ভারতের পুঁজিবাজারে পতন থামছেই না

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ভারতের পুঁজিবাজারে সূচকগুলোর গ্রাফে পতন অব্যাহত। এমন পরিস্থিতিতে দুশ্চিন্তা বেড়েছে দেশটির বিনিয়োগকারীদের। খবর: ইকোনমিক টাইমস। ভারতের পুঁজিবাজারগুলোয় পরপর তিন সেশনে পতন। স্বভাবতই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাড়ছে উদ্বেগ। গতকাল বুধবার বাজার বন্ধের সময় নিফটি প্রায় ৬৩ পয়েন্ট কমেছে। বাজারের এই বেঞ্চমার্ক সূচক গত মঙ্গলবার ২৪ হাজার পয়েন্টের নিচে চলে যায়। এদিনও সূচকটি নেগেটিভ ক্যান্ডেল তৈরি করেছিল। বর্তমানে সূচকটি ৫০ দিনের এক্সপোনেনসিয়াল মুভিং অ্যাভারেজ ২৩ হাজার ৯৬৫ পয়েন্টের সাপোর্টে রয়েছে।

এ বিষয়ে এইচডিএফসি সিকিউরিটিজের নাগরাজ শেট্টি জানান, স্বল্প মেয়াদে নিফটির প্রবণতা দুর্বল রয়েছে। সূচকটিতে যদি আরও পতন দেখা যায়, অর্থাৎ যদি এটি ২৪ হাজার থেকে ২৩ হাজার ৯০০ পয়েন্টের নিচে চলে যায়, সেক্ষেত্রে সাপোর্ট লেভেল হতে চলেছে ২৩ হাজার ৬২৫ পয়েন্ট।
ওপেন ইন্টারেস্টের তথ্য অনুসারে, কলের সাইডে সর্বোচ্চ ওআই রয়েছে ২৪ হাজার ৩০০। এর পরবর্তী সময়ে স্ট্রাইক প্রাইস ২৪ হাজার ৫০০ রয়েছে। অন্যদিকে পুটের সাইডে স্ট্রাইক প্রাইস রয়েছে ২৩ হাজার ৫০০।

এ বিষয়ে জেএম ফিনান্সিয়াল অ্যান্ড ব্লিঙ্কএক্সের টেকনিক্যাল রিসার্চ বিভাগের তেজস শাহ জানান, নিফটি বর্তমানে ২৩ হাজার ৯৭০ থেকে ২৪ হাজার পয়েন্টের (৫০ দিনের এক্সপোনেনসিয়াল মুভিং অ্যাভারেজ) সাপোর্ট জোনের কাছে ট্রেড করছে। এ অবস্থান থেকে ৩০০-৪০০ পয়েন্টের মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে। বিশেষত, নিম্নমুখী গতির সম্ভাবনা রয়েছে। ওপরের দিকে সূচকটির তাৎক্ষণিক রেজিস্ট্যান্স লেভেল রয়েছে ২৪ হাজার ১৭০ থেকে ২৪ হাজার ২০০ পয়েন্ট। এ সূচকের পরবর্তী সময়ে গুরুত্বপূর্ণ রেজিস্ট্যান্স জোন রয়েছে ২৪ হাজার ৩৮০ থেকে ২৪ হাজার ৪০০ পয়েন্ট। সামগ্রিকভাবে আগামী কয়েক দিনে ট্রেন্ড নিচের দিকে থাকতে পারে।

এলকেপি সিকিউরিটিজের রূপক দে বলেন, আধ ঘণ্টার চার্টে নিফটি একটি ইনভার্টেড হ্যামার প্যাটার্ন তৈরি করেছে। এটি সম্ভাব্য বুলিস রিভার্সালের পরামর্শ দিয়েছে। এছাড়া সূচকটি সোমবারের নিম্নের ওপরে সাপোর্ট পেয়েছে। এ মুহূর্তে দুটি অবস্থান দেখা যেতে পারে। প্রথমত, নিফটি ২৪ হাজার ৪০০ থেকে ২৪ হাজার ৪৪০ পয়েন্টের (২১ এক্সপোনেনসিয়াল মুভিং অ্যাভারেজ) মধ্যে পুনরুদ্ধার করতে পারে। এখানে বিক্রির চাপ আবারও দেখা যেতে পারে। অথবা সূচকটি ২৩ হাজার ৯৬৫ (৫০ এক্সপোনেনসিয়াল মুভিং অ্যাভারেজ) বা ২৩ হাজার ৬৭০ পয়েন্টে নেমে যেতে পারে।

এদিন শেয়ারখানের যতীন গেদিয়া বলেন, দৈনিক চার্টে আমরা দেখতে পাচ্ছি, নিফটি ২৪ হাজার ৩৮০ থেকে ২৪ হাজার ৪০০ পয়েন্টের রেজিস্ট্যান্সের সম্মুখীন হচ্ছে। গত ৫ আগস্ট তৈরি হওয়া গ্যাপ এরিয়ায় রেজিস্ট্যান্স দেখা গেছে।
ভারতে নির্বাচনের পরবর্তী সময় থেকে পুঁজিবাজারে টানা বৃদ্ধি লক্ষণীয়। আনুমানিক টানা দুই মাস অব্যাহত থেকছে বৃদ্ধির দৌড়। মাঝে বাজেটের কারণে কিছু অনিশ্চয়তা লক্ষ্যণীয় হলেও মার্কেট সেই অনিশ্চয়তার প্রভাবও কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে। তবে আগস্টের শুরুর দিক থেকে স্টক মার্কেটের গতিবিধি আবার পতনের কারণে ধাক্কা খেয়েছে। টানা তিন দিনের সেশনে পরপর ধারাবাহিকভাবে পতন দেখা গেছে। ফলে এক ধাক্কায় মোটা অঙ্কের টাকা হারিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। বর্তমানে বাজার বেশ কিছু অংশে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠার কারণে একটি বড় অংশের বিনিয়োগকারীরা তাদের ইনভেস্টমেন্ট নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছেন। এই পরিস্থিতিতে কী পদক্ষেপ নেয়া উচিত, সেই বিষয়টি নিয়েও একাধিক বিনিয়োগকারী দ্বন্দ্বে পড়ে গিয়েছেন।

সম্প্রতি ভারতের একটি সংবাদ সংস্থাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে নিজের মতামত জানিয়েছেন আইটিআই মিউচুয়াল ফান্ডের প্রদান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রাজেশ ভাটিয়া। তিনি বলেন, ভারতের পুঁজিবাজারে বর্তমানে অনিশ্চয়তার চাপ লক্ষণীয় হচ্ছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে আমরা বাজারের প্রতি একটি ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখছি। বর্তমানে ভারতের বাজারটি সারা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী বাজারগুলোর মধ্যে একটি হয়ে উঠেছে তিনি মনে করেন। তার মতে, সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে যে সংশোধনটি লক্ষ্যণীয় হচ্ছে, সেটিতে বাজারটি খুব বেশি নিম্নমুখী হয়নি। বাজার সম্ভবত এটির শীর্ষ স্থান থেকে ৩ বা ৪ শতাংশ নিম্নমুখী হয়েছে। সেই তুলনায় অন্যান্য আন্তর্জাতিক বাজারগুলো অনেক বেশি অস্থির রয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০