Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 1:59 pm

ভর্তি পরীক্ষা ও অগ্রজের দায়িত্ব

কী পড়ব? কীভাবে পড়ব? কোন কোচিংয়ে ভর্তি হবো? কোন বিষয়টা বেশি গুরুত্ব দিয়ে পড়ব? উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করার পর একজন শিক্ষার্থী এসব নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হয়। জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো পরীক্ষাগুলোর মধ্যে ভর্তি পরীক্ষা অন্যতম। এটি একজন শিক্ষার্থীর জীবনের দৃশ্যপট বদলে দিতে পারে।
এটি এমন একটা সময় যখন একটি ভুল সিদ্ধান্ত একজন শিক্ষার্থীর জীবন তছনছ করে দিতে পারে আবার একটি ভালো সিদ্ধান্ত জীবন বদলে দিতে পারে। তাই এ সময় প্রয়োজন হয় প্রেষণা ও পথনির্দেশের। আর সে পথনির্দেশক হিসেবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়–য়া অগ্রজ বড় ভাই বা বড় বোন। অতি অল্প সময়ে কীভাবে একজন শিক্ষার্থী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করবে তা একজন অগ্রজ শিক্ষার্থী নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝতে পারেন এবং সে অনুযায়ী সার্বিক পরামর্শ দিতে পারেন।
এছাড়া ভর্তি পূর্ববর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়–য়ারা নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে বিভিন্ন অবদান রাখেন। এর মধ্যে রয়েছে কিভাবে ভর্তি পরীক্ষার বিশাল সিলেবাস শেষ করবে, কীভাবে সময়ের সঠিক ব্যবহার করবে, কোন বিষয় কতটুকু পড়তে হবে তার সাজেশন্স প্রদান, শিক্ষার্থীদের প্রেষণা প্রদান, নিজের পছন্দের প্রতি গুরুত্ব দিতে শিখানো, এছাড়াও কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লে ভালো হবে একজন সিনিয়র প্রভৃতি বিষয়ে সমাধান দিতে পারেন। সুতরাং উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করার পর একজন শিক্ষার্থীর কোচিং সেন্টারগুলোর পেছনে না ঘুরে একজন সিনিয়র ভাই বা আপুর দ্বারস্থ হওয়া উচিত। তাহলে সে গুরুত্বপূর্ণ সময়টাতে সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করবে না।
ভর্তি পরীক্ষার দিনগুলোয়ও অগ্রজরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। ভর্তি পরীক্ষার সময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। দেশের প্রতিটি অঞ্চল থেকে শিক্ষার্থী আর অভিভাবকরা ভিড় জমায়। বিশেষ করে পরীক্ষার্থীরা খোঁজ নিয়ে আসে তার এলাকা বা আশপাশের পরিচিত সিনিয়র বড় ভাই বা বোন আছে কি না। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা চেষ্টা করেন ভর্তীচ্ছুদের যে কোন সমস্যা সমাধান করতে। ভর্তি পরীক্ষার সময়টাতে সিনিয়রদের দায়িত্ব অনেক বেড়ে যায়। সিনিয়র হওয়ার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী নৃ-বিজ্ঞান দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আজিজুল হককে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের সহায়তা করা খুবই আনন্দের। আমরা সাধারণত আগের দিন আসন বিন্যাস সংগ্রহ করি ও জেলাভিত্তিক ব্যানার তৈরি করে তাতে ব্যক্তিগত ফোন নম্বর দিয়ে দেই। এতে ভর্তীচ্ছুরা সহজে আমাদের থেকে অপরিচিত ক্যাম্পাস সম্পর্কে ধারণা ও আসন বিন্যাস পেয়ে যায়। এছাড়া আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফলাফল জানিয়ে দেই। এটা আমাদের দায়িত্ব বলে মনে করি।
জবির ‘গ’ ইউনিটে ফেনী থেকে পরীক্ষা দিতে আসা আদিবা সুলতানা বলেন, ‘পরীক্ষার কিছুদিন আগেই ফেসবুকে ফেনী জেলার এক সিনিয়র বড় ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয় হয়, পরীক্ষার দিন তিনি এবং ফেনী জেলার অন্য অগ্রজরা আমাকে সর্বাত্মক সহায়তা করেছেন যা আমি কখনোই ভুলব না।’

হারুনুর রশিদ, জবি