শেয়ার বিজ ডেস্ক: ভারতে চা বাগানের শ্রমিকের মজুরি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে সরকার। এ নিয়ে রাজ্যগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসবে কেন্দ্রীয় সরকার। খবর দ্য হিন্দু।
চা বাগানের শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি কমা-বাড়ার ওপর কেন্দ্রীয় সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ না থাকলেও এ ব্যাপারে রাজ্যগুলোর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চাপ দেবে সরকার।
উল্লেখ্য, নরেন্দ্র মোদি সরকারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের ফলে চা শ্রমিকেদেরই সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে বারবার অভিযোগ করছে পশ্চিমবঙ্গসহ দেশটির চা উৎপাদনকারী রাজ্যগুলো। সেই সমস্যার সমাধান পুরোপুরি না হলেও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরিতে সরকার কিছুটা পরিবর্তন আনার কথা বলে রাজ্যগুলোতে নোট বাতিল নিয়ে তৈরি হওয়া ক্ষোভ কিছুটা সামাল দিতে চাইছে।
ভারতে চা উৎপাদনকারী রাজ্যগুলোতে শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরির পরিমাণ ভিন্ন ভিন্ন। সরকারি সূত্রে জানা যায়, এক্ষেত্রে চা উৎপাদনকারী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, তামিলনাড়ু ও কেরালার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার চা শ্রমিকদেরও।
বর্তমানে দৈনিক মজুরির ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছেন ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার চা শ্রমিকরা। এ মুহূর্তে তারা দৈনিক ৩০৭ রুপি করে মজুরি পান। তার পরেই কেরালা। এ রাজ্যের চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ২৪০ রুপি। তামিলনাড়ুতে তা ১৩২ রুপি। আর পশ্চিমবঙ্গে ১২৬ রুপি। দৈনিক মজুরির পরিমাণের দিক থেকে একেবারে শেষে আসাম। সেখানে দৈনিক মজুরি মাত্র ১০৫ রুপি।
সরকারি সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন রাজ্যের আলাদা আলাদা এ মজুরির পরিমাণেই একটি সমতা আনতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার।
এ লক্ষ্যে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী নির্মলা সিতারাম্যানের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি চা শ্রমিকদের মজুরি পুনর্নির্ধারণ করে সব রাজ্যের জন্য ২৫০ রুপি করার প্রস্তাব করবে। অধিকাংশ শ্রমিক সরকারের এ প্রস্তাব গ্রহণ করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, কোন রাজ্যে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরির পরিমাণ কত হবে, তা সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার সেখানকার পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন বিষয় দেখে স্থির করে এবং রাজ্যভেদে সেটি ভিন্ন হয়। তাই মজুরির ক্ষেত্রে সরকার ও রাজ্যগুলো সমঝোতায় আসতে পারা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলের।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, সব রাজ্যে সমান হারে মজুরি দিতে হবে, সেই আবেদন রাজ্যগুলোর কাছে করা সম্ভব নয় ঠিকই, কিন্তু সব ক্ষেত্রেই মজুরির পরিমাণ কিছুটা বৃদ্ধি করে একটি ভারসাম্য তো বজায় রাখাই যায়। রাজ্যগুলোর সঙ্গে বৈঠকে আমরা এ প্রস্তাবই দেব।
সরকারি সূত্রে জানা যায়, শুধু মজুরিবৃদ্ধির প্রস্তাবই নয়, রাজ্যের চা শ্রমিকদের প্রত্যেকে নিয়মমতো থাকার জায়গা পাচ্ছেন কি না, তাও খতিয়ে দেখবে কেন্দ্রীয় সরকার এ ব্যাপারে চা উৎপাদনকারী রাজ্যগুলোর কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্যও চেয়ে পাঠানো হবে।
চা-শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ২৪টি শ্রমিক সংগঠনের আহ্বায়ক জিয়া-উল-আলম বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে অবহেলিত চা শ্রমিকদের মজুরিতে সমতা আনা দরকার। সরকারের এ ধরনের পদক্ষেপ রাজ্য সরকারগুলোর সমর্থন জানানো উচিত।
ভারতে চা শ্রমিকদের মজুরি বাড়ছে

Add Comment