শেয়ার বিজ ডেস্ক: বড় পতন দেখল ভারতের পুঁজিবাজার। গতকাল সোমবার সকাল থেকেই বাজারের বেঞ্চমার্ক সূচকগুলোয় ধস নামে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সূচকগুলোয় পতনের ব্যবধান বাড়তে থাকে। ক্রমাগত উত্থানের পর সোমবার বাজার বন্ধের সময় বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের (বিএসই) সূচক সেনসেক্স প্রায় শূন্য দশমিক ৮৩ শতাংশ বা ৬১৬ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট হ্রাস পেয়ে হয় ৭৩ হাজার ৫০২ দশমিক ৬৪। ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের (এনএসই) সূচক নিফটি প্রায় শূন্য দশমিক ৭২ শতাংশ বা ১৬০ দশমিক ৯০ পয়েন্ট নিম্নগামী হয়েছিল ২২ হাজার ৩৩২ দশমিক ৬৫-এর স্তরে। খবর: দি ইকোনমিক টাইমস।
সোমবার নিফটি মিডক্যাপ ১০০ এবং নিফটি স্মলক্যাপ ১০০-এর সূচক প্রায় ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পায়। খাতগুলোর মধ্যে নিফটি ফার্মা এবং নিফটি হেলথকেয়ারের সূচক সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছিল। দুই সূচক এদিন যথাক্রমে শূন্য দশমিক ০৪ এবং শূন্য দশমিক ৪৪ শতাংশ ঊর্ধ্বগামী হয়েছিল।
এদিন নিফটি ব্যাংক, নিফটি অটো, নিফটি আইটি, নিফটি পিএসইউ ব্যাংক, নিফটি ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, নিফটি এফএমসিজি, নিফটি মেটাল, নিফটি রিয়েলটি, নিফটি মিডিয়া, নিফটি এনার্জি, নিফটি প্রাইভেট ব্যাংক, নিফটি ইনফ্রা, নিফটি কমোডিটিজ, নিফটি কনজাম্পশন, নিফটি পিএসই, নিফটি সার্ভিস সেক্টর, নিফটি কনজিউমার ডিউরেবলস ও নিফটি অয়েল অ্যান্ড গ্যাসের সূচকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। এই সূচকগুলো যথাক্রমে ১ দশমিক ০৬, শূন্য দশমিক ৫৯, শূন্য দশমিক ৩০, ১ দশমিক ৫৮, শূন্য দশমিক ৬৮, শূন্য দশমিক ৫৯, ১ দশমিক ৪৪, ১ দশমিক ০৯, ২ দশমিক ৯১, ১ দশমিক ১১, ১ দশমিক ০৬, শূন্য দশমিক ৬১, শূন্য দশমিক ৭৮, শূন্য দশমিক ৪০, শূন্য দশমিক ৮৮, শূন্য দশমিক ৬৬, শূন্য দশমিক ৭৪ এবং ১ দশমিক ০৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
গতকাল অনিশ্চয়তার সূচক ইন্ডিয়া ভিক্স প্রায় ২ দশমিক ৭৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সোমবার বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির বাজার মূলধন তিন লাখ ১৫ হাজার কোটি রুপি হ্রাস হয়ে দাঁড়ায় ৩৮৯ দশমিক ৬৬ লাখ রুপিতে। বিএসইতে তালিকাভুক্ত তিন হাজার ৩৯টি শেয়ারের দাম দাম হ্রাস পেয়েছে। অন্যদিকে ৯২৪টির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে ১১৮টি স্টকের দাম অপরিবর্তিত ছিল, অর্থাৎ কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি।
গতকাল ভারতের পুঁজিবাজারে লেনদের শীর্ষে ছিলÑগডফ্রি ফিলিপস ইন্ডিয়া, নারায়না রুদ্রলয়া, কেইসি ইন্টারন্যাশনাল, জিও ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এনএলসি ইন্ডিয়া, কিরলস্কার ব্রাদার্স, লিন্ডে ইন্ডিয়া, কল্পতরু প্রজেক্টস ইন্টারন্যাশনাল, পুনাওয়ালা ফিনকরপ ও ৩৬০ ওয়ান ওয়ামের শেয়ার।
লেনদেনে ভরাডুবি হয়েছে টাটা কেমিক্যালস, জেএম ফ্যাইন্যান্সিয়াল, নিউল্যান্ড ল্যাবরেটরিজ, গ্রিণল্যাম ইন্ডাস্ট্রিজ, ক্যাপরি গ্লোবাল ক্যাপিটাল, ইন্ডিয়াবুলস হাউজিং ফাইন্যান্স, আইআইএফএল ফাইন্যান্স, পয়সালো ডিজিটাল, এজিস লজিস্টিকস ও পিসিবিএলয়ের শেয়ার।
এদিন সকালের অধিবেশনে রাষ্ট্রায়ত্ত এনএলসি ইন্ডিয়ার শেয়ারের দাম তরতরিয়ে বৃদ্ধি পায়। শেয়ারটির দাম এনএসইতে ১২ শতাংশ বেড়ে দিনের সর্বোচ্চ ২৪৪ দশমিক ০৫ রুপি হয়। বিনিয়োগকারীদের জন্য কোম্পানিটির শেয়ারে অফার ফর সেল খোলা হয়েছে। এদিন বেলা সাড়ে ৩টায় বন্ধ হয় অফার ফর সেল।
জিওজিত ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের মুখ্য বিনিয়োগ কৌশলবিদ ভি কে বিজয়কুমার বলেন, স্বল্পমেয়াদে স্মলক্যাপ বিভাগে আন্ডারপারফরম্যান্স দেখা যেতে পারে। কিছু মিউচুয়াল ফান্ড তাদের স্মলক্যাপ স্কিমগুলোয় এককালীন বিনিয়োগ বন্ধ করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
দেশটির সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (সেবি) মিউচুয়াল ফান্ডগুলোকে মিড এবং স্মলক্যাপ স্কিমগুলোয় বিনিয়োগকারীদের মনস্তাত্ত্বিক বিনিয়োগ যাচাই করতে পদক্ষেপ নিয়েছে। বৃহত্তর বাজারে ‘বাবল’ তৈরি এবং এর জেরে বিপর্যয় আটকাতে পদক্ষেপ নিচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বর্তমানে বাজার নতুন উচ্চতায় পৌঁছে গেছে বলে মনে করেন তিনি।