ভারত-রাশিয়ার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বেড়েছে

শেয়ার বিজ ডেস্ক: এক বছরের মধ্যে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যকার বাণিজ্য বেড়েছে ১২০ শতাংশ। এ হার গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। খবর: আরটি।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সহকারী ইউরি উশাকভের বরাত দিয়ে দেশটির গণমাধ্যম আরটি জানায়, রাশিয়া ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ক দিন দিন সক্রিয়ভাবে সমৃদ্ধ হচ্ছে। রাশিয়ার তেল, কয়লা ও সারের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে ভারতে। এজন্য এ তিন পণ্যের আমদানিও বাড়িয়েছে ভারত। চলতি বছর এ আমদানি ১২০ শতাংশ বেড়েছে, এ হার গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি।

পণ্য আমদানি-রপ্তানির পাশাপাশি দুই দেশের মুদ্রা রুপি ও রুবলের বিনিময় হার কীভাবে বাড়ানো যায় তা নিয়ে বর্তমানে দুই দেশের সরকারি কর্মকর্তারা কাজ করছেন। এ বিষয়ে উশাকভ বলেন, বাণিজ্যিক সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী করতে জাতীয় মুদ্রার বিনিময় হার বাড়ানো প্রয়োজন। গত মাসে রাশিয়ায় নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত পবন কাপুরও ভারত ও রাশিয়ার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের সম্প্রসারণের ব্যাপারটি উল্লেখ করেন। গতানুগতিক আমদানি-রপ্তানির বাইরে দুই দেশের বাণিজ্যে আরও বাড়াতে নতুন নানা ক্ষেত্র অনুসন্ধান করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

এছাড়া দুই দেশের আন্তঃব্যাংক অর্থ লেনদেনের জন্য রুশ পেমেন্ট সিস্টেম মির ও ভারতীয় পেমেন্ট সিস্টেম রুপেয়র পারস্পরিক গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে আলোচনা চলছে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযানের পর হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও তার কয়েকটি মিত্র দেশ রাশিয়ার ওপর একরাশ নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এ নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রয়েছে রাশিয়ার জ্বালানি তেল ও কয়লা। নিষেধাজ্ঞা জারির পর রাশিয়া বন্ধুপ্রতিম বিভিন্ন দেশকে হ্রাসকৃত মূল্যে জ্বালানি তেল কেনার প্রস্তাব দেয়। এ তালিকায় রয়েছে চীন ও ভারত। যুদ্ধ শুরুর পর গত ছয় মাসে রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল কিনেছে এ দুই দেশ, যা অব্যাহত রয়েছে। চীন গত ছয় মাসে রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত জ্বালানি তেল ও কয়লা কিনেছে।

দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র ভারতের এ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে অসন্তুষ্ট পশ্চিমা দেশগুলো। রাশিয়া থেকে তেল কেনা বিরত রাখতে ভারতকে দীর্ঘদিন ধরে চাপ দিচ্ছেন পশ্চিমা নেতারা। রাশিয়ার তেলের দাম নির্ধারণ করে দেয়ারও আহ্বান জানান তারা। তবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের জ্বালানি তেল বিষয়ক মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি সম্প্রতি জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপেীয় মিত্রদের চাপের কারণে রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করার কোনো পরিকল্পনা ভারতের নেই।

তিনি বলেন, আমাদের হিসাব স্পষ্ট; ভারতের জনগণ, যারা ভোট দিয়ে গণতান্ত্রিকভাবে আমাদের নির্বাচন করেছেন- জ্বালানির সরবরাহে বিঘ্ন ঘটলে তারা ভোগান্তিতে পড়বেন। সেই ভোগান্তি কত ভয়াবহ হতে পারে, আমাদের প্রতিবেশী কয়েকটি দেশের দিকে লক্ষ্য করলেই বোঝা যায়। জনগণের স্বার্থকে আমরা সবার আগে বিবেচনা করব। এ কারণে রাশিয়া থেকে তেল কেনা আমরা বন্ধ করছি না। যদি অন্য কোনো দেশ রাশিয়ার থেকেও কম দামে তেল বিক্রি করেতে চায়, সেক্ষেত্রে আমরা ব্যাপারটি ভেবে দেখতে পারি।

চলতি বছরের শুরু থেকে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে তেলের চাহিদা, সেই সঙ্গে দামও। ইউক্রেন যুদ্ধের কাণে রাশিয়ার জ্বালানি তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়তে থাকে আরও দ্রুতগতিতে।

এদিকে চলতি সপ্তাহে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনায় বসছেন চীনে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও সামরিক চাপের মুখে রয়েছে চীনও। তাই দুই নেতার এ বৈঠক দুই দেশের স্বার্থ প্রসারিত করবে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের। গবেষণা সংস্থা ট্রিভিয়াম চায়নার সহ-প্রতিষ্ঠাতা ট্রে ম্যাকআর্ভার বলেন, শি জিনপিং এমন একটি দিক দিয়ে বৈশ্বিক বিষয়গুলোকে পুনর্নির্মাণ করার চেষ্টা করছেন, যা পশ্চিমা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিকেন্দ্রীকরণ করবে। এছাড়া জিনপিংয়ের এই কৌশল গ্রুপিং এবং এমন প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রচার করে যা চীনের স্বার্থ ও বিশ্বদর্শনের পক্ষে বেশি অনুকূল। আসন্ন বৈঠকি পশ্চিমাদের খুব স্পষ্টভাবে এই সংকেত দিচ্ছে যে, চলমান বৈশ্বিক সংঘাতে রাশিয়ার দিকে ঝুঁকছে চীন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০