ভারতের নতুন সরকার বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশাকে মর্যাদা দেবে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারতের নতুন সরকার বাংলাদেশের জনগণের যে প্রত্যাশা, সেই প্রত্যাশাকে মর্যাদা দেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

গতকাল সোমবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপির তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার প্রসঙ্গ তুলে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ভারতের নতুন সরকার সম্পর্কে বলার আমার একটাই কথাÑভারত আমাদের প্রতিবেশী দেশ। নিঃসন্দেহে আমাদের অনেক প্রভাবশালী প্রতিবেশী দেশ। আমরা ভারতের নতুন সরকারের কাছে একটাই আশা করব, তাদের দেশে যেভাবে জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে, এখনও তাদের নির্বাচন কমিশন যেভাবে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, তাদের বিচার বিভাগ যেভাবে কাজ করতে পারে, আমরা ১৯৭১ সালে সেই লক্ষ্য নিয়ে যুদ্ধ করেছিলাম। আমরা দেশে গণতন্ত্রকে সেভাবেই প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমাদের যেটা প্রত্যাশা, ভারতের নতুন সরকার বাংলাদেশের জনগণের যে প্রত্যাশা, সেই প্রত্যাশাকে তারা মর্যাদা দেবে এবং সেভাবেই তারা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক গড়বে।’

আওয়ামী লীগ আর আওয়ামী লীগ নেইÑএ মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গতকাল (রোববার) একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। সেখানে আমার পুরোনো এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়েছিল। নাম বললে আপনারা হয়তো অনেকেই চিনে ফেলবেন। সে এখন রাজনীতি থেকে দূরে আছে, ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন, পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগের এমপিও হয়েছেন। কিন্তু এখন প্রায় ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে রাজনীতি থেকে দূরে আছেন। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি রাজনীতি করছ না কেন? সে বলে, কোন রাজনীতি করব? বললাম, আওয়ামী লীগ করবা। সে বলল, আওয়ামী লীগ কি আর আওয়ামী লীগ আছে? এটা তো এখন আজিজ আর বেনজীরের আওয়ামী লীগ। এই যে দেখুন, একজন আওয়ামী লীগের নেতার উপলব্ধি, এটাই বাস্তবতা। আজকে আওয়ামী লীগ সেই আওয়ামী লীগ নেই।’

বাজেট প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, বাজেট নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। সম্পূর্ণ বাজেটটাই হচ্ছে তাদের লুটপাটের।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকারের ক্ষুধার শেষ নেই। সবকিছু খেয়ে ফেলছে। সরকারের লোকজন যার যা খুশি তা-ই করছে। একটা ভয়াবহ পরিস্থিতি চলছে দেশে। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ দেশের ৫৩ বছরের সব অর্জন ধ্বংস করে ফেলেছে। কোথাও কোনো বিচার নেই, ব্যবসা করতে গেলে সরকারের লোকজনকে চাঁদা দিতে হবে। এরা পরিল্পিতভাবে দেশকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। এমন উন্নয়ন করেছে সরকার, জনগণ এখন ঢাকা শহর ছেড়ে গ্রামে চলে যাচ্ছে।

সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। কারও কথা বলার স্বাধীনতা নেই। দেশে পুরোপুরিভাবে একটা ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে। এখন আমাদের একটাই লক্ষ্য, যেভাবেই হোক, এই ভয়াবহ দানব সরকারকে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা।’ তিনি বলেন, দেশ গভীর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। একদিকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক, অন্যদিকে ভৌগোলিক দিক থেকে। তিস্তার পানি নিয়ে অনেক খেলা হচ্ছে। ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থেকেও এখন পর্যন্ত তিস্তার পানি চুক্তি করতে পারেনি এই সরকার। অথচ জিয়াউর রহমান তিস্তার পানির জন্য জাতিসংঘ পর্যন্ত গিয়েছিলেন।

জিয়াউর রহমানের স্মৃতিচারণা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তিনি শুধু ক্ষণজš§া পুরুষ ছিলেন না, তিনি ছিলেন দার্শনিক। আমরা কারও সংগ্রাম কারও অবদানকে ছোট করতে চাই না। জিয়াউর রহমানকে ছোট করা মানে দেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা। আমাদের দুর্ভাগ্য, আমরা তাকে বেশি দিন ধরে রাখতে পারিনি, চক্রান্তকারীরা তাকে হত্যা করেছে।’

জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফিরের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান, কৃষক দলের যুগ্ম সম্পাদক শাহাদত হোসেন, মেহেদী হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০