাপ’ পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ায় গতকাল শুক্রবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে দেয়া হয়েছে এই ঘোষণা। খবর: এনডিটিভি, বিবিসি।
সেইসঙ্গে স্থগিত করা হয়েছে জরুরি নয় এমন সব ভবনের নির্মাণকাজ এবং পেট্রোল ও ডিজেলচালিত যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টাও করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দপ্তরের কর্মকর্তারা।
জাতিসংঘের অন্যতম অঙ্গসংগঠন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডবিøউএইচআই) তত্ত¡াবধানে পরিচালিত একিউআই সূচক অনুযায়ী, কোনো শহরের বাতাসের গুণাগুণ যদি শূন্য থেকে ৫০ পয়েন্টের মধ্যে থাকে, তাহলে তা ‘ভালো’, ৫১ থেকে ১০০ পয়েন্টের মধ্যে থাকলে ‘সন্তোষজনক’, ১০১ থেকে ২০০ পয়েন্টের মধ্যে থাকলে ‘সহনীয়,’ ২০১ থেকে ৩০০ পয়েন্টের মধ্যে থাকলে ‘খারাপ’, ৩০১ থেকে ৪০০ পয়েন্টের মধ্যে থাকলে ‘খুব খারাপ’ এবং ৪০১ থেকে ৫০০ পয়েন্টের মধ্যে থাকলে ‘ভয়াবহ’।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন সংস্থা সেন্ট্রাল পল্যুশন কন্ট্রোল বোর্ড (সিপিসিবি) শুক্রবার এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, এদিন রাজধানী নয়াদিল্লির বাতাসের গড় মান নেমেছে ৩৪৬ পয়েন্টে, যা একিউআই সূচক অনুযায়ী ‘খুব খারাপ’ অবস্থা।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, দিল্লির লোদি রোড, জাহাঙ্গীরপুরী, আরকে পুরম এবং আইজিআই বিমানবন্দর এলাকার বায়ুদূষণ ‘ভয়াবহ’ পর্যায়ে রয়েছে। একিউআই সূচক অনুসারে এসব এলাকার বাতাসের মান যথাক্রমে ৪৩৮, ৪৯১, ৪৮৬ ও ৪৭৩।
দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশের সীমান্তবর্তী শহর নয়ডার বেশ কিছু এলাকার বাতাসও ‘ভয়াবহ’ অবস্থায় রয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে সিপিসিবি। প্রতি বছর অক্টোবরের শেষ দিক থেকে বায়ুদূষণ শুরু হয় দিল্লিতে। দিল্লির দুই সীমান্তবর্তী রাজ্য উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানার গ্রামগুলোয় বিপুল পরিমাণ খড়-বিচালি পোড়ানোই এ দূষণের প্রধান কারণ।
শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে এসব গ্রামের দরিদ্র মানুষরা খড়-বিচালি পোড়ান, কিন্তু সেই আগুনের ফলে সৃষ্ট ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বস্তুকণা বাতাসে ভেসে দিল্লির বায়ুতে মিশে যায়।
জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের মতে, জোর বাতাস থাকলে এসব উপকরণ এমনভাবে ভেসে বেড়াতে পারত না। কিন্তু অক্টোবরের শেষ থেকে দিল্লির বাতাস ভারী ও কুয়াশাচ্ছন্ন হতে থাকে। সেই ভারী কুয়াশাচ্ছন্ন বাতাসে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বস্তুকণা মিশে এক নাভিশ্বাস পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
সেই সঙ্গে দিল্লির সংলগ্ন বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে শীতকালে বিপুল পরিমাণ খড়-বিচালি পোড়ানো হয়; সেখান থেকেও অতিক্ষুদ্র বিভিন্ন বস্তুকণা ভেসে আসে দিল্লির বাতাসে।
