ভারত নয়, চীনের পক্ষেই ডিএসইর পর্ষদ

নিজস্ব প্রতিবেদক : কৌশলগত অংশীদার হওয়ার জন্য দুই দেশের দুটি কনসোর্টিয়ামের কাছ থেকে চূড়ান্ত দর প্রস্তাব পেয়েছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। এই কনসোর্টিয়াম দুটি হচ্ছে চীনের সাংহাই ও শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জের সমন্বয়ে গঠিত কনসোর্টিয়াম এবং ভারতীয় ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ (এনএসই) নেতৃত্বাধীন আরেকটি কনসোর্টিয়াম রয়েছে। এর মধ্যে চীনের সাংহাই ও শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জের সমন্বয়ে গঠিত কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত অংশীদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ।

গতকাল শনিবার ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের সভায় সাংহাই ও শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জকে কৌশলগত অংশীদার করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা খুব শিগগিরই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে বলে ডিএসই সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ ও সেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জকে নিয়ে গঠিত কনসোর্টিয়াম ডিএসইর পার্টনার হতে ২২ টাকা দরে ২৫ শতাংশ শেয়ার নিতে আবেদন করে। পাশাপাশি জোটটি ৩৭ মিলিয়ন ডলারের প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দেওয়ার প্রস্তাবও দেয় ডিএসইকে। অন্যদিকে ভারতের ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ নেতৃত্বাধীন নাসডাক ও ফ্রন্টিয়ার মিলে গঠিত কনসোর্টিয়াম ১৫ টাকা দরে ২৫ দশমিক শূন্য এক শতাংশ শেয়ার নেওয়ার প্রস্তাব করেছে। পাশাপাশি তারাও ডিএসইতে প্রযুক্তিগত সহযোগিতাও দিতে চায়।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে যে, ভারতীয় স্টক এক্সচেঞ্জকে কৌশলগত অংশীদার করতে চায় বিএসইসি। সংস্থাটি এ বিষয়ে লিখিত কোনো নির্দেশ না দিলেও এনএসইকে নির্বাচন করতে ডিএসইর পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার বলেছে। তবে দর প্রস্তাব ও যোগ্যতার বিবেচনায় চীনের সাংহাই ও শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জকেই বেশি যোগ্য মনে করে চূড়ান্ত করেছে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ।

এর আগে ২০১৩ সালের স্টক এক্সচেঞ্জ ডিমিউচুয়ালাইজেশন (মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা পৃথিক্করণ) আইনে ২০১৬ সালের মধ্যে কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের কাছে স্টক এক্সচেঞ্জের সংরক্ষিত ২৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সইয়ের বাধ্যবাধকতা ছিল। এ সময়ের মধ্যে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে চুক্তি করতে ব্যর্থ হয়। এরপরে এ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ছয় মাস সময় বাড়িয়ে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয় বিএসইসি। এ সময়ের মধ্যেও কার্যাদি সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয়ে আরও সময় বাড়ানোর জন্য ডিএসই ও সিএসই কমিশনে আবেদন করে।

এরপর পঁাঁচ মাস আট দিন বাড়িয়ে ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে কৌশলগত বিনিয়োগকারীর সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করে এ-সংক্রান্ত সব কার্যাদি সম্পন্ন করতে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জকে নির্দেশ দেয় বিএসইসি। সর্বশেষ আগামী ৮ মার্চ পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে কমিশন। এ সময়ের মধ্যে কৌশলগত বিনিয়োগকারী-সংক্রান্ত সব কার্যাদি সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হলে কমিশন কঠোর অবস্থানে যাবে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।

ডি-মিউচুয়ালাইজেশন স্কিমের শর্ত অনুযায়ী, ব্লকড হিসেবে থাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ৬০ শতাংশ শেয়ার কৌশলগত, প্রাতিষ্ঠানিক ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রির বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এর মধ্যে স্টক এক্সচেঞ্জের মোট শেয়ারের ২৫ শতাংশ (সংরক্ষিত শেয়ার থেকে) কৌশলগত বিনিয়োগকারীর কাছে এবং বাকি ৩৫ শতাংশ শেয়ার আইপিও প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছে বিক্রি করতে হবে। অন্যদিকে ৪০ শতাংশ শেয়ারের মালিক স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য বা ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠান।

কৌশলগত বিনিয়োগকারী হবে বিএসইসি অনুমোদিত দেশি বা বিদেশি কোনো স্টক এক্সচেঞ্জ, কোনো বিনিয়োগ ব্যবস্থাপক কোম্পানি, বিনিয়োগ ব্যাংক বা কোনো স্বনামধন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০