Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 1:37 am

ভারতে বৈদেশিক রিজার্ভ কমে ৫৯৩.৭৫ বিলিয়ন ডলার

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কমেছে। রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) পক্ষ থেকে সম্প্র্রতি ৯ জুন শেষ হওয়া সপ্তাহে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, আলোচ্য সপ্তাহে ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার মোট সম্পদের পরিমাণ ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন বা ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার হ্রাস পেয়েছে। ফলে এক ধাক্কায় মজুত থাকা মোট সম্পদের পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৫৯৩ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন বা ডলারে। খবর: ইকোনমিক টাইমস ও লাইভ মিন্ট।

গত শুক্রবার রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ফরেক্স রিজার্ভ সম্পর্কে এই তথ্য জানিয়েছে।

প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বৈদেশিক মুদ্রায় রক্ষিত সম্পদের মোট ১ দশমিক ১২৮ বিলিয়ন কমে ৫২৫ দশমিক ০৭৩ বিলিয়ন হয়েছে। প্রসঙ্গত, ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে কারেন্সি ছাড়াও বন্ড, সোনা, স্পেশাল ড্রইং রাইটস রয়েছে। যার মধ্যে বেশি রয়েছে বৈদেশিক মুদ্রা।

আরবিআইয়ের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, একই সপ্তাহে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে সোনার পরিমাণ ১৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার কমেছে। ফলে বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডারে মজুত থাকা সোনার মোট পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৫ দশমিক ৩৭৪ বিলিয়ন ডলারে। ৯ জুন শেষ হওয়া সপ্তাহের আগের সপ্তাহে ভারতের ফরেক্স রিজার্ভে মোট সম্পদের পরিমাণ ৫ দশমিক ৯২৯ বিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পেয়ে ৫৯৫ দশমিক ০৬৭ বিলিয়ন ডলার হয়েছিল। তার আগে পরপর দুই সপ্তাহ হ্রাস পাওয়ার ফলে ২৬ মে শেষ হওয়া সপ্তাহে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ৫৮৯ দশমিক ১৩৮ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যায়।

২০২১ সালের অক্টোবরে ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে থাকা সম্পদের পরিমাণ সর্বোচ্চ ৬৪৫ বিলিয়ন ডলার হয়েছিল। তারপর থেকেই অধিকাংশ পরিসংখ্যানে পতন লক্ষ্য করা গেছে। এই পতনের কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞদের একাংশ ২০২২ সালে আমদানি করা পণ্যের ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়টিকে দায়ী করে থাকেন। এছাড়া ক্রমাগত বাড়তে থাকা মার্কিন ডলারের বিপরীতে রুপির অবমূল্যায়নকে দায়ী করা হয়। রুপির পতন কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক হস্তক্ষেপ করে অর্থাৎ রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে রুপির দরপতন ঠেকানোর চেষ্টা করে। এ কারণেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অনেকাংশে কমে গিয়েছিল। সাধারণত আরবিআই বিভিন্ন সময়ে রুপির তীব্র অবমূল্যায়ন রোধ করতে ডলার বিক্রিসহ লিকুইডিটি ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে বাজারে হস্তক্ষেপ করে।

তবু রিজার্ভ কমতে থাকে। ২০২২ সালের জুলাইয়ে ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার কমে ৫৭২ বিলিয়ন ডলার হয়, যা এর আগের ২০ মাসের মধ্যে ভারতের সর্বনি¤œ রিজার্ভ ছিল।

তবে গত ১২ মে শেষ হওয়া সপ্তাহে ভারতের রিজার্ভ ৩ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন বা ৩৫৫ কোটি ডলার বাড়ে। সব মিলিয়ে দেশটির রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫৯৯ দশমিক ৫২ বিলিয়ন বা ৫৯ হাজার ৯৫২ কোটি ডলার। এর আগের সপ্তাহে অর্থাৎ ৫ মে শেষ হওয়া সপ্তাহে রিজার্ভ বাড়ে ৭ দশমিক ১৯৬ বিলিয়ন বা ৭১৯ কোটি ডলার, তখন রিজার্ভ ছিল ৫৯৫ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন বা ৫৯ হাজার ৫৯৭ কোটি ডলার। আরবিআই তখন জানায়, রিজার্ভের মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রায় রক্ষিত সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ৩৫০ কোটি ডলার। সেই সঙ্গে দেশটির রিজার্ভে সোনা মজুতের পরিমাণও বেড়েছে; অর্থমূল্যের দিক থেকে যা বেড়েছিল ৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার, সব মিলিয়ে রিজার্ভে রক্ষিত সোনার মূল্য দাঁড়িয়েছিল ৪৬ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৬৩৫ কোটি ডলারে।

২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলে ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। এতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর আমদানি ব্যয় অনেকটা বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে সংকটের মধ্যে ডলারের বিনিময় মূল্য বৃদ্ধির কারণে আমদানি ব্যয় আরও একদফা বৃদ্ধি পায়। এতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো সংকটে পড়ে। তবে ভারতের রিজার্ভ প্রতি মাসে কমবেশি বাড়ছে।