শেয়ার বিজ ডেস্ক: ভারতের পুঁজিবাজার গত সপ্তাহের পতনের ধারায় চলতি সপ্তাহ শুরু করেছে। গতকাল সোমবার সকাল থেকেই মূল বেঞ্চমার্ক সেনসেক্স এবং নিফটির শেয়ারদর নিম্নমুখী দেখা গেছে। তবে কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর ঊর্ধ্বমুখী ছিল বলে ইকোনমিক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে।
গতকাল সকাল সোয়া ৯টায় বম্বে (মুম্বাই) স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক সেনসেক্স প্রায় শূন্য দশমিক ১৩ শতাংশ বা ৮২ দশমিক ৯৮ পয়েন্ট হ্রাস পায়। এতে সূচক দাঁড়ায় ৬৬ হাজার ৭৭ দশমিক ২২ পয়েন্টে।
অন্যদিকে, দেশটির ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক নিফটি ৫০ প্রায় শূন্য দশমিক ১২ শতাংশ বা ২৩ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট নি¤œমুখী হয়ে দাঁড়ায় ১৯ হাজার ৬২২ দশমিক ২০ পয়েন্টে।
তবে প্রধান সূচকগুলোয় পতন হলেও স্মলক্যাপ এবং মিডক্যাপ স্টকগুলোর সূচক ছিল ঊর্ধ্বমুখী। এদিন নিফটি স্মলক্যাপ ১০০ এবং নিফটি মিডক্যাপ ১০০-এর সূচক প্রায় শূন্য দশমিক ৩৮ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। গতকাল সকালের ট্রেডে একাধিক সূচক ছিল লাল। নিফটি ব্যাংক, নিফটি ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, নিফটি এফএমসিজি, নিফটি প্রাইভেট ব্যাংক ও নিফটি কনজাম্পশনের সূচক যথাক্রমে শূন্য দশমিক ১৩, শূন্য দশমিক ৪, শূন্য দশমিক ৪৭, শূন্য দশমিক শূন্য ৫ ও শূন্য দশমিক ৩৭ শতাংশ হ্রাস পায়।
এদিকে নিফটি পিএসইউ ব্যাংক, নিফটি মেটাল, নিফটি রিয়েলটি, নিফটি মিডিয়া, নিফটি এনার্জি, নিফটি কমোডিটিজ ও নিফটি পিএসইর সূচকে সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি লক্ষ করা গেছে। এই সূচকগুলো যথাক্রমে শূন্য দশমিক ২৭, শূন্য দশমিক ৪৪, শূন্য দশমিক শূন্য ৯, শূন্য দশমিক ৫৩, শূন্য দশমিক ৪১, শূন্য দশমিক ৩৪ ও শূন্য দশমিক ২৬ শতাংশ ঊর্ধ্বগতিতে ছিল।
ভারতের পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, গতকাল অনিশ্চয়তার কারণে সূচক কার্যত লাফিয়ে বেড়েছে। এদিন ইন্ডিয়া ভিক্স প্রায় ৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ ঊর্ধ্বমুখী ছিল।
গতকাল ভারতের পুঁজিবাজারে টপ গেইনারদের তালিকায় মেক প্রজেক্টস, বিইএমএল, ফাইভ-স্টার বিজনেস ফাইন্যান্স, উজ্জীবন স্মল ফাইন্যান্স ব্যাংক, ইন্ডিয়াবুলস হাউজিং ফাইন্যান্স, নিউজেন সফটওয়্যার টেকনোলজিস, কোলামন্দালাম ফাইন্যান্সিয়াল হোল্ডিংস ও অজন্তা ফার্মা।
এদিন সবচেয়ে ক্ষতিতে ছিল জিন্দাল স, এনএলসি ইন্ডিয়া, পিরামল এন্টারপ্রাইজেস, জুপিটার ওয়াগনস, ইন্টেলেক্ট ডিজাইন এরিনা, মাজাগন ডক শিপবিল্ডার্স, অ্যাপোলো হসপিটালস এন্টারপ্রাইজ ও ম্যাঙ্গালোর রিফাইনারি অ্যান্ড পেট্রোকেমিক্যালস।
এ বিষয়ে জিওজিত ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের চিফ ইনভেস্টমেন্ট স্ট্র্যাটেজিস্ট ভি কে বিজয়কুমার বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির অবস্থানের জন্য ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারের স্তরে ফ্ল্যাট ট্রেডিং হয়েছে। তবে ভারতের শিল্পসংস্থাগুলোর শক্তিশালী অবস্থান ও কর্মক্ষমতার কারণে বাজার এখনও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে মূল্যস্ফীতির প্রবণতা নিম্নমুখী রয়েছে। ফলে ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ এবং নাসডাক নিজেদের বৃদ্ধির হার ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। দুই সূচক যথাক্রমে তৃতীয় ও পঞ্চম সপ্তাহ ধরে বৃদ্ধির গতি অব্যাহত রেখেছে। অন্যদিকে ভারতীয় ইকুইটি মার্কেটে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ, এইচডিএফসি ব্যাংক, আইসিআইসআই ব্যাংক, এলঅ্যান্ডটি ও আইটিসি তুলনামূলক ভালো অবস্থানে রয়েছে।
গত সপ্তাহের শেষ দিন, অর্থাৎ শুক্রবার ভারতের পুঁজিবাজার পতনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। এদিন সকাল থেকেই স্টক মার্কেটের রং ছিল লাল। সপ্তাহের শেষ ট্রেডিংয়ের দিনে বাজার বন্ধের সময়ও নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত ছিল। শুক্রবার বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক সেনসেক্স প্রায় শূন্য দশমিক ১৬ শতাংশ বা ১০৬ দশমিক ৬২ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় ৬৬ হাজার ১৬০ দশমিক ২০ পয়েন্টে। ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক নিফটি ৫০ প্রায় শূন্য দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ বা ১৩ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট নিম্নমুখী হয়েছিল ১৯ হাজার ৬৪৬ দশমিক শূন্য ৫ পয়েন্টে। তবে সেদিন এশিয়ার পুঁজিবাজারের একাংশ সবুজ ছিল। ব্যাংক অব জাপান পলিসি রেট নিয়ে ইতিবাচক অবস্থানে থাকায় এই পরিস্থিতি লক্ষ করা যায়।
