শেয়ার বিজ ডেস্ক: ভারতে অন্যতম প্রধান কর্মসংস্থানের খাত বস্ত্র ও গয়না শিল্প। কিন্তু ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এ দুটি খাতেই রফতানি কমছে দেশটির। এমনিতেই দুই কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে না পেরে লোকসভা ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদি সরকারের কর্তাব্যক্তিদের চোখে ঘুম নেই। তার মধ্যে প্রধান দুই খাতে রফতানি কমায় নতুন করে চিন্তা বেড়েছে সরকারের। খবর আনন্দবাজার।
সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে (এপ্রিল-মার্চ) বস্ত্র খাতে যে চার হাজার ৫০০ কোটি ডলারের রফতানির লক্ষ্য নেওয়া হয়েছিল, তা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা কঠিন। খুব বেশি হলে চার হাজার কোটি ডলারে বস্ত্র রফতানি হতে পারে। গত বছরের এপ্রিল থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি সময়ে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ভারতের বস্ত্র রফতানি কমেছে ছয় শতাংশেরও বেশি।
গয়না শিল্পেরও একই চিত্র। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আগের বছরের তুলনায় এ খাতে রফতানি কমেছে দুই দশমিক আট শতাংশ। এছাড়া শুধু গত বছরের এপ্রিল থেকে জানুয়ারিতেই আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় রফতানি প্রায় ৯ শতাংশ কমেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত, হংকং, যুক্তরাষ্ট্রÑভারতীয় গয়নার প্রধান বাজারগুলোর প্রায় সব দেশেই রফতানি মার খেয়েছে চোখে পড়ার মতো।
পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ক্রিসিলের মুখ্য অর্থনীতিবিদ ডি কে জোশী বলেন, ‘চিন্তার কারণ হলোÑবস্ত্র, অলঙ্কারের মতো শ্রমনিবিড় খাতে রফতানি মার খাওয়া।’ তিনি বলেন, বস্ত্র রফতানিতে বাংলাদেশ, ভিয়েতনামের মতো দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে ভারত। গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স বা জিএসটি চালু হওয়ার ফলে রফতানিকারীদের নগদের জোগানে টান পড়েছে। সে সমস্যার পুরোপুরি সমাধান হয়নি। তারও ছাপ পড়েছে রফতানিতে। এছাড়া ডলারের তুলনায় রুপির মূল্য তুলনামূলক বেশি। ফলে বিশ্ববাজারে ভারতের পণ্য দামের হিসেবে পিছিয়ে পড়ছে।
ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব মতে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দেশটির বাণিজ্য ঘাটতি ৮৩ শতাংশ বেড়ে আট হাজার ৭২০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। একদিকে গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে রফতানি মার খেয়েছে। কৃষি ক্ষেত্রে ভারত আমদানির তুলনায় রফতানি বেশি করে। কিন্তু সে ব্যবধান কমেছে। আর তার সঙ্গে যোগ হয়েছে বিশ্ববাজারে অশোধিত তেলের দামের বৃদ্ধি। ফলে বাণিজ্য ঘাটতি মাথাচাড়া দিয়েছে।
বস্ত্র খাতে কর্মসংস্থান বাড়াতে বিশেষ প্যাকেজ, নির্দিষ্ট মেয়াদের চাকরির ব্যবস্থা করেছিল মোদি সরকার। কিন্তু এখন এ খাতে রফতানি কমতে থাকায় দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী চিন্তায় পড়েছেন।
ভারতের পোশাক ও গয়না রফতানি কমেছে
