ভারতীয় পণ্যের পরীক্ষামূলক প্রথম চালান মোংলা বন্দরে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ট্রানজিট পণ্য পরিবহনের চুক্তির আওতায় ভারতের পণ্য নিয়ে মোংলা সমুদ্রবন্দরে এসে পৌঁছেছে একটি জাহাজ। গতকাল সোমবার সকালে এমভি রিশাদ রায়হান নামের কার্গো জাহাজটি বন্দরের ৯ নম্বর জেটিতে নোঙর করে। এটি মোংলা বন্দর ও সড়কপথ ব্যবহার করে ভারতীয় পণ্য উত্তর-পূর্ব রাজ্য আসাম ও মেঘালয়ে পরিবহনের পরীক্ষামূলক প্রথম চালান।

বাংলাদেশি এই জাহাজে পণ্যবাহী দুটি কনটেইনারের একটিতে ৭০ প্যাকেজে ১৬ দশমিক ৩৮০ টন লোহার পাইপ ও অন্যটিতে ২৪৯ প্যাকেটে ৮ দশমিক ৫ টন প্রিফোম রয়েছে।

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ট্রানজিট সুবিধা পেতে চার বছর আগে যে চুক্তি হয়েছে, তা কার্যকর করার অংশ হিসেবে ভারত এ রকম চারটি ট্রায়াল রান পরিচালনা করবে। গত ১ আগস্ট ভারতের কলকাতা বন্দরে এমভি রিশাদ রায়হান জাহাজটিতে পণ্য বোঝাই করা হয়। এরপর জাহাজটি গত রোববার মোংলা পৌঁছায়। গতকাল সকালে এটি বন্দর জেটিতে নোঙর করে।

এ সময় মোংলা বন্দর জেটি পরিদর্শন করেন ভারতের সহকারী হাইকমিশনার ইনদার জিত সাগর, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা, সদস্য (হারবার ও মেরিন) কমডোর মোহাম্মদ আবদুল ওয়াদুদ তরফদারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পরে বন্দরের সভাকক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট ও সিঅ্যান্ডএফ হিসেবে কাজ করছে জে এসি শিপিং ও সুইফট লজিস্টিক সার্ভিসেস লিমিটেড। তাদের উদ্ধৃত করে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, মোংলা-তামাবিল (সিলেট) ও মোংলা-বিবিরবাজার (কুমিল্লা) রুটে ট্রায়ালের জন্য ট্রানজিট কার্গোটি বর্তমানে মোংলা বন্দরে অবস্থান করেছে। এসিএমপি চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানির ট্রায়াল কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ২টি কনটেইনারের মধ্যে ১টি কনটেইনার তামাবিল হয়ে ইলেকট্রস্টিল কাস্টিংস লিমিটেডের ৭০ প্যাকেজে ১৬ দশমিক ৩৮০ টন লোহার পাইপ ও অন্যটি বিবিরবাজার-শ্রীমন্তপুর সীমান্ত ব্যবহার করে ২৪৯ প্যাকেজে ৮ দশমিক ৫ টন প্রিফোম আসামে নেয়া হবে।

চুক্তি অনুযায়ী এই দুই কনটেইনার ট্রানজিট পণ্য হিসেবে পরিবহন হচ্ছে। জানতে চাইলে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা বলেন, মোংলা বন্দরের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে আজ (গতকাল) একটি মাইলফলক সৃষ্টি হলো। এর ফলে বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।

নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোয় পণ্য সরবরাহ করতে দুই দেশের মধ্যে ২০১৮ সালের অক্টোবরে চুক্তি হয়েছিল। দুই দেশ বিশ্বাস করে, এ চুক্তির মাধ্যমে উভয় দেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে। দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে। কিন্তু কভিড-১৯ মহামারিসহ নানা জটিলতায় গত চার বছরে এ চুক্তির উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। এখন ভারত সরকার চাইছে, আগস্টে ট্রায়াল শেষ করতে। যদি কোনো ত্রুটি ধরা পড়ে, তা এ বছরের মধ্যে শেষ করতে হবে। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে বন্দর ব্যবহার শুরু হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০