Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 11:51 pm

ভাইরাস যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক হতে পারে

শেয়ার বিজ ডেস্ক: চীনে করোনা ভাইরাস ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। তাই দেশটিতে ভ্রমণে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। নিজ দেশের নাগরিকদের চীন সফরের ওপর সর্বোচ্চ ৪ মাত্রার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এদিকে চীনে করোনা ভাইরাসের বিস্তারকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক হিসেবেই দেখছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী উইলবার রস বলেন, ‘আমার মনে হয় এতে উত্তর আমেরিকায় কর্মসংস্থান ত্বরান্বিত হবে।’ খবর: বিবিসি।

চীনের সব প্রদেশ ও বিশ্বের অন্তত ২০টি দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে ডবিøউএইচও (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা)। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে চীনে মৃতের সংখ্যা ২১৩ জনে পৌঁছেছে। আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ৬৯২ জন। 

যুক্তরাষ্ট্রের এক টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে উইলবার রস বলেন, ‘আমি আসলে দুঃখজনক এ পরিস্থিতির ওপর দাঁড়িয়ে বিজয় উল্লাস করতে চাই না। তবে এতে চীনের পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থার (সাপ্লাই চেইন) ব্যাপারে সবাই নতুন করে চিন্তা করবে। এর ফলে উত্তর আমেরিকায় চাকরির বাজার ফিরতে শুরু করবে।’

বাণিজ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের পর সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান ডন বায়ার এক টুইটে এর তীব্র সমালোচনা করেন। পরে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘আমাদের আসলে বিবেচনা করতে হবে যে, আমরা এমন কোনো দেশের সঙ্গে ব্যবসা করব কি না যারা নিজেদের জনগণের ঝুঁকিকে সারা বিশ্বের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখে।’   

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, নতুন এ করোনা ভাইরাস সার্স মহামারির চেয়েও বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলবে। ২০০২ সালে সার্স ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৭০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল এবং এর মোকাবিলায় বিশ্বে তিন হাজার কোটি ডলার ব্যয় হয়েছিল। করোনা ভাইরাসের কারণে চীনে বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, গাড়ি নির্মাতাসহ বেশ কিছু কোম্পানি তাদের ব্যবসা স্থগিত রেখেছে। এছাড়া নতুন চান্দ্রবর্ষ উদ্যাপনও বন্ধ রেখেছে বেইজিং। দেশজুড়ে জারি করা হয়েছে ভ্রমণ সতর্কতা। এ ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে প্রায় ৯০০ কোটি ডলার বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছে চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় ও ন্যাশনাল হেলথ কমিশন। 

ভাইরাস ছড়ানোর ভয়ে বিশ্বের বিভিন্ন উড়োজাহাজ পরিবহন প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে চীনের পথে ফ্লাইট কমিয়ে দিয়েছে। বড় আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোও তাদের কর্মীদের চীনে যাতায়াতের বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করেছে। ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে চীনের সঙ্গে আপাতত আকাশপথের যোগাযোগ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাজ্যের পতাকাবাহী বিমান সংস্থা ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ। পরবর্তী নির্দেশনার আগ পর্যন্ত চীন থেকে অন্য কোথাও কিংবা অন্য কোনো দেশ থেকে চীনে ওই সংস্থার কোনো বিমান চলাচল করবে না। এর আগে চীন ভ্রমণে সতর্কতাও জারি করে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর।