ভারত ‘পরীক্ষিত বন্ধু’: প্রধানমন্ত্রী

শেয়ার বিজ ডেস্ক: হাসিনা রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত শুরুর পর পূর্ব ইউরোপে আটকে পড়া তার দেশের শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় মাল্টিমিডিয়া নিউজ এজেন্সি এএনআইয়ের সঙ্গে একটি ফ্রি-হুইলিং টেলিভিশন কথোপকথনে গতকাল রোববার শেখ হাসিনা বলেন, মহামারি যখন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছিল, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ভ্যাকসিন মৈত্রী প্রোগ্রামের অধীনে প্রতিবেশী দেশগুলোতে তখন কভিড-১৯ টিকা প্রদান করা হয়। এ প্রসঙ্গে তিনি মোদি সরকারের মনোভাবের প্রশংসা করেন। তিনি দুই পাশের প্রতিবেশীর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার ওপর জোর দেন। খবর: বাসস।

মতপার্থক্য থাকতে পারে, তবে আলোচনার মাধ্যমে এগুলো সমাধান করা উচিত। তিনি বলেন, বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে ভারত এবং বাংলাদেশ তা করেছে। তিনি অবশ্য বিশেষ প্রশংসার জন্য দুটি ক্ষেত্র চিহ্নিত করেছেন, যেখানে ভারত সরকারের সহায়তা বাংলাদেশি নাগরিকদের সাহায্য করেছে। এর মধ্যে একটি ছিলÑবাংলাদেশি ছাত্রদের সরিয়ে নেয়া, যারা অনেক ভারতীয়র মতোই, সংঘাত শুরু হওয়ার পরে ইউক্রেন এবং এর প্রতিবেশী দেশগুলোয় আটকে পড়েছিল। ‘আমি সত্যিই প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই যে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে এই যুদ্ধের সময়, আমাদের অনেক ছাত্র সেখানে আটকে গিয়েছিল এবং তারা আশ্রয় নিতে পোল্যান্ডে এসেছিল। কিন্তু আপনি যখন আপনার ছাত্রদের, ভারতীয় ছাত্রদের সরিয়ে নেন, তখন তাদেরও নিয়ে আসেন। আমাদের ছাত্ররা বাড়ি ফিরেছে। তাই এটা করে সত্যিই আপনি স্পষ্টভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব দেখিয়েছেন। আমি এই উদ্যোগের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই’Ñশেখ হাসিনা বলেন। সার্ক দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতার অভাব রয়েছেÑপ্রায়ই পশ্চিমা পর্যবেক্ষকদের দ্বারা করা এমন মন্তব্য সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে শেখ হাসিনা মোদির প্রশংসার প্রসঙ্গটি টানেন। ভারত সরকারের ভ্যাকসিন মৈত্রী কর্মসূচি সম্পর্কে অন্য একটি প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, এটি প্রধানমন্ত্রী মোদির নেয়া একটি অত্যন্ত ‘বিচক্ষণ’ উদ্যোগ। তিনি বলেন, ‘আমি সত্যিই এই উদ্যোগের জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ধন্যবাদ জানাই এবং এভাবে তিনি শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ার কিছু দেশেও ভ্যাকসিনের অবদান রেখেছেন এবং এটি সত্যিই খুব সহায়ক। এর পাশাপাশি আমরাও নিজেদের টাকায় ভ্যাকসিন কিনেছি এবং আরও অনেক দেশও অবদান রেখেছে।’

শেখ হাসিনা দেশের টিকাদান কর্মসূচি সম্পর্কেও বিস্তারিত জানান। বাংলাদেশ তার জনসংখ্যার ৯০ শতাংশকে কভিড-১৯ ভ্যাকসিন দিয়েছে। সরকারপ্রধান বলেন, ‘সাধারণত আপনি জানেন, আমাদের দেশের লোকেরা, বিশেষ করে গ্রাম পর্যায়ে, এমনকি কিছু শহরেও, আমি অনেক লোককে ভ্যাকসিন নিতে খুব অনিচ্ছুক দেখেছি। তারা সূঁচ নিতে চায় না। আমরা তাদের বলেছিলাম যে, এটি কিছুই নয়; তবে এটি আপনার জীবন বাঁচাবে। তাই আমরা সবাইকে জড়িত করেছি।’

শেখ হাসিনা ভারতকে ‘পরীক্ষিত’ বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, দেশটি প্রয়োজনের সময়ে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে, প্রথমে ১৯৭১ সালে এবং পরবর্তী সময়েও। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় তাদের অবদান সবসময় মনে রাখি এবং এর পাশাপাশি ১৯৭৫ সালে, যখন আমি আমার পরিবারের সব সদস্যকে হারিয়েছিলাম। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী, তিনি আমাদের ভারতে আশ্রয় দিয়েছিলেন। তাছাড়া আপনি দেখুন, এই দুটি দেশ, আমরা নিকট প্রতিবেশী, ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী এবং আমি সবসময় আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্বকে গুরুত্ব ও অগ্রাধিকার দিই।’ তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক তাদের নাগরিকদের উন্নতির জন্য হওয়া উচিত। শেখ হাসিনা বলেন, কভিড-১৯-এর সময়কালেও ভারতীয় নেতৃত্ব তাদের ইতিবাচক অভিপ্রায় দেখিয়েছিল, তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সময় বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি সত্যিই প্রধানমন্ত্রী মোদিকে এবং আপনার মাননীয় রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানাই। তারা দুজনেই বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন, যখন আমরা আমাদের জাতির পিতার জš§শতবার্ষিকী এবং আমাদের স্বাধীনতা ও ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বের ৫০ বছর উদযাপন করছিলাম। ভারত বাংলাদেশকে প্রথম দিকে স্বীকৃতি দিয়েছে। সেই বন্ধন, আমি মনে করি এটিই আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার। এমন একটি সময়ে তাদের সফর, এমনকি সেই সময়ে একটি কভিড-১৯ মহামারি ছিল কিন্তু এর পাশাপাশি তারা উভয়ই আমাদের সম্মান করেছিলেন, আমাদের লোকদের সম্মান করেছিলেন।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০