শেয়ার বিজ ডেস্ক: ভারতের ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। প্রথম নারী অর্থমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো গতকাল শনিবার সংসদে ৩০ লাখ ৪২ হাজার ২৩০ কোটি রুপির বাজেট পেশ করেছেন তিনি। এবারের বাজেটে আয়করে বিশাল ছাড় দেওয়া হয়েছে। ১৫ লাখ রুপি পর্যন্ত আয়ের কর কাঠামোয় রদবদল করা হয়েছে। খবর: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও এনডিটিভি।
বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বাজেটের তিনটি মূল বিষয় হলোÑউচ্চাকাক্সক্ষী ভারত, যতœবান সমাজ ও সবার জন্য আর্থিক উন্নয়ন।’ গতকাল বাজেট বক্তৃতা শুরুর আগে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে শ্রদ্ধা জানান তিনি।
ঘোষিত বাজেটে নতুন কর ব্যবস্থায় বছরে পাঁচ লাখ রুপি পর্যন্ত আয়ের ক্ষেত্রে কোনো কর না নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া পাঁচ থেকে সাড়ে সাত লাখ রুপি পর্যন্ত আয়ের ক্ষেত্রে আয়করের হার ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। যাদের বার্ষিক আয় সাড়ে সাত থেকে ১০ লাখ, তাদের কর ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ১০ থেকে সাড়ে ১২ লাখ আয়ে করহার ৩০ থেকে কমিয়ে ২০ এবং সাড়ে ১২ লাখ থেকে ১৫ লাখের ক্ষেত্রে করহার ৩০ থেকে কমে হয়েছে ২৫ শতাংশ। তবে আয় ১৫ লাখের বেশি হলে পূর্বের মতো ৩০ শতাংশই বহাল থাকছে।
ভারতের এবারের বাজেটকে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ক্রমাগত নি¤œমুখী। বেকারত্বের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম। অর্থনীতিকে চাঙা করতে করপোরেট করে ছাড় দিয়েও তেমন সুফল মেলেনি। এ পরিস্থিতিতে বাজেট পেশ করছেন নির্মলা।
২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতার উল্লেখযোগ্য অংশের মধ্যে রয়েছে কৃষি ও এর সঙ্গে সম্পৃক্ত খাতে দুই হাজার ৮৩০ কোটি রুপি বরাদ্দ। কেন্দ্রীয় একটি পানি প্রকল্পের জন্য তিন হাজার ৬০০ কোটি রুপি। এছাড়া এ অর্থবছরে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে ৯৯ হাজার ৩০০ কোটি রুপি। ২৮ হাজার ৬০০ কোটি রুপি বরাদ্দ রাখা হয়েছে নারীদের জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্পে। সাধারণ মানুষকে সঞ্চয়ী ব্যাংক হিসেবে আমানতকারীদের বিমা এক লাখ রুপি থেকে বাড়িয়ে পাঁচ লাখ রুপি করা হবে। স্বাস্থ্য খাতে ৬৯ হাজার কোটি রুপি বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ১০ লাখের বেশি মানুষের বসবাসকারী শহরগুলোতে পরিচ্ছন্ন বাতাসের জন্য চার হাজার ৪০০ কোটি রুপি বরাদ্দ রাখ হয়েছে। ১১ হাজার কিলোমিটার রেলপথে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য ১১ হাজার কোটি রুপি খরচের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সরকার। দুই হাজার কিলোমিটার জাতীয় সড়ক তৈরির ঘোষণা করা হয়েছে। ১০০টি অতিরিক্ত বিমানবন্দরের উন্নয়ন ও ছয় হাজার কিলোমিটার জাতীয় সড়কে ২০২৪-এর মধ্যে ১২ ধাপে কাজে লাগানোর ঘোষণা করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী জানান, অর্থনীতির ভিত শক্ত অবস্থানে রয়েছে। তাই বৃহত্তর অর্থনৈতিক স্থিতাবস্থা রয়েছে এবং মূল্যস্ফীতি ধরে রাখা গেছে। ২০১৪-এর মার্চে কেন্দ্রের ঋণ ছিল জিডিপির ৫২ দশমিক দুই শতাংশ, তা কমে হয়েছে ৪৮ দশমিক সাত শতাংশ। চলতি অর্থবছরে রাজস্ব ঘাটতি জিডিপির তিন দশমিক আট শতাংশ এবং ২০২১ অর্থবছরের মধ্যে এর পরিমাণ কমিয়ে তিন দশমিক পাঁচ শতাংশ করাই সরকারের লক্ষ্য।